বিশ্বম্ভরবাবু কে? ‘ছুটি’ গল্পে তাঁর ভূমিকা আলোচনা করো

বিশ্বম্ভরবাবু কে? ‘ছুটি’ গল্পে তাঁর ভূমিকা আলোচনা করো

বিশ্বম্ভরবাবু কে? 'ছুটি' গল্পে তাঁর ভূমিকা আলোচনা করো
বিশ্বম্ভরবাবু কে? ‘ছুটি’ গল্পে তাঁর ভূমিকা আলোচনা করো

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছুটি’ ছোটোগল্পে উল্লেখিত বিশ্বম্ভরবাবু সম্পর্কে ফটিকের মামা, যিনি কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন পশ্চিমে কাটিয়ে দেশে ফিরে তাঁর ভগিনীকে দেখতে এসেছিলেন।

বিশ্বম্ভরবাবুর ভূমিকা ‘ছুটি’ গল্পে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বোনের অসহায়তা ও ফটিকের অবাধ্য উচ্ছৃঙ্খলতা, পাঠে অমনোযোগ সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর ভাগ্নে ফটিককে তিনি সঙ্গে করে কলকাতার বাড়িতে নিয়ে আসেন। তিনটি পুত্রের পিতা বিশ্বম্ভরবাবু ফটিকের খাওয়া পরা, লেখাপড়ার দায়িত্ব নিজের একার আয়ের উপর নির্ভর করেই গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন মহৎপ্রাণ, দয়ালু মনের মানুষ।

ফটিক কলকাতায় আসার পর যখন মায়ের কাছে যেতে চেয়েছে তখনই মামা ফটিককে আশ্বাস দিয়ে বলেছেন- “স্কুলের ছুটি হোক।” অর্থাৎ লেখাপড়ার বিষয়ে তিনি যেমন সচেতন ছিলেন, তেমনই ফটিকের সঙ্গে তাঁর মায়ের সাক্ষাতের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখতেন।

বিশ্বম্ভরবাবুর কলকাতার বাড়ি থেকে ফটিক নিরুদ্দেশ হওয়ার পর প্রতিবেশীদের বাড়ি গিয়ে তিনিই ফটিকের সন্ধান করে বেড়িয়েছেন। সারারাত শ্রাবণের বৃষ্টি উপেক্ষা করে অনুসন্ধান চালানোর পর ব্যর্থ হয়ে তিনি পুলিশে খবর দেন। সন্ধ্যার সময় পুলিশের সহায়তায় আপাদমস্তক ভিজে, কর্দমাক্ত ফটিকের সন্ধান পাওয়া যায়। তখন পরম মমতায়, ‘বিশ্বম্ভরবাবু প্রায় কোলে করিয়া তাহাকে অন্তঃপুরে লইয়া গেলেন।’

বিশ্বম্ভরবাবুই রাতে ফটিকের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসককে নিয়ে এসেছিলেন। ফটিক তার ছুটি হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে বিশ্বম্ভরবাবু চোখ মুছে ফটিকের শীর্ণ হাতটি নিজের হাতের উপর তুলে নিয়েছিলেন। ফটিক যখন তার মা-এর প্রত্যাশায় নিরাশ হয়ে নীরবে দেয়ালের দিকে মুখ করে শুয়েছিল, তখন ফটিকের মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে ফটিককে আশ্বস্থ করে মৃদুস্বরে বলেছেন, “ফটিক, তোর মাকে আনতে পাঠিয়েছি।” সবদিক থেকে দেখলে, বিশ্বম্ভরবাবু ছিলেন একজন মানবদরদি আদর্শ মানুষ।

আরও পড়ুন – নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো

Leave a Comment