“এখন বাঁচতে হবে। বাঁচতে হলে মিলিমিশে থাকতে হবে ব্যাস্”-বক্তা কে? কোন্ প্রসঙ্গে বক্তার এই উক্তি? উক্ত উক্তির আলোকে বক্তার কী ধরনের মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়?
বক্তা
নবনাট্য-গণনাট্য আন্দোলনের পথিকৃৎ বিজন ভট্টাচার্য বিরচিত ‘আগুন’ নাটকের পঞ্চম দৃশ্যে ৩য় পুরুষ এই কথাটি বলেছেন।
প্রসঙ্গ
বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত সাধারণ মানুষগুলি আপস করতে করতে যখন সমস্ত সহ্যের সীমা পার করে ফেলে তখন ওই মানুষগুলি প্রয়োজনের তাগিদে অনুভব করে সংঘবদ্ধ, জোটবদ্ধ হওয়ার। এই প্রসঙ্গে উক্ত উক্তিটি করা হয়েছে।
বক্তার মানসিকতা
সমাজসচেতন নাট্যকার বিজনবাবু দেখেছিলেন বাংলার বুকে লুকিয়ে থাকা আর এক বাংলাকে- যেখানে শুধুমাত্র রাজশক্তি নয়, অন্যান্য সমাজ-শত্রু, যারা বিদেশি শাসনের সুযোগে নানাভাবে সাধারণ মানুষকে শোষিত, নিপীড়িত করছে; আর অসহায়, নিরুপায় মানুষগুলি নীরবে তা সহ্য করছে। তিনি চেয়েছিলেন বিপ্লবের আগুন মঞ্চ থেকে যেন ছড়িয়ে পড়ে গাঁয়ে-গঞ্জে শোষিত; অত্যাচারিত সাধারণ মানুষের বুকে। তাঁর সেই কাঙ্ক্ষিত চাওয়ার উজ্জ্বল প্রতিফলন ঘটেছে ৩য় পুরুষের চিন্তায়-চেতনায়-মননশীল সত্তায়।
সেইজন্য ক্রমাগত মার খেতে খেতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সাধারণ মানুষগুলির হৃদয়ে, ৩য় পুরুষ প্রথমত, নবচেতনার উজ্জীবন ঘটাতে চেয়েছেন। গণচেতনা ও গণ জাগরণের দিশা দেখিয়েছেন।
দ্বিতীয়ত, একতাবদ্ধ হয়ে, যূথবদ্ধভাবে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও লড়াকু সংগ্রামের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন।
তৃতীয়ত, জীবনযন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত মানুষের অন্তরাত্মায় আশ্বাস আর বিশ্বাসের আলিঙ্গন দিয়েছেন।
আরও পড়ুন – নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো