আদর্শবাদী তত্ত্ব কী? |
আদর্শবাদী তত্ত্ব
প্রচলিত সাধারণ ধারণা, বিশ্বাস, সামাজিক শৃঙ্খলা প্রভৃতিকে দুস্ত না করে, যে তত্ত্বের নির্মাণ ও ব্যবহার করা হয়, তাকে বলা হয় আদর্শবাদী তত্ত্ব। প্লেটোর The Republic’ গ্রন্থ, রুশোর সামাজিক চুক্তি প্রভৃতি মহান রচনাবলিতে আদর্শবাদী তত্বের উল্লেখযোগ্য আলোচনা পরিবেশিত হয়েছে।
Dogmatic বিশ্বাস
আদর্শবাদী তত্ত্বের গঠনকার্য কিছু ধারণা ও আদর্শকে সামনে রেখে পরিচালিত হয়। এই তত্ত্বের রূপকাররা একটা ‘dogmatic’ আরোপ করার চেষ্টা করেন। যুক্তিতর্ক ছাড়াই এঁদের সিদ্ধান্ত স্থির হয়। আদর্শবাদী তত্ত্ব-দার্শনিক তত্ত্বের প্রতি বিশেষভাবে অনুগত থাকে। কারণ এখানে ‘সত্য’ প্রতিষ্ঠার আগ্রহে অপরিসীম চিন্তা ও ধ্যানধারণা, মতপ্রকাশ সবই নীতিবোধ দ্বারা আচ্ছাদিত।
জ্ঞানের বিকাশ
নীতিমানবাচক ধারণায় জ্ঞানের বিকাশই বেশি। এক্ষেত্রে তত্ত্বগঠনের কারুকাজ, বিভিন্ন ভাবনার মধ্যে পারম্পর্য রক্ষা ও ‘মডেল’ উপস্থাপনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ কলাকৌশল লক্ষ করা যায়। এই শ্রেণির তাত্ত্বিকরা অতীতের রাজনৈতিক মূল্যবোধগুলিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন। নিছক জানার ও জ্ঞান অর্জনের এবং তত্ত্বের কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ পারদর্শিতা দেখিয়েছেন।
ফাঁকপূরণ
আদর্শবাদী তত্ত্ব বাস্তব মূল্যায়ন ও মূল্যবোধের মধ্যে পার্থক্য করতে গিয়ে রাষ্ট্রতত্ব নির্মাণের বিশ্বাসগত পরিপূর্ণতা, ধ্যানধারণার সত্যতা সংক্রান্ত বিচ্যুতিজনিত ফাঁকপূরণের চেষ্টা করেছে। এই শ্রেণির তাত্ত্বিকদের দক্ষতা হল মানবিক ও সামাজিক সমস্যাকে উপস্থিত করা এবং তার সমাধান করা। প্লেটো, অ্যারিস্টইল, ম্যাকিয়াভেলি, হবস, লক, রুশো, বেত্থাম, হেগেল এমনকি থমাস হিল গ্রিন পর্যন্ত চিন্তকদের চিন্তায় এই মূল্যই প্রতিষ্ঠিত।
মূল্যায়ন:
আদর্শবাদী তত্বের আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্রের আবির্ভাব, সরকার, শাসন ও রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস এবং প্রকৃতি, নাগরিক আইন ও অধিকার, রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের আনুগতা প্রভৃতি মূল্যবান তত্ত্বের সৃষ্টি হয়েছে।