আধুনিক রসায়নের অংশ হিসেবে বায়ু সম্পর্কিত রসায়ন চর্চার ধারণা দাও

আধুনিক রসায়নের অংশ হিসেবে বায়ু সম্পর্কিত রসায়ন চর্চার ধারণা দাও

আধুনিক রসায়নের অংশ হিসেবে বায়ু সম্পর্কিত রসায়ন চর্চার ধারণা দাও
আধুনিক রসায়নের অংশ হিসেবে বায়ু সম্পর্কিত রসায়ন চর্চার ধারণা দাও

ভূমিকা

পঞ্চদশ-ষোড়শ শতক থেকেই ইউরোপে আধুনিক বিজ্ঞানচর্চার সূত্রপাত ঘটে। সপ্তদশ শতক নাগাদ অপরসায়ন চর্চার অবসানের পর আধুনিক রসায়নের বিভিন্ন শাখার বিকাশ শুরু হয়। এই সময়ে বায়ুর উপাদান ও গঠন সম্পর্কে অভিনব চর্চা শুরু হয়।

(1) অক্সিজেন আবিষ্কার: বিজ্ঞানী মেয়ো ১৬৭৪ খ্রিস্টাব্দে প্রমাণ করেন যে, ধাতুকে উত্তপ্ত করলে ধাতুর ওজন বাড়ে। পরবর্তীতে বিজ্ঞানী বয়েল ও হুক অনুধাবন করেন যে, বায়ুর মধ্যে এমন কোনো উপাদান আছে যা দহন ও শ্বসনের জন্য অপরিহার্য। মেয়ো এই উপাদানের নামকরণ করেন-‘নাইট্রো এরিয়াল স্পিরিট’। আরও পরে বিজ্ঞানী প্রিস্টলি অক্সিজেন গ্যাস আবিষ্কার করেন (১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দ)।

(2) জলের রাসায়নিক সূত্র আবিষ্কার: ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ল্যাভয়সিঁয়ে প্রমাণ করে দেখান যে, অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন যুক্ত হয়ে জল উৎপন্ন হয়। গে লুসাক ও হামবোল্ট দেখান যে, দুইভাগ হাইড্রোজেন ও একভাগ অক্সিজেন যুক্ত হয়ে জল উৎপন্ন হয়।

(3) ক্লোরিন আবিষ্কার: ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী শেইল ক্লোরিন আবিষ্কার করেন। ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী বের্তোলে প্রমাণ করেন যে ক্লোরিনের বিরঞ্জন ক্ষমতা আছে।

(4) গ্যাসের অণুর ধারণা: জন ডালটন, বার্জেলিয়াস প্রমুখ গ্যাসের গঠন সম্পর্কে গবেষণা করেন ও গ্যাসের অণুর প্রাথমিক ধারণা দেন। সেই পথে আরও অগ্রসর হয়ে বিজ্ঞানী অ্যাভোগাড্রো গ্যাসীয় পদার্থের অণুর গঠন ও বিন্যাস নিয়ে সঠিক ধারণা দেন। এ ছাড়াও তিনি প্রমাণ করেন দেখান যে, একই চাপে ও সমতাপমাত্রায় সমআয়তনের সব গ্যাসেই সমান সংখ্যক অণু থাকে।

(5) বয়েলের সূত্র: বিজ্ঞানী বয়েল গ্যাসের ধর্ম নিয়ে গবেষণা করে এক যুগান্তকারী সূত্র দেন যার ওপর ভিত্তি করে বহু যন্ত্রপাতি আবিষ্কৃত হয় পরবর্তীকালে। এটি হল নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন যার ওপর প্রযুক্ত চাপের সঙ্গে ব্যস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয়।

(6) ভ্যাকুয়াম পাম্প আবিষ্কার: অটোভন গেরিক ‘ভ্যাকুয়াম পাম্প’ আবিষ্কার করেন যার দ্বারা কোনো নির্দিষ্ট আয়তনের স্থানকে বায়ুশূন্য করা সম্ভব হয়। এই ধারণা পরবর্তীকালে পতনের সূত্র আবিষ্কারে সহায়তা করে।

মূল্যায়ন

এইভাবে আধুনিক রসায়ন চর্চার অন্যতম অঙ্গ হিসেবে বায়ু সম্পর্কিত রসায়ন চর্চার অগ্রগতি ঘটে যা মানবসভ্যতার অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment