নবম শ্রেণি প্রশ্নবিচিত্রা উত্তর বিষয় ইতিহাস সেট ৯

Falakata Girls’ High School (HS)

নবম শ্রেণি প্রশ্নবিচিত্রা উত্তর বিষয় ইতিহাস সেট ৯

বিভাগ-ক

(i) সেতু, পথ ও খেয়াঘাটের ওপর নির্ধারিত কর হল (c) পেয়াজ।
(ii) কার্ডিনাল রিশল্যু ছিলেন (a) ত্রয়োদশ লুই-এর – প্রধানমন্ত্রী। 
(iii) ফ্রান্সে জেকোবিন শাসনের সূচনা হয়েছিল ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের – (b) ২ জুন। 
(iv) ‘লেতর ফিলজফিক’ গ্রন্থের রচয়িতা হলেন : (b) ভলতেয়ার।
(v) ম্যাৎসিনি প্রতিষ্ঠিত গুপ্ত সমিতির নাম ছিল – (b) ইয়ং ইটালি।
(vi) জুলাই রাজতন্ত্র বলা হয় (b) লুই ফিলিপ-এর রাজত্বকালকে।
(vii) ইটালিতে লালকোর্তা বাহিনী গড়ে তোলেন – (b) গ্যারিবল্ডি।
(viii) ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল খ্রিস্টাব্দে। (c) ১৮৫৯
(ix) নৈরাজ্যবাদের অন্যতম প্রবক্তা ছিলেন – (b) বাকুনিন ।
(x) স্পেনের গৃহযুদ্ধের নায়ক ছিলেন – (b) ফ্রাঙ্কো। –
(xi) গ্রেগরি রাসপুটিন ছিলেন (b) ভণ্ড সন্ন্যাসী।
(xii) ‘ফ্যাসিস্ট’ কথার অর্থ হল (a) দড়িবাঁধা কাষ্ঠদণ্ড।
(xiii) জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য ছিল না। (c) আমেরিকা। 
(xiv) সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের প্রথম মহাসচিব ছিলেন (b) ট্রিগভি লি। 
(xv) জাতিসংঘের সদর দপ্তর ছিল – (a) জেনেভায় । –
(xvi) সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের অধীন খাদ্য ও কৃষি পরিষদের সংক্ষিপ্ত রূপ হল (b) FAO T
(xvii) ‘লেন্ড লিজ আইন’ গ্রহণ করেছিল – (c) আমেরিকা।
(xviii) ডি ডে বলা হয় (c) ৬ জুন দিনটিকে।
(xix) মিউনিখ চুক্তি স্বাক্ষরের সময় ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন – (c) চেম্বারলেন।
xx) হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা করেছিল – (a) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

বিভাগ- খ

উপবিভাগ : A
(i) যাজকরা যে চুক্তি অনুযায়ী রাজাকে এক স্বেচ্ছাকর দিত, তার নাম ছিল কনট্রাক্ট অফ পেইসি।
(ii) ভিয়েনা সম্মেলনের সময় ইংল্যান্ডের বিদেশ সচিব ছিলেন ক্যাসালরি।
(iii) রাশিয়ার জাতীয় সভার নাম ডুমা।
(iv) উড়ন্ত দুর্গ হল মার্কিন বি-২৯ বিমান।
উপবিভাগ : B
(i) প্যারি কমিউন-এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাঁ জেকুইস বেইলি। — মিথ্যা। 
(ii) কয়েকটি মির একত্রিত হয়ে গঠিত হয় ক্যান্টন। – সত্য। 
(iii) সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের স্থায়ী সদস্য সংখ্যা ৫ জন। – সত্য।
(iv) রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে । মিথ্যা। 
উপবিভাগ : C
ক-স্তম্ভের সঙ্গে খ-স্তম্ভের মিলকরণ :
(i) সামন্ততন্ত্রের বিলুপ্তি (d) ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দ
(ii)অক্টোবর ইস্তাহার (a) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ
(iii) তেহরান ঘোষণা (b) ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দ
(iv) প্যারিসের সন্ধি (c) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ
উপবিভাগ : D
(i) ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে অস্ট্রিয়া ব্যতীত জার্মানির সব রাজ্যই জোলভেরাইন-এ যোগ দিয়েছিল।
(ii) হিটলারের লেখা আত্মজীবনী হল মেইন ক্যাম্প।
(iii) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইটালির রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন মুসোলিনি।
(iv) সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদে ধারার সংখ্যা ১১১ টি।
উপবিভাগ : E

(i) ব্যাখ্যা – (b) রাজপরিবার অপরিমিত অর্থ ব্যয় করে।
(ii) ব্যাখ্যা (a) বিসমার্ক জার্মানির ঐক্যের ক্ষেত্রে ‘রক্ত ও লৌহ নীতি’ গ্রহণ করেন। 
(iii) ব্যাখ্যা (b) ভূমিদাসদের নিয়ে রুশ সেনা গঠিত হয়েছিল।
(iv) ব্যাখ্যা (a) যুদ্ধের পর উভয় শক্তির মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ বৃদ্ধি পেয়েছিল।
বিভাগ-গ
3 (i) মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রদত্ত নমুনা প্রশ্নপত্রে -এর 3. (ii) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(ii) Bantra MSPC High School-এর 3. (iv) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(iii) Dhupguri High School (HS)-এর 3. (ii) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(iv) Chakdaha Bapuji Balika Vidyamandir -এর 3. (vi) -এর উত্তরটি দ্যাখো ।
(v) ‘রিসর্জিমেন্টো’ শব্দের অর্থ হল ‘নবজাগরণ’ বা ‘পুনর্জাগরণ’। সাধারণভাবে ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইতালীয় বুদ্ধিজীবী তথা কবি, সাহিত্যিক, ঐতিহাসিক প্রমুখদের সৃজনশীল কার্যকলাপের দরুন ইটালিবাসীর চেতনা তথা ভাবজগতে যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল তা ইটালির জাতীয় আন্দোলনের ইতিহাসে ‘রিসর্জিমেন্টো নামে পরিচিত।
(vi) Burdwan Raj Collegiate School-এর 3. (vii)-এর উত্তরটি দ্যাখো ।
(vii) Balurghat High School-এর 6. (xi) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(viii) Burdwan Raj Collegiate School-এর 3. (vi) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(ix) Baita MN High School (HS)-এর 4. (x)-এর প্রথম অংশের উত্তরটি দ্যাখো।
(x) Barrackpore Govt High School-এর 3. (xi) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(xi) পার্ল হারবারের ঘটনা : ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর জাপান ৩৩৫টি যুদ্ধবিমান নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌঘাঁটি পার্ল হারবার আক্রমণ করে। এই সময় জাপানের সেনাপতি ছিলেন ভাইস অ্যাডমিরাল নোগুচি। জাপানি আক্রমণে পার্ল হারবার পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। মার্কিন সেনাবাহিনী কিছু বুঝে ওঠার আগেই পার্ল হারবার জাপান কর্তৃক পুরো ধ্বংস হয়ে যায়।
(xii) Bantra MSPC High School-এর 3. (xvi) -এর উত্তরটি দ্যাখো। 
(xiii) ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে রোম-বার্লিন-টোকিও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কারণ হল– ইটালি, জার্মানি ও জাপানে সাম্যবাদের প্রসার রোধ এবং এই লক্ষ্যে পরস্পরকে সাহায্য করা। কোনো চতুর্থ শক্তি দ্বারা আক্রান্ত হলে যাতে এই তিনটি দেশ পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য করতে পারে। রাশিয়ার সঙ্গে কোনোরূপ চুক্তি না করার অঙ্গীকার।
(xiv) Balurghat High School-এর 6. (xii) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(xv) জাতিসংঘের সচিবালয়ের কাজ : সাধারণ সভা ও লিগ পরিষদের আলোচনার জন্য তথ্যাদি সরবরাহ করা। ও বিভিন্ন রাষ্ট্রের অভিযোগ নথিভুক্ত করা। ও দরকারি কাগজপত্র সংরক্ষণ ও অধিবেশন আহ্বান করা ইত্যাদি।
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সচিবালয়ের কাজ :
(ক) জাতিপুঞ্জের কার্যক্রম স্থির করা। (খ) সাধারণ সভা ও অন্যান্য শাখা সংগঠনের কার্যক্রম নির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত কার্যকর করা। 
(xvi) যে তিনটি সংস্থা জাতিসংঘের কার্যাবলির যথাযথ রূপায়ণ ঘটায় সেগুলি হল সাধারণ সভা (Assembly), লিগ পরিষদ (Council) এবং সচিবালয় (Secretariat)।

বিভাগ-ঘ

4 (i) মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রদত্ত নমুনা প্রশ্নপত্রে -এর 4. (i) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(ii) ফরাসি সংবিধান সভার একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হল ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ আগস্ট ‘মানুষ ও নাগরিকের অধিকার ঘোষণা’। এই ঘোষণাপত্রটি ইংল্যান্ডের বিল অফ রাইটস (১৬৮৯ খ্রি), আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র (১৭৭৬ খ্রি) এবং অষ্টাদশ শতকের দার্শনিক মতবাদের ভিত্তিতে রচিত। এটিকে ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দের সংবিধানের ভূমিকা বা মুখবন্ধ বলা হয়। 
মানুষ ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণা : এই ঘোষণাপত্রে বলা হয়- (ক) মানুষের জন্মগত অধিকার হল স্বাধীনতা। (খ) আইনের চোখে সকলেই সমান। (গ) রাষ্ট্রের প্রকৃত সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হল জনগণ। রাজপদে নিয়োগের মাপকাঠি হল যোগ্যতা— বংশমর্যাদা নয়। (ঘ) বাক্‌স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা ইত্যাদি হল মানুষের সর্বজনীন অধিকার।
সীমাবদ্ধতা : ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণাপত্রের কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। যেমন- এতে সামাজিক সাম্য ও অর্থনৈতিক অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। শিক্ষার অধিকার সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। তা ছাড়া নাগরিকের অধিকারের কথা বলা হলেও তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য বিষয়ে এই ঘোষণাপত্র ছিল সম্পূর্ণ নীরব।
গুরুত্ব : কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণাপত্রের গুরুত্বকে মোটেই অস্বীকার করা যায় না। এই ঘোষণাপত্রে শুধু ফ্রান্সের জনগণ নয় 1 সমগ্র মানবজাতির অধিকারের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ঐতিহাসিক ওলার বলেছেন যে, এই ঘোষণাপত্রটি ছিল ‘পুরাতনতন্ত্রের মৃত্যু পরওয়ানা’। লর্ড অ্যাকটন বলেছেন, এটি ‘নেপোলিয়নের সমগ্র বাহিনীর চেয়েও শক্তিশালী ছিল’।
(iii) Dhupguri High School (HS)-এর 4. (vi) -এর উত্তরটি দ্যাখো। 
(iv) Balurghat High School-এর 7. (v) অথনা -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(v) উড্রো উইলসন ছিলেন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ২৮তম রাষ্ট্রপতি। তিনি ছিলেন সৎ ও আদর্শবাদী। তিনি বিশ্বের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাঁর বিখ্যাত ‘চোদ্দো দফা নীতি’ ঘোষণা করেন।
উড্রো উইলসনের চোদ্দো দফা নীতি ঘোষণার প্রেক্ষাপট :
উড্রো উইলসনের সততা : আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন ছিলেন সৎ ও আদর্শবাদী।

যুদ্ধের উদ্দেশ্য সম্পর্কে উইলসনের অভিমত : ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের ২ এপ্রিল উড্রো উইলসন যুদ্ধের আদর্শ ঘোষণা করে বলেছিলেন যে, কোনোরকম স্বার্থ চরিতার্থ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমাদের উদ্দেশ্য হল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বের নিরাপত্তা বিধান করা। রাজনৈতিক স্বাধীনতার ওপর বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং মানবাধিকার রক্ষা করা। কোনো রাজ্যগ্রাস বা প্রভুত্ব স্থাপন আমাদের উদ্দেশ্য নয়। এটি ছিল মিত্রপক্ষের যুদ্ধের আদর্শ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রথম ঘোষণা।
লয়েড জর্জের ঘোষণা : ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লয়েড জর্জ ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের ৫ জানুয়ারি ঘোষণা করেন যে, জার্মান সাম্রাজ্য, তুরস্ক সাম্রাজ্য বা অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্য ধ্বংস করা বা দখল করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমাদের উদ্দেশ্য হল শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
উইলসনের চোদ্দো দফা ঘোষণা : লয়েড জর্জের ঘোষণার তিন দিন পর ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের ৮ জানুয়ারি উড্রো উইলসন মার্কিন কংগ্রেসে স্থায়ী বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য তাঁর বিখ্যাত ‘চোদ্দো দফা নীতি ঘোষণা করেন।
(vi) Baita MN High School (HS)-এর 4. (xi) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(vii) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (১৯৩৯-১৯৪৫ খ্রি) আধুনিক বিশ্ব ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ অপেক্ষা এই যুদ্ধ ছিল অনেক বেশি ব্যাপক, ভয়াবহ, প্রাণনাশক এবং আধুনিক। এই যুদ্ধে যে সকল পরিবর্তন লক্ষ করা যায়, সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল যুদ্ধের কৌশলগত পরিবর্তন।
উন্নত অস্ত্রশস্ত্র : উন্নত ধরনের বিমান, ডুবোজাহাজ, ট্যাংক প্রভৃতির ব্যবহার ছিল উল্লেখযোগ্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান প্যারাসুট বাহিনী আকাশ থেকে ঝাঁপ দিয়ে হল্যান্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ রুদ্ধ করে দিয়েছিল। আণবিক বোমার ব্যবহারও ছিল এই যুদ্ধের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। জার্মানি থেকে বিতাড়িত বিশ্ববন্দিত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন- -এর বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারকে কাজে লাগিয়ে মার্কিন সরকার প্রথম পরমাণুশক্তির অধিকারী হয় এবং এই শক্তিকে ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবহার করে। পরমাণু বোমা ছিল তৎকালীন সর্বাধিক শক্তিশালী মারণাস্ত্র।

বিমানবাহী জাহাজ : এই যুদ্ধে জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহী জাহাজ ব্যবহার করে। ফলে মাঝসমুদ্রেও বিমান হানা সম্ভব হয়।
দূর ক্ষেপণাস্ত্র : এই যুদ্ধে প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহৃত হয়। জার্মান বিজ্ঞানী গোয়েরিং ‘রাইন কন্যা’ নামে একটি ক্ষেপণাস্ত্র আবিষ্কার করেন। ক্ষেপণাস্ত্রটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছোনোর পর ৫ ডিগ্রি কৌণিক অভিমুখে এগিয়ে গিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষে আঘাত করত।
যানবাহন : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মোটরগাড়ির ব্যাপক ব্যবহার হয়। এই যুদ্ধ ছিল যান্ত্রিক। ফলে সেনাবাহিনীর দ্রুত সচলতা লক্ষ করা যায়।
প্রচার : প্রচারমাধ্যমও এই যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। রেডিয়ো, সংবাদপত্র, ইস্তেহার প্রভৃতির মাধ্যমে যুদ্ধকালীন ঘটনার প্রচারের ব্যবস্থাও এই যুদ্ধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যুদ্ধে সামরিক তথ্য আদানপ্রদানের জন্য জার্মানি ‘এনিগমা’ যন্ত্র আবিষ্কার করে।
উন্নত ধরনের যুদ্ধাস্ত্র, পারমাণবিক বোমা, রেডিয়ো প্রভৃতি প্রচারমাধ্যমের ব্যবহার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে অনেক বেশি ভয়াবহ ও বিধ্বংসী করে তুলেছিল।
(viii) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে জার্মানিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল গড়ে ওঠে, যেগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল নাৎসি দল।
নাৎসি দল প্রতিষ্ঠা : ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে অ্যান্টন ড্রেক্সলার ‘জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টি’ প্রতিষ্ঠা করেন। এই দলের সদস্যসংখ্যা যখন মাত্র ২৩ জন তখন অ্যাডলফ হিটলার এর সদস্য হন। কিছুকাল পর হিটলারের দক্ষতায় দলের সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে তিনি দলের নতুন নামকরণ করেন ‘ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টি’ বা নাৎসি দল।
নাৎসিবাদের উত্থানের পটভূমি : নাৎসিবাদের উদ্ভবের পিছনে নানা কারণ বিদ্যমান ছিল
সাম্যবাদ বিরোধিতা : রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লবের প্রভাব জার্মানিতে ছড়িয়ে পড়েছিল। স্পার্টাকাস নামে একটি কমিউনিস্ট দল গড়ে ওঠে। শ্রমিক ধর্মঘট সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। এই অবস্থায় নাৎসি দল কমিউনিস্ট বিরোধিতা করলে শিল্পপতিরা সমর্থন জানায়। গ
ইহুদি বিরোধিতা : নাৎসি দল আর্যায়ন-এর নামে ইহুদি বিরোধিতা শুরু করলে সাধারণ জার্মানরা তা সমর্থন করে। 
বিশিষ্টদের সমর্থন : জার্মানির বিখ্যাত সেনাপতি লুডেনডর্ফ, জাংকার গোষ্ঠী এবং বেকার সৈনিক ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী এই দলকে সমর্থন জানায়। 
নাৎসি দলের কর্মসূচি : ভার্সাই সন্ধি বাতিল, হারানো উপনিবেশ উদ্ধার, সমস্ত জার্মানভাষীদের সমন্বয়ে জার্মান রাষ্ট্রগঠন, সাম্যবাদের অবসান ইত্যাদি নাৎসি কর্মসূচি বিধ্বস্ত জার্মান জাতির মনে আশার সঞ্চার করে। ফলে দলে দলে শিক্ষিত যুবক এই দলে যোগদান করে। 
হিটলারের প্রভাব : জার্মানিতে নাৎসি দলের উদ্ভবে হিটলারের সাংগঠনিক শক্তি, নেতৃত্ব ও বাগ্মিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। ‘মেইন ক্যাম্ফ’ (Mein Kampf) গ্রন্থে তিনি নাৎসি দলের উদ্দেশ্য, আদর্শ ও জার্মান জাতির শ্রেষ্ঠত্বের কথা তুলে ধরে জার্মানবাসীকে নাৎসি দলের প্রতি আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
এই সমস্ত কারণে জার্মানিতে নাৎসিবাদ ও নাৎসি দল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

বিভাগ-ঙ

5 (i) পরাজিত নেপোলিয়নকে যখন সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া হয় তখন সেখানে তিনি তাঁর আত্মজীবনী রচনা করেন। আত্মজীবনীতে তিনি বলেছেন, আমি বিপ্লবের সন্তান’ (Child of Revolution)। আবার তিনি এও লিখেছিলেন ‘আমিই বিপ্লব’ (I am the Revolution)। ঐতিহাসিক সোরেল (Sorel) নেপোলিয়নকে “ফরাসি বিপ্লবের মূর্ত প্রতীক’ বলে অভিহিত করেছেন।
বিপ্লবের সন্তান : নেপোলিয়ন ছিলেন কর্সিকা দ্বীপের এক সাধারণ পরিবারের সন্তান – তিনি রাজপরিবারের সন্তান ছিলেন না। আর ফ্রান্সে রাজপরিবারের সন্তান ছাড়া অন্য কারোর রাজা হওয়ার অধিকার ছিল না। কিন্তু ফরাসি বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে সাম্যের (Equality) আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাই ফরাসি বিপ্লবের জন্য নেপোলিয়ন সাধারণ পরিবারের সন্তান হয়েও ফ্রান্সের সম্রাট হতে পেরেছিলেন। অর্থাৎ সম্রাট নেপোলিয়ন ছিলেন বিপ্লবের সন্তান’।
বিপ্লবী আদর্শের সম্প্রসারক : নেপোলিয়ন বিভিন্নভাবে ফরাসি বিপ্লবের আদর্শকে দেশে ও বিদেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।

দেশে (ফ্রান্সে ) : ১৭৯১-১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দে বিপ্লবী সরকার যেসব সামন্তকর এবং সামন্তপ্রথা প্রভৃতির বিলোপ করেছিলেন, নেপোলিয়নও তাঁর রাজত্বকালে তা বহাল রেখেছিলেন। তিনি যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির নীতিকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।
তিনি ‘কোড নেপোলিয়ন’ (Code Napoleon) প্রবর্তন করে আইনের চোখে সকলের সমান অধিকারের নীতি ঘোষণা করেছিলেন। তিনি ফরাসি সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা করেন। ও তিনি রাজতন্ত্রের ঈশ্বরপ্রদত্ত ক্ষমতাকে অস্বীকার করে ফরাসি জনগণের গণভোট প্রথাকে স্বীকৃতি দেন।
বিদেশে : “নেপোলিয়ন ছিলেন বিপ্লবের তরবারি” (Napoleon was the Sword of Revolution)। তিনি ফরাসি বিপ্লবের সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার আদর্শ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নির্বাচিত মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। তাঁর আক্রমণে ইউরোপের স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রগুলি ভেঙে পড়ে। ও তিনি ইউরোপের সাধারণ জনগণকে সামন্ততান্ত্রিক শাসন ও স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের হাত থেকে মুক্ত করে তাদের সমান অধিকার প্রদান করেন। আইনের সাম্যনীতি এবং ও কোড নেপোলিয়ন প্রবর্তন করেন। নেপোলিয়নের সাম্রাজ্য বিপ্লবকে ব্যাহত না করে, বিপ্লবের প্রসার সাধন করেছে। তাই তাঁকে বিপ্লবের সম্প্রসারক ও নির্বাহক’ বলা হয়।

Leave a Comment