লালন শাহ ফকিরের গান প্রশ্ন ও উত্তর ( Marks 2) | একাদশ শ্রেণি 2nd Semester WBCHSE

লালন শাহ ফকিরের গান প্রশ্ন ও উত্তর ( Marks 2) | একাদশ শ্রেণি 2nd Semester WBCHSE

লালন শাহ ফকিরের গান প্রশ্ন ও উত্তর
লালন শাহ ফকিরের গান প্রশ্ন ও উত্তর

১। ‘লালন শাহ ফকিরের গান’ কবিতার বা গানের রচয়িতা কে? এটি কোন্ জাতীয় গান?

‘লালন শাহ ফকিরের গান’ কবিতার বা গানের রচয়িতা হলেন বাউল সাধক মরমিয়া কবি, গীতিকার লালন শাহ।

গানটি বাউল সাধক লালনের সাধন-ভজনমূলক বাউল গীতিকা শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।

২। লালন শাহ ফকির কে ছিলেন? তাঁর ‘লালন শাহ ফকিরের গান’ নামক পদটির মূল বক্তব্য কী?

লালন শাহ ফকির হলেন বাউল সাধক কবি। বাউলদের আত্মানুসন্ধানের মাধ্যমে আরাধ্য দেবতা, পরমাত্মা বা মনের মানুষের সান্নিধ্যলাভ এবং মানবতাবাদের জয়গান পাঠ্য চাং ‘লালন শাহ ফকিরের গান’ পদটির মূল বক্তব্য।

৩। লালন শাহ্ কোন্ ধর্মমতে, কার কাছে দীক্ষিত? দীক্ষিত হওয়ার পর তিনি কোথায় আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন?

লালন শাহ ছিলেন হিন্দু কায়স্থ কিন্তু হিন্দু সমাজ থেকে বিতাড়িত আমায় হওয়ার পর তিনি বাউল গুরু সিরাজ সাঁই-এর সংস্পর্শে আসেন এবং তাঁর কাছে বাউল ধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন। বাউল ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর অধুনা বাংলাদেশের সেঁউড়িয়া গ্রামে বাউলধর্ম প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।

৪। লালন শাহের গানগুলো একত্রে কোন্ গ্রন্থে রয়েছে? আমাদের পাঠ্য ‘লালন শাহ ফকিরের গান’ নামক পদটি বা বা গানটি কোন্ গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত হয়েছে?

বাউল কবি লালন শাহ নিজে কোনো গান লিখে যাননি। তিনি বিভিন্ন সময় মুখে মুখে গান রচনা করেছেন এবং তাঁর শিষ্যরা সেইগানগুলো লিপিবদ্ধ করেছিলেন। পরবর্তীকালে দুইবাংলার সংকলকগণ তাঁদের গ্রন্থে গানগুলোকে একত্রে সংকলিত করেছেন।

পাঠ্য গানটি বিভিন্ন সময় নানা ব্যক্তির বাউল গানের সংকলক গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ‘বাংলার বাউল ও বাউলগান’ গ্রন্থে এবং ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ‘বাংলার বাউল ও বাউলগান’ গ্রন্থে এবং ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত ড. মতিলাল দাস এবং পীযূষকান্তি মহাপাত্র সম্পাদিত ‘লালনগীতিকা’ গ্রন্থের ৩৯১নং পদ হিসাবে সংকলিত হয়েছে। ‘লালন গীতিকা’ গ্রন্থ থেকে পদটি সংগৃহীত হয়েছে।

৫। “মানুষ ভজনে সোনার মানুষ হবি।”-অংশটির উৎস নির্ণয় করো। কে, কেন একথা বলেছেন?

আলোচ্য অংশটি বাউলসাধক কবি লালন শাহের রচনা ‘লালন শাহ ফকিরের গান’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। বাউল কবি লালন শাহ জানিয়েছেন পরমাত্মা বা মনের মানুষের সান্নিধ্য বা সন্ধান লাভের জন্য সোনার মানুষ অর্থাৎ প্রকৃত মানবিকগুণসম্পন্ন মানুষ হতে হবে। আর এই প্রকৃত মানুষ হতে হলে প্রয়োজন মানুষের সাধনা, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা। তাই তিনি মানব সাধনার * মাধ্যমে সোনার মানুষ বা প্রকৃত মানুষ হওয়ার কথা বলেছেন।

৬। “মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি”- কোন্ কবির কোন্ কবিতার অংশ এটি? ‘ভজলে’ এবং ‘সোনারমানুষ’ শব্দের অর্থ কী?

বাউল কবি লালন শাহের ‘লালন শাহ্ ফকিরের গান’ কবিতার অংশ এটি। ‘ভজলে’ শব্দের অর্থ ভজনা বা সাধনা বা আরাধনা করা এবং ‘সোনার মানুষ’ শব্দের অর্থ শ্রেষ্ঠ বা মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষ।

৭। “মানুষ ছেড়ে ক্ষ্যাপারে তুই মূল হারাবি।।”-কবি কাকে, কেন ক্ষ্যাপা বলেছেন? মূল হারাবি বলতে কী বলেছেন?

বাউল কবি লালন শাহ ঈশ্বর পরমাত্মার প্রেমে বা সন্ধানে মাতোয়ারা বা উন্মাদ মানুষকে ‘ক্ষ্যাপা’ বলেছেন। কারণ ‘বাউল’ শব্দের অর্থ বাতুল বা পাগল। বাউলরা নিজেদের ঈশ্বর প্রেমে মাতোয়ারা বা পাগল বলে থাকেন।

‘মূল হারাবি’ বলতে কবি বলেছেন প্রকৃত মানুষের মনুষ্যত্ব থেকে দূরে চলে যাওয়া বা নষ্ট হওয়ার কথা বলেছেন। কেননা বাউল সম্প্রদায়ের মানুষেরা মনে করেন মানব হৃদয় মন্দিরে পরমাত্মা বা মনের মানুষ অবস্থান করেন। তাই মানুষকে শ্রদ্ধা, ভক্তি, ভালোবাসার মাধ্যমে, মানব সেবার মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক গভীর হয়, মানুষ প্রকৃত মানুষ বা সোনার মানুষে পরিণত হয়ে পরমাত্মা বা মনের মানুষের সন্ধান পেয়ে এক মহিমান্বিত আধ্যাত্মিক স্তরে উত্তীর্ণ হয়।

৮। “দ্বি-দলের মৃণালে…”-‘দ্বি-দল’ ও ‘মৃণাল’ কী এবং কোন্ অর্থে কবি ব্যবহার করেছেন?

‘দ্বি-দলে’ শব্দের অর্থ দুই দল বা পাপড়ি। কিন্তু কবিতায় বাউলদের দেহতত্ত্ববাদের প্রসঙ্গে শব্দটি ব্যবহৃত। বাউলরা বলেন মানবদেহে যে সাতটি চক্র আছে, তাঁর একটি চক্র হল দ্বি-দল বা আজ্ঞা চক্র-যা মানুষের দুই ভু-মাঝে কপালে অবস্থিত। আর ‘মৃণাল’ হল পদ্মের বৃন্ত বা লম্বা নাল। মানবদেহে যে সুষুম্না নাড়ি আছে, সেটি মানব দেহরস সাতটি চক্রকে একত্রে যোগসূত্র স্থাপন করে রাখে। একেই বাউল সাধক লালন ফকির ‘মৃণাল’ বলে অবিহিত করেছেন।

৯। “সোনার মানুষ উজ্জ্বলে”- কবি কোথায়, কীভাবে সোনার মানুষের উজ্জ্বল উপস্থিতি কথা বলেছেন?

আলোচ্য পঙ্ক্তিটি বাউল কবি লালন ফকিরের লালন শাহ ফকিরের গান’ নামক কবিতার অন্তর্গত। কবি সোনার মানুষ বলতে প্রকৃত মানুষের কথা বলেছেন। দ্বি-দলে বা অজ্ঞানচক্রে প্রকৃত মানুষ বা সোনার মানুষের পরমাত্মা বা মনের মানুষ অবস্থান করে। এটি বাউলদের একটি গুহ্যতত্ত্ব। মানবদেহের ভিতরে থাকা সুষুম্ননাড়ি মস্তিষ্কে পদ্মরূপে সহস্রার রূপে বিরাজমান। সহস্রারের ঠিক নীচে কপালে দুই ভু-মাঝে দ্বিদল বা অজ্ঞানচক্র। সোনার মানুষ বা প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারলে পরমাত্মা বা মনের মানুষ দ্বিদলে অবস্থান করেন। তার ফলে মানুষ এক মহিমান্বিত আধ্যাত্মিক স্তরে উত্তীর্ণ হয়।

১০। “মানুষ-গুরু কৃপা হ’লে/জানতে পারি।।”-তাৎপর্য আলোচনা করো।

আলোচ্য পঙ্ক্তিটির মধ্য দিয়ে বাউল ধর্ম-দর্শনতত্ত্ব প্রকাশিত। প্রকৃত মানুষ হওয়া আত্মার মধ্যে পরমাত্মার সন্ধান দেহ থেকে দেহাতীতভাবে পরমাত্মার সাধনা প্রভৃতি জন্য প্রয়োজন প্রকৃত গুরু। যাঁরা সাহায্য, আর্শীবাদে এবং দেখানো পথে এসব কিছু সম্ভব হয় এবং মানুষ এক মহিমান্বিত আধ্যাত্মিক স্তরে উত্তীর্ণ হয়।

১১। ‘… দেখা যেমন আলেকলতা’-আলেকলতা কী? কবি আলেকলতার প্রসঙ্গ এনে কী বলতে চেয়েছেন?

আলেকলতা হল স্বর্ণলতা বা শ্যামলতা। সরু সুতোর মতো দীর্ঘায়িত লতা-যা গাছের উপর অবস্থান করে। বাউল কবি লালন শাহ বলতে চেয়েছেন গাছের উপর যেমন আলেকলতা অবস্থান করে দীর্ঘদিন উভয়ই বেঁচে থাকে ঠিক তেমনি এই পৃথিবীর মানুষ এককভাবে বাঁচতে পারে না। মানুষ মানুষের সঙ্গে একে অপরের উপর নির্ভরশীল হয়ে, সুসম্পর্ক বজায় রেখে প্রকৃত মানুষ হয়ে এবং পরমাত্মার সন্ধান লাভ করে।

১২। “জেনে শুনে মুড়াও মাথা/ জাতে তরবি।।”-‘মুড়াও মাথা’ ও ‘জাতে তরবি’ শব্দদুটির অর্থ কী? অংশটিতে কবি কী বলতে চেয়েছেন?

‘মুড়াও মাথা’-র অর্থ মাথা মুড়োনো বা মস্তক মুণ্ডন বা ন্যাড়া করা। আর ‘জাতে তরবি’ অর্থ হল উচ্চ জায়গায় পৌঁছোনো বা উচ্চ সমাজে স্থান পাওয়া।

বাউল কবি লালন অংশটিতে বাউল ধর্ম-দর্শনের প্রসঙ্গ তুলে ধরছেন। তিনি জানিয়েছেন আমরা সাধারণ মানুষ, আমাদের আরাধ্য দেবতা, ঈশ্বর, পরমাত্মা এবং বাউলরা যাকে মনের মানুষ বলে থাকেন, তাঁকে লাভ করার জন্য বিভিন্ন লৌকিক নিয়ম-আচার পালন করে থাকি। কবি উদাহরণ হিসেবে দেখিয়েছেন পরমাত্মার সন্ধানে আমাদের দেশে সন্ন্যাসগ্রহণ প্রভৃতি উপাচারের পূর্বে মস্তক মুণ্ডন করার প্রসঙ্গ। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন প্রকৃত অর্থে পরমাত্মার সান্নিধ্যলাভের জন্য প্রয়োজন মানুষভজনা। মানবসেবার মধ্য দিয়েই সেই পরমাত্মা বা মনের মানুষের সন্ধান পেয়ে মানুষ এক মহিমান্বিত আধ্যাত্মিক স্তরে পৌঁছে যায়।

১৩। “পড়বি রে তুই শুন্যকার”-কে, কাকে একথা বলেছেন? এরূপ বলার কারণ কী?

আলোচ্য পঙ্ক্তিটি বাউল কবি লালন ফকির মানুষকে বিশেষ করে ঈশ্বর, পরমাত্মা বা মনের মানুষের সন্ধানকারী মানুষের উদ্দেশ্যে বলেছেন।

ঈশ্বর বা পরমাত্মা বা মনের মানুষ সন্ধানী সাধারণ মানুষ পরমাত্মা বা মনের মানুষের সান্নিধ্যলাভের জন্য বিভিন্ন ধর্মীয় আচার বিচার, করে থাকে। মানুষের ভজনা, মানবসেবাকে তারা সম্পূর্ণ কত উপেক্ষা করে। কিন্তু মানুষের মধ্যেই রয়েছে স্বয়ং ঈশ্বর পরমাত্মা। মানব হৃদয়মন্দিরে পরমাত্মা বা মনের মানুষ সর্বদা বিরাজমান। তাই কবি জানিয়েছেন জীবসেবাই শিবসেবা অর্থাৎ মানুষ ভজনা ছাড়া পরমাত্মাকে লাভ করা সম্ভব নয়-মানুষ ছাড়া জগৎসংসার শূন্য, বৃথা।

১৪। “লালন বলে, মানুষ-আকার/ভজনের তরবি।।”-পঙ্ক্তিটির উৎস নির্দেশ করো। লালন কে এবং কেন কবিতার মধ্যে নামটি ব্যবহৃত হয়েছে?

আলোচ্য পঙ্ক্তিটি কবি লালন শাহের ‘লালন শাহ ফকিরের গান’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। লালন হলেন ঊনবিংশ শতকের শ্রেষ্ঠ ও জনপ্রিয় বাউল সাধক কবি। তিনি বাউল ধর্মে দীক্ষাগ্রহণ করে সহজ-সরল ভাষায় সাধারণ বাঙালির হৃদয়স্পর্শী বহু বাউলগান মুখে মুখে সৃষ্টি করেছিলেন। তবে তিনি নিজে একটিও গান বা পদ লিখে যাননি-তাঁর শিষ্যরা বিভিন্ন সময়ে সেগুলো লিপিবদ্ধ করেন। মধ্যযুগে প্রায় সমস্ত কাব্যসাহিত্যে

পদকর্তা বা কবিদের নাম বা পরিচয় পদ কবিতার সূচনার প্রথমে দেওয়া হত না; কবিতা বা পদের শেষের পঙ্ক্তিতে ব্যবহার করা হত। এক্ষেত্রে পদকর্তা লালন শাহ সেই রীতি অনুসরণ করেছেন।

১৫। “মানুষ-আকার/ভজলে তরবি”-কে, কাকে বা কাদের কী ভজনার কথা বলেছেন? অংশটি মূল বক্তব্য কী?

আলোচ্য পঙ্ক্তিটিকে মরমি কবি লালন, বাউল মানুষকে বিশেষ করে পরমাত্মা বা মনের মানুষ সন্ধানী মানুষকে মানবসেবা বা মানবভজনা, সাধনার কথা বলেছেন।

কবি লালন শাহ জানিয়েছেন পরমাত্মা বা ঈশ্বর বা মনের মানুষের সান্নিধ্যলাভ করতে মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বা দূরে চলে গিয়ে শুধু ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করলে পরমাত্মা বা ঈশ্বর বা মনের মানুষের সান্নিধ্যলাভ করা যায় না। পরমাত্মা বা মনের মানুষের সান্নিধ্যের জন্য দরকার মানুষের প্রতি সেবা, শ্রদ্ধা, ভক্তি-মানুষের ভজনা বা মানবসাধনা। আর তার বলেই মানবিক গুণসম্পন্ন প্রকৃত মানুষ হয়ে পরমাত্মার সান্নিধ্যলাভ করে সেই মানুষ উত্তীর্ণ হয় এক মহিমান্বিত আধ্যাত্মিক জগতে।

১৬। ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি।’-কবি কীভাবে এবং কেন মানুষ ভজনার কথা বলেছেন?

লালন শাহ ছিলেন বাউলসাধক কবি। বাউলদের আরাধ্য ঈশ্বর বা দেবতা হলেন নিরাকার মনের মানুষ-যিনি মানুষের হৃদয় মন্দিরে অবস্থান করেন। তাই কবি বলেছেন মানুষ ভজলে অর্থাৎ মানুষকে সেবা, ভক্তি, শ্রদ্ধা, করলে পরমাত্মা বা মনের মানুষের সান্নিধ্যলাভ করা যায়।

১৭। ‘… সোনার মানুষ হবি।’- ‘সোনার মানুষ’ বলতে কবি বোঝাতে কী চেয়েছেন?

সোনা মূলবান ধাতু। ‘সোনার মানুষ’ বলতে শ্রেষ্ঠ, প্রকৃত উচ্চশ্রেণির মানুষের কথা বলেছেন কবি। সাধারণ মানুষ মনের মানুষ বা পরমাত্মার সান্নিধ্যলাভের জন্য সর্বদা ব্যাকুল হলেও সফল হতে পারে না। কেননা পরমাত্মা বা মনের মানুষের সান্নিধ্য পেতে দরকার মানব ভজনা বা মানুষের সাধনা। আর এই মানব সাধনা বা ভজনায় সকল হলেই মানুষ সোনার মানুষ বা প্রকৃত মানুষের স্তরে উত্তীর্ণ হয়।

১৮। বাউলসাধনার মূলকথা বা মূলতত্ত্ব কী?

বাউলরা নিরাকার ঈশ্বর, পরমাত্মা বা মনের মানুষে বিশ্বাসী। তাঁরা মনে করেন মানব হৃদয়মন্দিরে সেই পরমাত্মা বা ঈশ্বর বিরাজ করেন। আর এই মনের মানুষের সান্নিধ্যলাভ করতে প্রয়োজন মানবসেবা বা মানুষের সাধনা এবং গুরু কৃপা ও পথ অনুস্মরণ করা। তাই তাদের সাধনা দেহ থেকে দেহাতীত আধ্যাত্ম জ্ঞানলাভের মাধ্যমে পরমাত্মা বা মনের মানুষের সন্ধান পাওয়া।

১৯। পাঠ্য পদ বা কবিতাটির নামকরণ ‘লালন শাহ ফকিরের গান’-এরকম কেন?

বাউল সাধক কবি লালন শাহ বিভিন্ন সময় মুখে মুখে গান রচনা করেছেন-একটি গানও তিনি লিখে যাননি। তাঁর গান বা পদগুলো তাঁর শিষ্যরা নামকরণ ছাড়াই লিপিবদ্ধ করেছিলেন। যেহেতু পদটি লালন বাউলের রচনা তাই পদকর্তার নামানুসারে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাসংসদের সংকলকগণ পাঠ্য তালিকায় এই নামকরণ দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

২০। ‘লালন শাহ ফকিরের গান’ পদটি বা কবিতাটির মূল বক্তব্য কী? পদটি কোন্ শ্রেণিভুক্ত?

মানবভজনা বা মানবসেবার মাধ্যমে সোনার মানুষ বা প্রকৃত মানুষ হয়ে পরমাত্মা বা মনের মানুষের সঙ্গে মিলিত হওয়ার কথাই মূলত বলা হয়েছে। আলোচ্য বাউল সাধক কবি লালন শাহের ‘লালন শাহ ফকিরের গান’ কবিতাটি বাউল গীতিকা বা বাউল সংগীত শ্রেণিভুক্ত পদ।

আরও পড়ুন – ভাব সম্মিলন প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment