ফটিকের মাকে কেন বিশ্বম্ভরবাবু কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন? মা এসে কী করলেন?
মা-কে ডেকে পাঠানোর কারণ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পটিতে ফটিক অনেক উৎসাহ ও আগ্রহের সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে মামাবাড়িতে এসেছিল। কিন্তু কলকাতায় আসার পর সেখানকার বন্দিজীবন ও চারপাশের মানুষের স্নেহহীন কদর্য ব্যবহার ফটিককে ক্লান্ত করে তোলে। চার দেয়ালের মধ্যে আটকা পড়ে কেবলই তার সেই গ্রামের কথা মনে পড়ত। ফটিক জানতে পারে কার্তিক মাসের পুজোর ছুটির আগে তার গ্রামে যাওয়া অসম্ভব।
এদিকে স্কুলের বই হারানোকে কেন্দ্র করে ফটিকের উপর মানসিক নির্যাতন চরমে উঠলে ফটিক মামাবাড়ি থেকে পালিয়ে বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। কিন্তু অচেনা পথে সারাদিন বৃষ্টিতে ভিজে সে যখন জ্বরে ক্লান্ত তখন পুলিশের লোকেরা তাকে আবার মামাবাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। ফিরে এসে মামির ব্যবহারে আঘাত পেয়ে ফটিক বলে ওঠে- “আমি মার কাছে যাচ্ছিলুম, আমাকে ফিরিয়ে এনেছে।” সারারাত ফটিক জ্বরের ঘোরে বিড়বিড় করে মায়ের কথা মনে করতে থাকলে বিশ্বম্ভরবাবু ফটিকের মাকে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন।
মায়ের প্রতিক্রিয়া
দু-দিন পর ফটিকের মা ঝড়ের মতো ঘরে প্রবেশ করে উচ্চকলরবে শোকে বিলাপ করতে শুরু করেন। বিশ্বম্ভরবাবু বহুকষ্টে তাঁর ভগিনীকে শান্ত করার চেষ্টা করলে ফটিকের মা শয্যার উপর আছাড় খেয়ে পড়ে ফটিককে ডাকলেন- “ফটিক! সোনা! মানিক আমার!” ফটিক সহজেই মায়ের ডাকে সাড়া দিলে মা আবার ডাকলেন- “ওরে ফটিক, বাপধন রে!” এবার ফটিক আর মায়ের কথার উত্তর দিতে পারল না। কেবল পাশ ফিরে শুয়ে মৃদুস্বরে বলল, “মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি।”
আরও পড়ুন – দর্শন শব্দের অর্থ MCQ