চিনা প্রশাসনে ম্যান্ডারিনদের অবদান উল্লেখ করো
অথবা, প্রশাসনে ম্যান্ডারিনদের কার্যাবলি উল্লেখ করো

ভূমিকা
প্রাক্-আধুনিক যুগে চিনা শাসনব্যবস্থায় একটি শক্তিশালী আমলাতন্ত্র গড়ে উঠেছিল। এই আমলাতন্ত্র গড়ে উঠেছিল মূলত একশ্রেণির আমলা বা পদস্থ রাজকর্মচারীদের নিয়ে। চিনা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত এইসকল উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীরা ‘ম্যান্ডারিন’ নামে পরিচিত ছিলেন।
চিনা প্রশাসনের অবদান
প্রাচীন কাল থেকেই চিনা সম্রাট ছিলেন রাষ্ট্রীয় শাসনের সর্বেসর্বা। কিন্তু সুষ্ঠুভাবে শাসনকার্য পরিচালনার সুবিধার্থে তাঁকে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারী বা আমলাশ্রেণির সাহায্য নিতে হত। অর্থাৎ চিনা প্রশাসনে এঁদের নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়দায়িত্ব পালন করতে হত। এগুলি হল-
(1) শাসনকার্যে সম্রাটকে সাহায্য: চিনে মাঞ্জু রাজবংশে শাসনকালে উচ্চপদস্থ ম্যান্ডারিনরা কেন্দ্রীয় শাসনে সম্রাটকে নানা কাজে সাহায্য করতেন।
(2) শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা: কেন্দ্রীয় শাসনের পাশাপাশি এই উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারীরা প্রাদেশিক শাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন। প্রাদেশিক বা আঞ্চলিক প্রশাসনের নিযুক্ত ম্যান্ডারিনরা বিভিন্ন প্রদেশ বা স্থানীয় এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করতেন।
(3) যোগসূত্র প্রতিষ্ঠা: ম্যান্ডারিনরা চিনের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক শাসনের মধ্যে যোগসূত্র প্রতিষ্ঠা করতেন।
(4) গতিশীল ও দীর্ঘস্থায়ী প্রশাসন: ম্যান্ডারিনরা কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা চিনে গতিশীল ও দীর্ঘস্থায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন।
(5) অন্যান্য ভূমিকা: প্রশাসনিক দায়দায়িত্বের পাশাপাশি দেশের নিরাপত্তা রক্ষা ও ব্যাবসাবাণিজ্য তদারকি করার ক্ষেত্রেও ম্যান্ডারিনদের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
মূল্যায়ন
সবশেষে বলা যায় যে, ম্যান্ডারিন ব্যবস্থা ছিল চিনা প্রশাসনের অন্যতম মূলস্তম্ভ। চিনা প্রশাসনে ম্যান্ডারিনদের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। তাঁরাই চিনে একটি দীর্ঘস্থায়ী ও দক্ষ প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তুলেছিলেন।
আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর