“আমি মার কাছে যাচ্ছিলুম, আমাকে ফিরিয়ে এনেছে।”-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে, তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো

“আমি মার কাছে যাচ্ছিলুম, আমাকে ফিরিয়ে এনেছে।”-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে, তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো

"আমি মার কাছে যাচ্ছিলুম, আমাকে ফিরিয়ে এনেছে।”-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে, তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো
“আমি মার কাছে যাচ্ছিলুম, আমাকে ফিরিয়ে এনেছে।”-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে, তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো

বাংলা ছোটোগল্পের জনক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ ছোটোগল্প থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে।

ফটিকের স্কুলের পাঠ্য বই হারিয়ে ফেলা এবং সেই বই কেনার প্রসঙ্গে মামির ব্যবহারে সে বুঝতে পারে মামাবাড়িতে বিশেষত মামির কাছে সে অনাবশ্যক বিড়ম্বনা মাত্র। স্কুল থেকে ফিরে সেই রাত্রে ফটিকের মাথা ব্যথা করতে থাকে। সে বুঝতে পারে তার জ্বর আসছে। মামি তার এই অসুখকে কীরূপ একটা অনাবশ্যক জ্বালাতনের স্বরূপ দেখবে, তা সে স্পষ্ট উপলব্ধি করতে পারল। রোগের সময় এই অকর্মণ্য অদ্ভুত নির্বোধ বালক পৃথিবীতে নিজের মা ছাড়া অপর কারও কাছে সেবা পেতে পারে-এমন প্রত্যাশা করতে ফটিক লজ্জাবোধ করে। সুতরাং প্রবল বৃষ্টি মাথায় করে সে অনভিজ্ঞের মতো বাড়ির উদ্দেশ্যে মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়।

সারাদিন ফটিকের সন্ধান করতে অনেক লোকজনকে অনর্থক অনেক ভিজতে হল। সমস্ত দিনের পর সন্ধ্যার সময় দুইজন পুলিশের লোক গাড়ি থেকে ফটিককে ধরাধরি করে নামিয়ে বিশ্বম্ভরবাবুর নিকট উপস্থিত করেন। ফটিককে যখন বিশ্বম্ভরবাবু কোলে করে অন্তঃপুরে নিয়ে গেলেন তখন তার আপাদমস্তক ভিজে, সর্বাঙ্গে কাদা, মুখ-চোখ লাল হয়ে গেছে। মামি ফটিককে দেখে পুনরায় বিরক্তি প্রকাশ করে বললেন-“কেন বাপু, পরের ছেলেকে নিয়ে কেন এ কর্মভোগ। দাও ওকে বাড়ি পাঠিয়ে দাও।”

অসুস্থ, সারাদিন অনাহারী ফটিককে দেখে মামির এই বিরক্তি প্রকাশ ফটিকের অন্তরে কাঁটার মতো বিদ্ধ হয়। সে মনে করে তার বাড়ি ফিরে যাওয়া উচিত এবং সে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিল। মামা পুলিশের সাহায্যে তাকে ফিরিয়ে না আনলে সে বাড়ি ফিরতে না পারলেও এই বাড়িতে আর কখনও ফিরত না। তাকে দেখে মামির বিরক্তি প্রকাশের উত্তরে ফটিক অশ্রুসজল নয়নে জানিয়ে দেয়- “আমি মার কাছে যাচ্ছিলুম, আমাকে ফিরিয়ে এনেছে।”

আরও পড়ুন – নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো

Leave a Comment