অর্থশাস্ত্রে রাজার গুণাবলি সম্পর্কে কী বলা হয়েছে

ভূমিকা
প্রাচীন ভারতের রাজতন্ত্র ও রাষ্ট্রনীতি বিষয়ক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও বিখ্যাত গ্রন্থ হল কৌটিল্যের ‘অর্থশাস্ত্র’। অর্থশাস্ত্রে রাজার গুণাবলি সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করা হয়েছে। এই গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্র পরিচালনা এবং ব্যক্তিগত ক্ষমতা ও পদমর্যাদা বৃদ্ধির জন্য রাজার চারটি বিশেষ গুণ থাকা দরকার। এগুলি হল-
(1) উত্থান গুণ: কৌটিল্য বলেছেন যে, রাজার মধ্যে থাকতে হবে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও কর্মপ্রেরণা। এই উৎসাহ ও উদ্দীপনা সহকারে রাজার সকল কাজে নিযুক্ত থাকার গুণই হল উত্থান গুণ। রাজার এই উত্থান গুণ কর্মচারীদের মধ্যেও সঞ্চারিত হলে প্রশাসন হয়ে উঠবে গতিশীল।
(2) অভিগামিক গুণ: ন্যায়পরায়ণতা, ধর্মপরায়ণতা, বিনয়, শত্রু দমনে দক্ষতা ইত্যাদি গুণগুলিকে অর্থশাস্ত্রে বলা হয়েছে রাজার অভিগামিক গুণ। এই মহৎ গুণগুলি প্রজাসাধারণকে রাজার প্রতি আকৃষ্ট ও অনুগত হতে সাহায্য করে।
(3) ব্যক্তিগত গুণ: অর্থশাস্ত্র মতে, একজন রাজাকে হতে হবে দৃঢ়চেতা, ধীরস্থির, সংযমী, বাক্সটু এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী। এগুলি হল রাজার ব্যক্তিগত গুণ।
(4) প্রজ্ঞাগুণ : ‘অর্থশাস্ত্র’-এ বলা হয়েছে যে, রাজার ‘প্রজ্ঞাগুণ’ থাকা জরুরি। বিচক্ষণতা, তীক্ষ্ণ মেধা, প্রখর স্মৃতিশক্তি, দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ইত্যাদি গুণগুলি হল রাজার প্রজ্ঞাগুণ।
মূল্যায়ন
‘অর্থশাস্ত্রে’ উল্লিখিত রাজার উক্ত গুণাবলি যেমন তাঁর মর্যাদা ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করবে, তেমনি রাজতন্ত্রও হবে শক্তিশালী।
আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর