বালক ফটিক চরিত্রের বর্ণনা করো

বালক ফটিক চরিত্রের বর্ণনা করো

বালক ফটিক চরিত্রের বর্ণনা করো
বালক ফটিক চরিত্রের বর্ণনা করো

রবীন্দ্রনাথের রচিত অধিকাংশ ছোটোগল্পগুলি নিসর্গমুখী। মানুষ ও প্রকৃতি সেখানে অভিন্ন, যার প্রতিফলন দেখা যায় ‘ছুটি’ গল্পের ফটিক চরিত্রে। বালকদলের সর্দার ফটিক দুরন্তপনায় প্রথম। তার দুষ্টবুদ্ধিও কম ছিল না। প্রকৃতির উন্মুক্ত প্রান্তরে খেলে বেড়াতে সে ভালোবাসত।

আত্মসম্মানবোধ

ফটিকের আত্মসম্মানবোধ ছিল তীব্র। সেজন্য মাখন মায়ের কাছে গিয়ে যখন অভিযোগ করল যে দাদা চড় মেরেছে তখন সে প্রতিবাদে মুখর হয়। তবুও মাখন যখন বারবার বলতে থাকে যে দাদা তাকে মেরেছে, তখন ফটিক নিজের আত্মসম্মান রক্ষার্থে মাখনের গালে চড় মেরে বলে,-“ফের মিথ্যে কথা!”

স্নেহকাতরতা

ফটিক মামাবাড়িতে স্নেহ পায়নি। মামিমার স্নেহহীন চোখে সে দুষ্ট গ্রহের মতো প্রতিভাত হয়েছে। স্নেহের কাঙাল ফটিক মামির কাছে স্নেহ পাওয়ার বাসনায় আনন্দের সঙ্গে মামির সামান্য কাজও করে দিত। অনেক সময় মনের আনন্দে যতটা প্রয়োজন তার থেকে বেশি কাজ করলেও মামি তার উৎসাহ দমন করে অবজ্ঞার সুরে বলতেন, -“ঢের হয়েছে, ঢের হয়েছে। ওতে আর তোমায় হাত দিতে হবে না।” প্রকৃতি প্রেম: প্রকৃতির প্রতি ফটিকের অন্তরের টান ছিল অপরিসীম। মামার বাড়িতে মামির অনাদর ও অবজ্ঞা যখন তার অসহ্য হয়ে উঠত তখন যে গ্রাম্য জীবনের কথা ভাবত। মনে মনে পৌঁছে যেত নদীতীরবর্তী সেই খোলা মাঠে। “প্রকাণ্ড একটা ধাউস ঘুড়ি লইয়া বোঁ বোঁ শব্দে উড়াইয়া বেড়াইবার সেই মাঠ, ‘তাইরে নাইরে নাইরে না’ করিয়া উচ্চেঃস্বরে স্বরচিত রাগিণী আলাপ করিয়া অকর্মণ্যভাবে ঘুরিয়া বেড়াইবার সেই নদীতীর”।

বিনা দোষে ফটিক হারায় তার শৈশবের আনন্দ, হারায় জীবন গড়ার সুযোগ। এমনকি নিষ্ঠুর বাস্তবতার দৌরাত্ম্যে শেষ পর্যন্ত হারায় তার জীবনও। যাওয়ার আগে শুধু রেখে যায় পাঠকের মনে প্রচুর প্রশ্নের আঁচড়।

আরও পড়ুন – নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো

Leave a Comment