‘ছুটি’ গল্প অবলম্বনে ফটিকের মায়ের চরিত্র বিশ্লেষণ করো

‘ছুটি’ গল্প অবলম্বনে ফটিকের মায়ের চরিত্র বিশ্লেষণ করো

'ছুটি' গল্প অবলম্বনে ফটিকের মায়ের চরিত্র বিশ্লেষণ করো
‘ছুটি’ গল্প অবলম্বনে ফটিকের মায়ের চরিত্র বিশ্লেষণ করো

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছুটি’ ছোটোগল্পের ক্ষুদ্র পরিসরেও ফটিকের মায়ের চরিত্রটি সমুজ্জ্বল।

সংসারী ও দায়িত্বসচেতন

অল্পবয়সে বিধবা এই গ্রাম্য রমণীটি তাঁর দুই পুত্র নিয়ে সংসারধর্ম পালন করে চলেছেন। জ্যেষ্ঠপুত্র ফটিকের অবাধ্য উচ্ছৃঙ্খলতা তাঁকে সর্বদা ভাবিয়ে তুলত। তাঁর আশঙ্কা ছিল-কোন্দিন ফটিক মাখনকে জলেই ফেলে দেয় অথবা মাথা ফাটিয়ে একটা দুর্ঘটনা ২ ঘটায়। নদীর ধার থেকে মাখন কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে গেলেই তিনি বাঘা বাদিকে পাঠিয়ে ফটিককে ধরে আনেন। ফটিককে দেখামাত্র তিনি অগ্নিমূর্তি ধারণ করে বলেন- “আবার তুই মাখনকে মেরেছিস!” উত্তরে ফটিক নিজের অপরাধ অস্বীকার করলেও মায়ের কাছে সেটি মিথ্যে বলে মনে হয়। আসলে মা তার কনিষ্ঠ সন্তান মাখনকে একটু বেশিই স্নেহ করতেন।

স্নেহধর্মিতা

মাখনকে বেশি স্নেহ করলেও ফটিককে তিনি কোনোভাবেই অবহেলা করতেন না। ফটিকের মামা যখন ফটিককে কলকাতা নিয়ে গিয়ে শিক্ষা দিতে চাইলেন, তখন ফটিকের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে তিনি সেই প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন। এই কারণে ফটিকের বিদায় গ্রহণের জন্য প্রবল আগ্রহ দেখে তিনি ঈষৎ ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন।

ফটিক কলকাতায় এসে মামির অসহযোগিতা ও অবহেলার কারণে বারংবার গ্রামে তার মায়ের কাছে ফিরে যেতে চাইলেও ফটিককে ছেড়ে মায়ের মানসিক অবস্থা কেমন হয়েছিল তা জানা যায় না। কিন্তু যে মুহূর্তে তিনি ফটিকের অসুস্থতার খবর পেয়েছেন সেই মুহূর্তেই কালবিলম্ব না করে তিনি কলকাতায় যাত্রা করেছেন। ফটিকের ঘরে প্রবেশ করে শয্যার উপর আছাড় খেয়ে পড়ে উচ্চস্বরে তিনি বলেন-“ফটিক! সোনা! মানিক আমার!” ফটিক মায়ের আহ্বানে সাড়া দেবার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আর্তনাদ করে বলে ওঠেন- “ওরে ফটিক, বাপধন রে!”

সমগ্র গল্পের প্রেক্ষাপটে ফটিকের মায়ের উপস্থিতি ক্ষণকালের জন্য হলেও, সেই স্বল্প পরিসরে এই গ্রাম্য রমণীটি দায়িত্ববান, যত্নশীলা, স্নেহময়ী মাতারূপে ধরা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন – নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো

Leave a Comment