“রবীন্দ্রনাথের সাহচর্য পেয়েছিলুম”- বক্তা কীভাবে রবীন্দ্রনাথের সাহচর্য পেয়েছিলেন, তা ব্যাখ্যা করো

কৈশোরে রবীন্দ্রদর্শন

সৈয়দ মুজতবা আলী বাংলাদেশের সিলেট তথা শ্রীহট্ট জেলার করিমগঞ্জে ১৯০৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১৯ সালে তিনি প্রথম রবীন্দ্রনাথকে দেখেন সিলেটে গোবিন্দনারায়ণ সিংহের এক অনুষ্ঠানে। মুরারিচাঁদ কলেজের ছাত্রাবাসে আয়োজিত সেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ছাত্রদের উদ্দেশে একটি বক্তব্য রাখেন রবীন্দ্রনাথ। বক্তৃতার বিষয় ছিল-‘আকাঙ্ক্ষা’। রবীন্দ্রনাথের সেই বক্তৃতা ১৫ বছর বয়সি কিশোর মুজতবা আলীর মনোজগতে ব্যাপক প্রভাব ফ্যালে। এরপর তিনি রবীন্দ্রনাথকে পত্র পাঠিয়ে একটি প্রশ্ন করেন, “আকাঙ্ক্ষাকে বড় করার উপায় কী?”, “অর্থাৎ তার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার?”

রবীন্দ্রনাথের কাছে শিক্ষালাভ

এরপর, ১৯২১ সালে তিনি পড়তে আসেন শান্তিনিকেতনে। তাঁর স্মৃতিচারণায় জানা যায়-“শ্রীহট্টবাসীরূপে আমার এই গর্ব যে বিশ্বভারতীর কলেজ বিভাগে আমিই প্রথম বাইরের ছাত্র।” এই বাইরের ছাত্রটিই খুব তাড়াতাড়ি ‘ভিতরের মানুষ’ হয়ে উঠতে পেরেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্যে পড়েছিলেন ‘বলাকা’ কাব্যের গতিতত্ত্ব, জেনেছিলেন শেলি ও কীট্সকে। শৈশবে রবীন্দ্রনাথকে চিঠি লিখে উত্তর পাওয়া থেকেই কবিগুরুর প্রতি মুজতবা আলীর অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভক্তির মাত্রা শতগুণ বৃদ্ধি পায় এবং আজীবন বজায় থাকে। সঙ্গে অতিরিক্ত পাওনা রবীন্দ্রসান্নিধ্য।

রবীন্দ্রসান্নিধ্য

রবীন্দ্রনাথকে তিনি চোখের সামনে দেখেছেন। তাঁর কাছে পড়েছেন। তাঁর অমানুষিক কর্মদক্ষতা ও অপরিসীম জ্ঞানতৃয়া তাঁকে মুগ্ধ ও বিস্মিত করেছে। লেখক তাঁর মধ্যে কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগ সমাহিত হতে দেখেছেন। এভাবেই তিনি কবিগুরুর সাহচর্য লাভ করেছিলেন।

Leave a Comment