![]() |
মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কারের (১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ) বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের ত্রুটিগুলি আলোচনা করো। |
মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কারের বৈশিষ্ট্যসমূহ
প্রাদশের শাসনব্যবস্থা: প্রদেশের দায়িত্বকে সংরক্ষিত ও হস্তান্তরিত -এই দুভাগে ভাগ করা হয়। সাধারণ প্রশাসন, পুলিশ, অর্থ, বিচার এগুলি সংরক্ষিত এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্বায়ত্তশাসন প্রভৃতি হস্তান্তরিত ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ ছাড়া পৌরসভা, ইউনিয়ন বোর্ড গড়ে তুলে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থাও চালু করা হয়।
ভারতসচিবের কাউন্সিল: ভারতসচিবের কাউন্সিলের সদস্যসংখ্যা ৮ থেকে ১২-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয় এবং তাদের কার্যকালের মেয়াদ ছিল ৫ বছর। এতদিন পর্যন্ত সদস্যদের বেতনের ব্যয়ভার ভারতীয় রাজস্ব থেকেই মেটানো হত। কিন্তু এই নতুন আইনে স্থির হয়, এই বেতনভার বহন করবে ব্রিটিশ সরকার -যা ছিল মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের ত্রুটিসমূহ
সরকারি নিয়ন্ত্রণ: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের মাধ্যমে বড়োলাট প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী হন। একইভাবে প্রদেশগুলিতে ছোটোলাট অনুরূপ ক্ষমতা লাভ করেন। কেন্দ্র ও প্রদেশে সরকার পক্ষেরই সংখ্যাধিক্য বজায় থাকে।
দ্বৈত শাসনব্যবস্থার ত্রুটি: প্রাদেশিক শাসনকার্য সংরক্ষিত ও হস্তান্তরিত -এই দুটি ভাগে ভাগ করে একদিকে ক্ষমতাহীন দায়িত্ব এবং অন্যদিকে দায়িত্বহীন ক্ষমতার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এর ফলে শাসনকাঠামোর ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।
সীমিত ভোটাধিকার ও পৃথক নির্বাচনী ব্যবস্থা: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন দ্বারা কেবলমাত্র মুষ্টিমেয় ভারতীয়রাই ভোটাধিকার লাভ করেছিল। আবার মর্লে-মিন্টো আইনে যে সাম্প্রদায়িক নির্বাচন পদ্ধতি গৃহীত হয়েছিল ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনেও তা বজায় থাকে। এর ফলে ভারতবর্ষের রাজনৈতিক ঐক্য ক্ষুণ্ণ হয়। তাই বলা যায়, ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের আইন ভারতবাসীর আশাপূরণে ব্যর্থ হয়।
সীমিত অর্থ বরাদ্দ: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের আইনে জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য খুবই সীমিত অর্থ ধার্য করা হয়েছিল। সীমিত অর্থে জনকল্যাণের মতো বিশাল কর্মপরিচালনা করা কখনোই সম্ভবপর ছিল না।