পশ্চিম ভারতে কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবন বা কেন্দ্রীভবনের কারণগুলি আলোচনা করো। |
পশ্চিম ভারতে মহারাষ্ট্রের মুম্বাই, পুনে, নাগপুর অঞ্চলে এবং গুজরাটের আমেদাবাদ, সুরাট অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এ ছাড়াও মধ্যপ্রদেশের ভোপাল, ইন্দোর, গোয়ালিয়র অঞ্চলে এই শিল্প বিকশিত হয়েছে। এর কারণগুলি হল–
কাঁচামালের সহজলভ্যতা :
মহারাষ্ট্র, গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশের কৃয়মৃত্তিকা অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে কার্পাস চাষ হয়। ব্যাসল্ট লাভাগঠিত কৃয়মৃত্তিকা অঞ্চলটি সর্বশ্রেষ্ঠ কার্পাস উত্তোলক অঞ্চল হওয়ায় কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবন ঘটেছে।
আর্দ্র জলবায়ু :
আরব সাগরের আর্দ্র সমুদ্রবায়ুর প্রভাব থাকায় গুজরাট ও মহারাষ্ট্র অঞ্চলে অধিক সংখ্যায় কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে, কারণ আর্দ্র আবহাওয়ায় সুতো ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
বিদ্যুৎশক্তির প্রাচুর্য:
ভিরা, ভিবপুরী, খোপালি, উকাই প্রভৃতি জলবিদ্যুৎকেন্দ্র এবং টুম্বে, নাসিক, ধুবরান প্রভৃতি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও কাকরাঝাড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পশ্চিম ভারতে কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনে সাহায্যে করেছে।
উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা:
পশ্চিম রেলপথের অবস্থান, কোঙ্কন রেলপথের সম্প্রসারণ, জাতীয় সড়ক 3, 4, 6, 7, ৪-এর দ্বারা উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্পাস বয়ন শিল্পের বিকাশে সাহায্যে করেছে।
বন্দরের নৈকট্য:
ভারতের পশ্চিমে উপকূলে মুম্বাই, কান্ডালা, সুরাট, পোরবন্দর, জওহরলাল নেহেরু বন্দর, ওখা প্রভৃতি বন্দরের মাধ্যমে কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি আমদানি ও বস্ত্র রপ্তানির সুবিধা রয়েছে।
মূলধন
স্থানীয় পার্সি, গুজরাটি ও ভাটিয়া শিল্পপতিদের মূলধন বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থার (LIC, IDBI প্রভৃতি) অর্থের জোগান পশ্চিম ভারতের কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনে সাহায্য করেছে।
সুলভ ও দক্ষ শ্রমিক :
মহারাষ্ট্রের ডেকান ট্র্যাপ অঞ্চল কৃষিতে অনুন্নত হওয়ায় সুলভে প্রচুর শ্রমিক পাওয়া যায়। এ ছাড়া সুরাট, ভোপাল প্রভৃতি অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষিজীবীরা কার্পাস বয়ন শিল্পে কাজ করে।
চাহিদা :
পশ্চিম ভারতের মুম্বাই, আমেদাবাদ, সুরাট, পুনে প্রভৃতি ঘন জনবসতিপূর্ণ শহরগুলিতে কার্পাসবস্ত্রের বিপুল চাহিদা রয়েছে, যা এই শিল্পের কেন্দ্রীভবন ঘটাতে সাহায্য করেছে।