হরেকৃষ্ণবাবু ও ৩য় পুরুষ চরিত্র দুটি ‘আগুন’ নাটক অবলম্বনে আলোচনা করো

হরেকৃষ্ণবাবু ও ৩য় পুরুষ চরিত্র দুটি ‘আগুন’ নাটক অবলম্বনে আলোচনা করো।

হরেকৃষ্ণবাবু ও ৩য় পুরুষ চরিত্র দুটি 'আগুন' নাটক অবলম্বনে আলোচনা করো
হরেকৃষ্ণবাবু ও ৩য় পুরুষ চরিত্র দুটি ‘আগুন’ নাটক অবলম্বনে আলোচনা করো

বাংলা গণনাট্য আন্দোলনের অন্যতম প্রাণপুরুষ, নাট্যকার ও অভিনেতা বিজন ভট্টাচার্য। তাঁর নাটক যেন- ‘By the people, of the people, for the people!’। যারা এতদিন উপেক্ষিত, অবহেলিত ছিল, সেই সাধারণ মানুষ নিজেদের কথা বলার জন্য মঞ্চে উঠে এল। মননশীল নাট্যকার তাঁর সৃষ্ট ‘আগুন’ নাটকে মন্বন্তরপীড়িত বাংলার সাধারণ মানুষের বেদনা, জীবনসংগ্রাম এবং প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মাধ্যমে অধিকার অর্জনের লড়াইকে উদ্ভাসিত করেছেন। সেখানে ব্যক্তিচরিত্র নয়, সমষ্টি-চরিত্রের প্রাধান্য দেখা গেল, কিন্তু ব্যক্তি নায়কের মধ্যে প্রাধান্য লাভ করল গোষ্ঠীর প্রতি চিন্তা। এখানে সেরকম দুটি চরিত্র নিয়ে আমরা আলোচনা করব-

(ক) হরেকৃষ্ণবাবু

‘আগুন’ নাটকে চতুর্থ ও পঞ্চম দৃশ্যে হরেকৃষ্ণবাবুর উপস্থিতি লক্ষণীয়। তিনি সৎ, অনুভূতিপ্রবণ মানুষ। তার মধ্যে আছে মধ্যবিত্তের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। আছে অভাবী জীবনের অনিশ্চয়তা- “কিন্তু চাল, চালের কী হবে!’ আছে দেবতার প্রতি ঐকান্তিক নিষ্ঠা। তিনি সমাজসচেতন, বাস্তববাদী মানুষ। তাই সব খবরাখবর তার নখদর্পণে- ‘এত চাল গেল কোথায়।” তার মধ্যে আছে আপসকামী সত্তা। তাই চতুর্থ পুরুষকে সিভিকের সঙ্গে ঝগড়া না করে লাইনের পিছনে দাঁড়াতে বলেছে। আবার এর জন্য পরে তার কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমাও চেয়েছে। শেষ পর্যন্ত চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে, সংগঠিত হয়ে, সকলে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছে।

(খ) ৩য় পুরুষ

‘আগুন’ নাটকের পঞ্চম দৃশ্যে ৩য় পুরুষের উপস্থিতি লক্ষণীয়। প্রথম থেকেই সে সৎ, সাহসী, অনুভূতিপ্রবণ, বিবেকবান মানুষ। নির্ভীক, দুঃসাহসী এই মানুষটি প্রতিবাদে, প্রতিরোধে অচঞ্চল। তাই সিভিক গার্ড ৪র্থ পুরুষকে অন্যায়ভাবে প্রহার করলে সে গর্জে উঠেছে। দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ী কণ্ঠে উচ্চারণ করেছে- “চাল নিলে একজন আর আপনি অন্য একজনকে ধরে পিটে দিলেন! কেন, …।”

সহৃদয়ী, মানবিক এই মানুষটি শেষ পর্যন্ত চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে একতার মন্ত্রে দীক্ষিত করেছে-

“এখন বাঁচতে হবে। বাঁচতে হলে মিলিমিশে থাকতে হবে ব্যাস্।”

আরও পড়ুন – নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো

Leave a Comment