নবম শ্রেণি প্রশ্নবিচিত্রা উত্তর বিষয় ইতিহাস সেট ১১

Jaynagar Institution (HS)

নবম শ্রেণি প্রশ্নবিচিত্রা উত্তর বিষয় ইতিহাস সেট ১১

বিভাগ-ক

1 (i) নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে সামরিক ‘জুন্টা’ গঠন করেছিল (b) স্পেনের অধিবাসীরা।
(ii) যে বিপ্লবের ফলে জুলাই রাজতন্ত্রের পতন ঘটে তা হল (b) ফেব্রুয়ারি বিপ্লব।
(iii) ‘নাৎসি দলের বাইবেল’-এর রচয়িতা – (b) হিটলার।
(iv) ‘ফ্লাইং শাটল’ আবিষ্কার করেন – (c) জন কে। 
(v) সুয়েজ খাল যে দুটি জলপথকে যুক্ত করেছে সেগুলি হল (d) ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগর।
(vi) ‘আমিই রাষ্ট্র’ উক্তিটি হল – (b) চতুর্দশ লুই-এর। 
(vii) রোবসপিয়র ছিলেন – (a) জেকোবিন।
(viii) ‘The Wealth of Nations’ গ্রন্থের লেখক হলেন (c) অ্যাডাম স্মিথ।
(ix) কনফেডারেশন অফ দ্য রাইন গঠিত হয় খ্রিস্টাব্দে। (a) ১৮০৬
(x) নেপোলিয়ন ‘গ্র্যান্ড আর্মি’ গঠন করেন (a) ব্রিটিশ শক্তি ধ্বংসের জন্য।
(xi) জুলাই বিপ্লবের প্রভাবে ইংল্যান্ডে শুরু হয় আন্দোলন। – (d) চার্টিস্ট
(xii) তৃতীয় ফরাসি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় খ্রিস্টাব্দে। (c) ১৮৭০
(xiii) টেলিগ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার করেন – (a) স্যামুয়েল মোর্স।
(xiv) পোলিশ করিডর যে দুটি দেশকে বিভক্ত করেছে (a) ইস্ট ও ওয়েস্ট প্রাশিয়া।
(xv) প্যারিসের শান্তি সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন (a) ক্লেমেনশোঁ।
(xvi) ব্লিজ ক্রিগ হল পোল্যান্ড আক্রমণকালে – (a) জার্মান বিমানহানা।
(xvii) ‘তৃতীয় বিশ্ব’-এর দেশ নয়। (d) ইংল্যান্ড।
(xvii) ইউরোপে মিত্রবাহিনীর বিজয় দিবস (ভি ই ডে) হল – (a) ১৯৪৫, ৮ মে।
(xix) জাতিসংঘের সবচেয়ে বড়ো দপ্তর ছিল (b) সাধারণ সভা।
(xx) জাতিপুঞ্জের সদর দপ্তর অবস্থিত – (b) নিউ ইয়র্কে।

বিভাগ-খ

2 উপবিভাগ : A
(i) স্পেনের গৃহযুদ্ধকে ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মহড়া’ বলা হয়। 
(ii) ‘অপারেশন বারবারোসা’ রাশিয়ার বিরুদ্ধে করা হয়।
(iii) FAO-এর পুরো নাম Food and Agricultural Organisation 
(iv) আটলান্টিক সনদে স্বাক্ষরকারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন রুজভেল্ট।
উপবিভাগ : B
(i) ফ্রান্সের জাতীয় সভার নাম ছিল ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি। – সত্য।
(ii) দ্বিতীয় ফরাসি সাম্রাজ্য ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। – মিথ্যা । 
(iii) আফ্রিকা মহাদেশকে অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ বলা হত। — সত্য ।
(iv) রাশিয়ার সমাজব্যবস্থার মূল বৈশিষ্ট্য ছিল সমাজতন্ত্র। মিথ্যা। 
উপবিভাগ : C
(i) অ্যাডাম স্মিথ (b) দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস
(ii) নেপোলিয়ন (a) কনস্যুলেট-এর শাসনব্যবস্থা
(iii) ম্যাৎসিনি (d) ইয়ং ইটালি
(iv) সাঁ সিমোঁ (c) নব খ্রিস্টবাদ
উপবিভাগ : E
(i) ব্যাখ্যা – (c) তারা ফ্রান্সের জন্য একটি নতুন সংবিধান রচনা করতে চায়।
(ii) ব্যাখ্যা – (c) ভবিষ্যতে ফ্রান্সের শক্তিবৃদ্ধি প্রতিহত করার জন্য
(iii) ব্যাখ্যা – (b) মার্কিন পুঁজিবাদ ও সোভিয়েত সাম্যবাদের মধ্যে আদর্শগত সংঘাত দেখা দেয়।
(iv) ব্যাখ্যা – (b) বিভিন্ন রাষ্ট্র উপনিবেশ দখলের জন্য যুদ্ধে অগ্রসর হয়েছিল।

বিভাগ-গ

3 (i) বুরবো রাজাদের স্বৈরাচারী শাসনের প্রতীক বাস্তিল দুর্গের পতনের (১৭৮৯, ১৪ জুলাই) ফলে – ফ্রান্সে স্বৈরতন্ত্রের পতন ঘটে, ও ফ্রান্সের বিপ্লবের রাশ বুর্জোয়া সম্প্রদায়ের হাতে চলে যায়, ও বিপ্লবীরা ‘প্যারিস কমিউন’ ও ‘জাতীয় রক্ষীবাহিনী’ গঠন করে পৌরশাসন পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন, ফ্রান্সের বিভিন্ন জায়গায় স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণবিদ্রোহের সূচনা হয় এবং নিপীড়িত মানুষের মনে স্বাধীনতার অনুপ্রেরণা জাগে।
(ii) ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে বিপ্লবী কমিউন কয়েক হাজার রাজতন্ত্রের সমর্থক ব্যক্তিকে বন্দি করে এবং কারাগারে অনেক মানুষকে হত্যা করে। এই ঘটনা ‘সেপ্টেম্বর হত্যাকাণ্ড’ নামে পরিচিত। এই ঘটনা রাজতন্ত্রের অবসানকে সুনিশ্চিত করে।
(iii) Jadavpur Vidyapith -এর 3. (xiv) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(iv) মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা : ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ইংল্যান্ডের সামুদ্রিক বাণিজ্যকে স্তব্ধ করে তার সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বিপর্যস্ত করার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মোট চারটি ডিক্রি (বার্লিন, মিলান, ওয়ারশ, ফন্টেন্যু) জারি করে যে অর্থনৈতিক অবরোধ গড়ে তোলেন, তাকেই ‘মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা’ বলা হয়। নেপোলিয়ন তাঁর সেনাপতি মন্ট জেলার্ডের অর্থনৈতিক অবরোধের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে মহাদেশীয় ব্যবস্থার ছক তৈরি করেন।
(v) মেটারনিখ ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে কার্লসবাড ডিক্রি জারি করেন। এর লক্ষ্য ছিল জার্মানির রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনগুলিকে নিষিদ্ধ করা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা, উদারপন্থী ছাত্র ও শিক্ষকদের দমন, ছাত্র ও অধ্যাপকদের কার্যকলাপের ওপর নজর রাখার জন্য গোয়েন্দা নিযুক্ত করা প্রভৃতির মাধ্যমে ইউরোপে তথা নিজের রাষ্ট্রে পুরাতনতন্ত্র বজায় রাখা।
(vi) ইটালির যুবসমাজকে জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করার জন্য জোসেফ ম্যাৎসিনি ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের মার্সাই শহরে ‘ইয়ং ইটালি’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। এই দলের উদ্দেশ্য ছিল— শিক্ষাপ্রসার, চরিত্র গঠন ও আত্মত্যাগের দ্বারা ইতালীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করা। ম্যাৎসিনি এই দলের আদর্শ প্রচার করার জন্য ‘নব্য ইটালি’ নামে একটি পত্রিকাও প্রকাশ করেছিলেন।
(vii) Chakdaha Bapuji Balika Vidyamandir-এর 3. (vii)-এর উত্তরটি দ্যাখো। 
(viii) ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে মেটারনিখের উদ্যোগে অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, রাশিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যে যে চতুঃশক্তি সমবায়’ গড়ে ওঠে, তাকে ইউরোপীয় শক্তি সমবায়’ বলা হয় ।
উদ্দেশ্য : 
ইউরোপে শান্তি বজায় রাখা এবং ফরাসি বিপ্লবের হাত থেকে ইউরোপকে রক্ষা করা। 
ভিয়েনায় স্বীকৃত ইউরোপের রাষ্ট্রনৈতিক ব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ রাখা। 
ভবিষ্যতে ফরাসি আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা ইত্যাদি।
(ix) ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে বলশেভিক দলের নেতৃত্বে রাশিয়ায় বিপ্লব সংঘটিত হয়। এর দুটি সামাজিক প্রভাব হল–
সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র : রুশ বিপ্লব দেশে সমাজতন্ত্র বা সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা করে। লেনিনের নেতৃত্বে এবং বলশেভিক দলের উদ্যোগে রাশিয়া বিশ্বের সর্বপ্রথম সমাজতান্ত্রিক বা সাম্যবাদী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
সর্বহারার সরকার : বলশেভিক দল দেশে সাধারণ কৃষক, শ্রমিক ও অন্যান্য মেহনতি মানুষদের পরিচালনাধীনে একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করে। যা যথার্থই ছিল সর্বহারার সরকার।
(x) Baita MN High School (HS)-এর 4. (x) -এর প্রথম অংশের উত্তরটি দ্যাখো।
(xi) মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রদত্ত নমুনা প্রশ্নপত্রে -এর 3. (xi) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(xii) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ২ অক্টোবর জার্মানি কর্তৃক রাশিয়ার মস্কো অভিযানটি অপারেশন টাইফুন নামে পরিচিত।
(xiii) জাতিসংঘের অঙ্গগুলি হল– সাধারণ সভা (Assembly) , লিগ পরিষদ (Council), সচিবালয় (Secretariat), আন্তর্জাতিক বিচারালয় (Permanent Court of International Justice) ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থা (International Labour Organisation) |
এ ছাড়া জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থাগুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিল যোগাযোগ সংস্থা, স্বাস্থ্য সংস্থা (Health Organisation), বুদ্ধিজীবী সমবায় সংস্থা (International Committee on Intellectual Co-operation), স্থায়ী দাসত্ব কমিশন (Permanent Slavery Commission) প্রভৃতি।
(xiv) Balurghat High School -এর 6. (xii) –এর উত্তরটি দ্যাখো।

বিভাগ-ঘ

4 (i) Balurghat High School -এর 7. (i) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
অথবা, ভূমিকা : ফ্রান্সে ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের জুন থেকে ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দের জুলাই পর্যন্ত জেকোবিনরা (Jacobin) যে ধরনের শাসনকাঠামো গড়ে তুলেছিল, তা ফ্রান্স তথা বিশ্ব ইতিহাসে ‘সন্ত্রাসের শাসন’ (Reign of Terror) নামে খ্যাত। ফ্রান্সের ইতিহাসে এই শাসনের বেশ কিছু সুফল দেখা গিয়েছিল।
সুফল : ফ্রান্সের ইতিহাসে সন্ত্রাসের রাজত্ব ছিল একটি ‘আপৎকালীন স্বৈরতন্ত্র’ (Dictatorship in Distress)। সন্ত্রাসের শাসনের সুফলগুলি নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে লক্ষণীয়
ফ্রান্সের নিরাপত্তা : বৈদেশিক আক্রমণ ও অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ফ্রান্সে যে অরাজকতার সৃষ্টি করেছিল সন্ত্রাসের শাসন প্রাথমিকভাবে সেই অরাজকতার অবসান ঘটিয়ে ফরাসি জনগণকে নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হয়েছিল। ও সুগঠিত সেনাবাহিনী বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিরোধ এবং অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপনের জন্য সন্ত্রাসের সংগঠকেরা একটি বিশাল সেনাবাহিনী গঠন করেছিল। এর ফলে ফ্রান্সের সৈন্যসংখ্যা অল্প সময়ের মধ্যেই ১০ লক্ষ অতিক্রম করে। সন্ত্রাসের কঠোর শাসন এই সেনাবাহিনীর মধ্যে গভীর জাতীয়তাবোধ ও কঠোর শৃঙ্খলা সঞ্চারিত করেছিল। অর্থনৈতিক সংস্কার : লেভের (Lefebvre), মাতিয়ে Mathiez) প্রমুখ ঐতিহাসিকরা মনে সংস্কারের করেন অর্থনৈতিক জন্য সন্ত্রাসের শাসনের প্রয়োজন ছিল। এঁরা মনে করেন সন্ত্রাসের শাসনের জন্যই ফ্রান্সে কালোবাজারি দমন, সর্বোচ্চ মূল্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ন্যায্য হারে কর আদায় ইত্যাদি সম্ভব হয়েছিল। কৃষিক্ষেত্রে উন্নতি সন্ত্রাসের সংগঠকেরা দেশত্যাগী অভিজাতদের জমিগুলি দরিদ্র ও ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বণ্টন করেন এবং সামন্ততন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে কৃষিক্ষেত্রে গতিশীলতা এনেছিলেন। ও বিপ্লবকে রক্ষা : সন্ত্রাসের সংগঠকেরা ‘সন্দেহের আইন’ (Law of Suspect) ও নির্মম অত্যাচারের মাধ্যমে ভয়াবহ ধ্বংসের হাত থেকে বিপ্লবকে রক্ষা করেছিল। এজন্যই ঐতিহাসিক টেলর (Taylor) বলেছেন, ‘সন্ত্রাস বিপ্লবকে রক্ষা করেছিল’ (The Terror saved the Revolution)।
(ii) Chakdaha Bapuji Balika Vidyamandir -এর 4. (iv) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
অথবা, ফ্রান্সের ইতিহাসে এবং নেপোলিয়নের ব্যক্তিগত জীবনে স্পেনীয় যুদ্ধের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এই যুদ্ধ সম্পর্কে নেপোলিয়ন নিজেই বলেছেন me.’ ‘The Spanish Ulcer ruined
ফরাসিদের ব্যর্থতার কারণ : স্পেনের যুদ্ধে ফরাসিদের ব্যর্থতার পিছনে একাধিক কারণ বিদ্যমান ছিল—
স্পেনের প্রাকৃতিক পরিবেশ : স্পেন ছিল পাহাড়- পর্বত-অরণ্য ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নদী দ্বারা পরিবেষ্টিত দেশ। এ ছাড়া এখানকার দ্রুত পরিবর্তনশীল আবহাওয়ায় নেপোলিয়নের সেনাবাহিনী সমস্যার সম্মুখীন হয়। 
খাদ্যাভাব ও যোগাযোগের সমস্যা: ফরাসি সেনাবাহিনী স্পেনে প্রবেশ করে খাদ্যাভাব এবং যোগাযোগের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। 
স্পেনীয় যুদ্ধনীতি : স্পেনীয় ভৌগোলিক পরিবেশ গেরিলা যুদ্ধনীতির পক্ষে সুবিধাজনক ছিল। স্পেনীয়রা এই যুদ্ধনীতির দ্বারা ফরাসিবাহিনীকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছিল।
স্পেনের জাতীয়তাবোধ : ইতিপূর্বে নেপোলিয়ন ইউরোপের যে-সমস্ত দেশের বিরুদ্ধে লড়েছেন তাদের সৈন্যবাহিনী ভাড়াটে সৈন্যতে পূর্ণ ছিল। কিন্তু স্পেনে তিনি জাগ্রত জাতীয়তাবাদের সম্মুখীন হন। 
ইংল্যান্ডের বিরোধিতা : নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড স্পেনকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল।
(iii) Bantra MSPC High School-এর 4. (iv) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
অথবা, ফ্রান্স তথা ইউরোপের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের জুলাই বিপ্লব। এই বিপ্লবের প্রভাব শুধুমাত্র ফ্রান্সেই সীমাবদ্ধ ছিল না, এর প্রভাব ইউরোপের অন্যান্য দেশেও পড়েছিল।
বেলজিয়াম : জুলাই বিপ্লবে ফরাসিদের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে বেলজিয়ামের অধিবাসীরা হল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু করে এবং সাফল্য লাভ করে। বেলজিয়ামবাসীর এই সাফল্যলাভের মধ্য দিয়ে ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য অধিকার নীতি লঙ্ঘিত হয়।
পোল্যান্ড : জুলাই বিপ্লবের প্রভাব পোল্যান্ডবাসীকেও উৎসাহিত করেছিল। তারা রাশিয়ার অধীনতা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে লিপ্ত হয় এবং রাষ্ট্রশাসনের জন্যে নিজেরা একটি সংবিধানও রচনা করে।
জার্মানি : জুলাই বিপ্লবের প্রভাবে জার্মানিতে গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলন শুরু হয়। হ্যানোভার, স্যাক্সনি প্রভৃতি রাজ্যে প্রজাদের দাবি মেনে নিয়ে উদারতান্ত্রিক সংবিধান প্রবর্তিত হয়।
ইটালি : জুলাই বিপ্লবের ঢেউ ইটালিবাসীকেও অনুপ্রাণিত করেছিল। তারা জাতীয়তাবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং অস্ট্রিয়ার অধীনতা থেকে মুক্তির জন্য আন্দোলনে লিপ্ত হয়। 
ইংল্যান্ড : জুলাই বিপ্লবের ফলে ইংল্যান্ডে উদারনৈতিক সংস্কার আরও ব্যাপকভাবে শুরু হয়। এই বিপ্লবের ফলে ইংল্যান্ডবাসী ‘চার্টিস্ট আন্দোলন’ শুরু করে এবং ইংল্যান্ডে রিফর্ম বিল পাস হয়।
এইভাবে জুলাই বিপ্লবের ঢেউ ফ্রান্সের সীমা অতিক্রম করে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে জাতীয় আন্দোলন গঠনে সহায়তা করেছিল।
(iv) Baita MN High School (HS) -এর 4. (vii)-এর উত্তরটি দ্যাখো।
অথবা, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রদত্ত নমুনা প্রশ্নপত্র -এর 4. (viii) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(v) ইটালিতে ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থানের পটভূমি : প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তরকালে ইটালিবাসীর মধ্যে যখন হতাশা ও অবসাদ নেমে আসে এবং ইটালিতে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে গভীর সংকট দেখা দেয়, সেই যুগসন্ধিক্ষণে বেনিতো মুসোলিনির নেতৃত্বে ইটালিতে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মুসোলিনির নেতৃত্বে ইটালিতে ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থানের কারণ ছিল –
প্যারিসের শান্তিচুক্তি : অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির সাম্রাজ্য থেকে কিছু রাজ্যাংশ পাওয়ার আশায় ইটালি ত্রিশক্তি চুক্তি পক্ষ ত্যাগ করে ‘লন্ডনের গোপন চুক্তি’ (১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ) দ্বারা মিত্রশক্তিতে যোগদান করলেও প্যারিসের শান্তি সম্মেলনে (১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ) ইঙ্গ-ফরাসি শক্তির চক্রান্তে ইটালির আকাঙ্ক্ষিত দাবি ও রাজ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হলে ইটালিবাসীর মনে ক্ষোভ ও হতাশার সঞ্চার হয়েছিল। 
শোচনীয় আর্থিক দুরবস্থা : প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হেতু ইটালির আর্থিক দুরবস্থা দেখা দিয়েছিল। দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেকারত্ব, খাদ্যাভাব, মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছিল। 
শ্রমিক অসন্তোষ : ইটালিতে শ্রমিকেরা মজুরি বৃদ্ধি, কাজের সময় এবং দ্রব্যমূল্য হ্রাস প্রভৃতির দাবিতে কলকারখানায় ধর্মঘট করতে থাকে। 
সরকারি অক্ষমতা : ১৯১৯ থেকে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মোট ছয়বার মন্ত্রীসভার পরিবর্তন ঘটিয়েও ইটালিবাসীর মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়। এর ফলে ইটালিতে নতুন এক দলের উত্থানের পথ প্রশস্ত হয়।  
একনায়কতান্ত্রিক প্রবণতা : গভীর হতাশা থেকে ইটালিবাসীর মধ্যে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা দেখিয়ে স্থায়ী শাসনব্যবস্থার কামনা করে একনায়কতান্ত্রিক ভাবধারার প্রতি আকৃষ্ট করা হয়েছিল। 
মুসোলিনির আবির্ভাব – ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র গঠন : ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মার্চ ১১৮ জন কর্মচ্যুত সৈনিক ও দেশপ্রেমিকদের নিয়ে ফ্যাসিস্ট দল প্রতিষ্ঠিত হয় ইটালির মিলান শহরে। ক্রমেই এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে এই দল ৩৫টি আসন পায়। অবশেষে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ২৭ অক্টোবর তিনি ‘ব্ল্যাক শার্টস্’ বাহিনীর ৫০ হাজার সদস্য নিয়ে রোম অভিযান করেন। অবশেষে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৩০ অক্টোবর তাঁর ফ্যাসিস্ট দল ইটালির ক্ষমতা দখল করে।
অথবা, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রদত্ত নমুনা প্রশ্নপত্রে-এর 5. (iii) -এর প্রথম অংশের উত্তরটি দ্যাখো।
(vi) ঠান্ডা লড়াই : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সমগ্র বিশ্বে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রসমূহ পরস্পরবিরোধী দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে যায়, যার একদিকে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ধনতান্ত্রিক বা পুঁজিবাদী জোট এবং অন্যদিকে ছিল সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সাম্যবাদী জোট। এই দুই শক্তিজোটের মধ্যে প্রকাশ্য যুদ্ধ না হলেও উভয়ের মধ্যে সর্বদাই একটি যুদ্ধের পরিবেশ বজায় থাকে, যা ‘ঠান্ডা লড়াই’ (Cold War) নামে পরিচিত। আসলে ঠান্ডা লড়াই ছিল পুঁজিবাদী ও সাম্যবাদী জোটের আদর্শগত সংঘাত ।
Balurghat High School -এর 7. (vi) অথনা-এর উত্তরটি দ্যাখো।
অথবা, জার্মানি ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ২২ জুন বিশাল সেনাবাহিনী (প্রায় ৪০ লক্ষ সেনা, ৫০০০ যুদ্ধ বিমান, ৩৩০০ যুদ্ধট্যাংক) নিয়ে রাশিয়া আক্রমণ করে। যদিও এর আগে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩ আগস্ট রাশিয়া ও জার্মানির মধ্যে অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু জার্মানি মিথ্যা অজুহাতে এই চুক্তি ভঙ্গ করে রাশিয়া আক্রমণ করে। 
জার্মানির রাশিয়া আক্রমণের কারণ :

হিটলারের রুশ ভীতি : হিটলার মনে করতেন যে রাশিয়া জার্মানি আক্রমণ করতে পারে। আক্রান্ত হওয়ার চেয়ে আক্রমণ করা সুবিধাজনক— তাই তিনি আগেভাগেই রাশিয়া আক্রমণ করেন।
জার্মান আধিপত্য প্রতিষ্ঠা : হিটলারের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব ইউরোপে জার্মান আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু রাশিয়া ছিল এর পথে অন্যতম প্রধান বাধা। তাই তিনি রাশিয়া আক্রমণ করে সেই বাধা দূর করতে চেয়েছিলেন।
রাশিয়ার সম্পদ দখল : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে রাশিয়া জার্মানিকে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করেছিল। কিন্তু জার্মানির ফ্রান্স দখলের পর রাশিয়া জার্মানির ভয়ে ভীত হয়ে তাকে এই সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। জার্মানি এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়। জার্মানির পেট্রোলিয়ামের অভাব ছিল। যুদ্ধের সময় এই অভাব বেড়ে যায়। তখন রাশিয়ার বাকু পেট্রোলিয়াম খনি দখলে জার্মানি সচেষ্ট হয়। এ ছাড়া ক্রিমিয়া ও ইউক্রেন (রাশিয়ার শস্যভাণ্ডার) দখল করে জার্মানি খাদ্যসংকট দূর করতে চেয়েছিল।
‘ওয়ান বাই ওয়ান’ নীতি : হিটলার একসঙ্গে সব দেশের সঙ্গে যুদ্ধ না করে একটির পর একটি দেশ জয় করার নীতি গ্রহণ করেন।
সাম্যবাদী ভীতি : ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ায় সাম্যবাদী সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে পূর্ব ইউরোপে সাম্যবাদের প্রসার ঘটতে থাকে। নাৎসি আদর্শবিরোধী সাম্যবাদকে ধ্বংস করার জন্য হিটলার সাম্যবাদের জন্মভূমি রাশিয়াকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেন।

বিভাগ-ঙ

5 (i) বিপ্লব পূর্ব ফ্রান্স ছিল রাজনৈতিক কারাগার : ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ার ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লব-পূর্ব ফ্রান্সকে ‘রাজনৈতিক কারাগার’ রূপে অভিহিত করেছেন। এর মূল কারণ ছিল
স্বৈরাচারী রাজতন্ত্র : ফরাসি রাজা চতুর্দশ লুই ছিলেন চরম স্বৈরাচারী। তিনি বলতেন, ‘আমিই রাষ্ট্র। এর পরবর্তী রাজা পঞ্চদশ লুই শাসনকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে তাঁর উপপত্নী দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। এরপর অযোগ্য রাজা ষোড়শ লুই-এর আমলে ফরাসি রাজতন্ত্র জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। প্রকৃতপক্ষে প্রাক-বিপ্লব পর্বে ফ্রান্সে বুরবো রাজতন্ত্র ছিল বংশানুক্রমিকভাবে স্বৈরাচারী রাজতন্ত্র এবং তা ছিল অত্যধিক মাত্রায় কেন্দ্রীভূত শাসন। রাজা ষোড়শ লুই-এর আমলে ফ্রান্স অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়লেও ষোড়শ লুই-এর অহংকার কমেনি।
ইনটেনডেন্টদের শোষণ : ফ্রান্সের প্রাদেশিক রাজকর্মচারী বা ইনটেনডেন্টরা ছিল অত্যাচারী এবং তাদের সাহায্যেই ফরাসি সম্রাটরা তাদের স্বৈরাচার কায়েম করত। ফ্রান্সের অত্যাচারিত জনগণ এই ইনটেনডেন্টদের ‘অর্থলোলুপ নেকড়ে’ নামে অভিহিত করত।
গ্রেফতারি পরওয়ানা : বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সে ‘লেতর দ্য ক্যাশে” নামক গ্রেফতারি পরওয়ানার সাহায্যে রাজকীয় কর্মচারীরা যে-কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বিনা বিচারে বাস্তিল দুর্গে আটক করে রাখত। রাজতন্ত্রবিরোধী মনোভাব প্রকাশ করার অপরাধে দার্শনিক ভলতেয়ারকেও বাস্তিল দুর্গে আটক করে রাখা হয়।
ন্যায়বিচারের অভাব : ফরাসি বিপ্লব-পূর্ব ফ্রান্সে সাধারণ জনগণের কোনো ব্যক্তি-স্বাধীনতা ছিল না। তাদের রাজনৈতিক অধিকার ও বাক্‌স্বাধীনতা ছিল সীমাবদ্ধ। এর পাশাপাশি দুর্নীতিপূর্ণ ও শিথিল বিচারব্যবস্থায় ন্যায়বিচার পাওয়ার কোনো আশা ছিল না। এই সমস্ত কারণে ভলতেয়ার ফরাসি বিপ্লব-পূর্ব ফ্রান্সকে ‘রাজনৈতিক কারাগার’ বলে অভিহিত করেছেন।
Balurghat High School -এর 7. (iii) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(ii) নেপোলিয়নের পতনের পর ইউরোপীয় শক্তিবর্গ অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা শহরে এক সম্মেলনে সমবেত হন। এই সম্মেলন চলেছিল ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর থেকে ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের জুন মাস পর্যন্ত। একে ভিয়েনা সম্মেলন বলা হয়। পোপ ও তুরস্কের সুলতান ছাড়া ইউরোপের সব দেশের রাষ্ট্রনেতারা সম্মেলনে যোগ দেন। এই সম্মেলন ছিল ইউরোপ তথা বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত নীতি : ভিয়েনা সম্মেলনে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর তিনটি নীতি গ্রহণ করা হয়। এই তিনটি নীতি হল— ন্যায্য অধিকার নীতি (Principle of Legitimacy),  ক্ষতিপূরণ নীতি (Principle of Compensation) ও শক্তিসাম্য নীতি (Principle of Balance of Power)।
এই নীতিগুলির ওপর ভিত্তি করে সম্মেলনের কার্যকলাপ পরিচালিত হয়।
ন্যায্য অধিকার নীতি (Principle of Legitimacy) : ন্যায্য অধিকার নীতিতে বলা হয়, ফরাসি বিপ্লবের আগে যে রাজা বা রাজবংশ যে দেশে রাজত্ব করতেন; সেখানে সেই রাজার বা রাজবংশের আবার রাজত্ব করার অধিকার আছে। এই নীতি অনুসারে— ফ্রান্সে বুরবোঁ বংশের শাসক অষ্টাদশ লুই সিংহাসনে বসেন। স্পেন, সিসিলি ও নেপলসেও বুরবোঁ বংশের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। অস্ট্রিয়ায় হ্যাপসবার্গ বংশ তাদের রাজত্ব ফিরে পায়। হল্যান্ডে অরেঞ্জ বংশ এবং স্যাভয়, জেনোয়া, পিডমন্ট ও সার্ডিনিয়ায় স্যাভয় বংশ প্রতিষ্ঠিত হয়।
ক্ষতিপূরণ নীতি (Principle of Compensation) : নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যেসব দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ভিয়েনা সম্মেলনে তারা নিজেদের ক্ষতিপূরণ করে নেওয়ার জন্য যে নীতি গ্রহণ করেছিল, তা ‘ক্ষতিপূরণ নীতি’ নামে পরিচিত।
যেসব দেশ নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেগুলি হল – ইংল্যান্ড, রাশিয়া, অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, সুইডেন প্রভৃতি। ক্ষতিপূরণ নীতি অনুসারে এই দেশগুলি যেভাবে উপকৃত হয়, তা নিম্নরূপ–
অস্ট্রিয়া: অস্ট্রিয়া উত্তর ইটালিতে পায় লম্বার্ডি, ভেনেসিয়া, টাইরল প্রভৃতি প্রদেশ। মধ্য ইটালিতে পার্মা, মডেনা ও টাসকানির ওপর অস্ট্রিয়ার হ্যাপসবার্গ বংশের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। অস্ট্রিয়া নবগঠিত জার্মান কনফেডারেশনের সভাপতির পদ লাভ করে। 
রাশিয়া : রাশিয়া পায় পোল্যান্ডের বৃহদংশ, ফিনল্যান্ড ও তুরস্কের বেসারাবিয়া। 
প্রাশিয়া : প্রাশিয়া পায় স্যাক্সনির উত্তরাংশ, পোজেন, থর্ন, ডানজিগ, পশ্চিম পোমেরানিয়া ও রাইন নদীর বাম তীরবর্তী অঞ্চল। 
ইংল্যান্ড : ইংল্যান্ড ঔপনিবেশিক স্বার্থে ক্ষতিপূরণ হিসেবে নেয় ভূমধ্যসাগরের মাল্টা দ্বীপ, মরিসাস, হেলিগোল্যান্ড, সিংহল প্রভৃতি ।
শক্তিসাম্য নীতি (Principle of Balance of Power) : ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত শক্তিসাম্য নীতি বলতে বোঝায় ফ্রান্সের শক্তি খর্ব করে সমতা তৈরি করা, ফ্রান্স যাতে শক্তিশালী হয়ে ইউরোপের শান্তি বিঘ্নিত করতে না পারে তার ব্যবস্থা করা। এই নীতি অনুসারে— ফ্রান্সকে বিপ্লব পূর্ববর্তী সীমানায় ফিরিয়ে আনা হয়। ফ্রান্সের সেনাবাহিনী ভেঙে দেওয়া হয়। বছরের জন্য ফ্রান্সে মিত্রপক্ষের সেনা মোতায়েন রাখার ব্যবস্থা করা হয়। মিত্রপক্ষের এই সেনাবাহিনীর ব্যয়ভার ফ্রান্সকে বহন করতে হয়। মিত্রপক্ষকে ৭০ কোটি ফ্রাঙ্ক ক্ষতিপূরণ দিতে ফ্রান্সকে বাধ্য করা হয়। ফ্রান্সের চারপাশে শক্তিশালী রাষ্ট্রবেষ্টনী গড়ে তোলা হয়। ফ্রান্সের পূর্বসীমান্তে রাইন অঞ্চলকে প্রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ফ্রান্সের উত্তর-পূর্বে লুক্সেমবুর্গ ও বেলজিয়ামকে হল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ফ্রান্সের দক্ষিণে স্যাভয় ও জেনোয়াকে সার্ডিনিয়ার সঙ্গে এবং ফ্রান্সের দক্ষিণ-পূর্বে সুইটজারল্যান্ডের সঙ্গে কয়েকটি অঞ্চল যুক্ত করা হয়। সুইটজারল্যান্ডকে ‘নিরপেক্ষ দেশ’ বলে ঘোষণা করা হয়।
সাফল্য :
ইউরোপের পুনর্গঠন : ফরাসি বিপ্লব (১৭৮৯ খ্রি) ও নেপোলিয়নের সাম্রাজ্যবিস্তার নীতির ফলে ইউরোপের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল ভিয়েনা সম্মেলন ন্যায্য অধিকার নীতি ও ক্ষতিপূরণ নীতির মাধ্যমে ইউরোপের পুনর্গঠন করে সেই সমস্যার আপাত সমাধান করেছিল।
ইউরোপে শান্তিস্থাপন : ভিয়েনা সম্মেলনের নীতিগুলি বাস্তবায়িত হওয়ার ফলে ইউরোপে বেশ কয়েক দশক শান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল এবং ভয়াবহ ধ্বংসলীলা থেকে ইউরোপ রক্ষা পেয়েছিল।
ত্রুটি :
জাতীয়তাবাদের অবমাননা : ভিয়েনা সম্মেলনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ন্যায্য অধিকার ও ক্ষতিপূরণ নীতি প্রয়োগ করে ফরাসি বিপ্লবপ্রসূত জাতীয়তাবাদের চরম অবমাননা করেছিলেন।
ন্যায্য অধিকার নীতির অবমাননা : ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত ন্যায্য অধিকার নীতিকেও সর্বদা মান্য করা হয়নি। যেমন এই নীতি অনুযায়ী ভেনিস প্রজাতান্ত্রিক শাসনের দাবি জানালে তার দাবিকে অবমাননা করা হয়।
(iii) Bankura Zilla School-এর 5. (iii)-এর উত্তরটি দ্যাখো।

Leave a Comment