সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতাগুলি কী

সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতাগুলি কী?
সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতাগুলি কী?

সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতা

সনাতন দৃষ্টিভঙ্গি একেবারে ত্রুটিমুক্ত নয়। বিভিন্ন দিক থেকে সনাতন দৃষ্টিভঙ্গিটি সমালোচিত হয়েছে। Roy C Macridis সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির কতকগুলি অসুবিধা তুলে ধরেছেন। সনাতন দৃষ্টিভঙ্গি উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরবর্তীকালে তা দুর্বল হয়ে পড়ে। এই দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতাগুলি হল-
প্রথমত, এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রবক্তাগণ যে রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বলেছেন, সেখানে নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গিই প্রতিফলিত। হয়েছে। অর্থাৎ, এই দৃষ্টিভঙ্গি একটি কল্পনাপ্রসূত দৃষ্টিভঙ্গি হলেও তাঁরা পৃথক ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থার কথাও বলেছেন। তাঁরা মূলত শ্রেণিস্বার্থকে বেশিমায়ায় গুরুত্ব দিয়েছেন।
দ্বিতীয়ত, সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির প্রবক্তাগণ তাদের আলোচনায় আন্তঃ সমাজবিজ্ঞানকেন্দ্রিক আলোচনাকে গুরুত্ব দেননি বলে তাঁদের আলোচনা সীমায়িত হয়ে পড়েছে। কোনো সমাজবিজ্ঞানকে তখনই ‘বিজ্ঞান’ বলা যাবে, যখন তা পারস্পরিক সম্পর্ক-নিরপেক্ষ হয়ে উঠবে। আলোচ্য দৃষ্টিভঙ্গিতে তা প্রাধান্য না পাওয়ায় আলোচনাটি হয়ে পড়েছে সংকীর্ণ ও একমুখী।
তৃতীয়ত, সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির প্রবক্তাগণ সমাজে স্থিতাবস্থাকে বজায় রাখার পক্ষে ওকালতি করেছেন। সমাজের যে যৌলিক পরিবর্তনেরও প্রয়োজন আছে, সেদিকে তাঁরা নজর দেননি। বরং বলা যায়, তা উপেক্ষিত হয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল একটি উদ্দেশ্যমূলক শাস্ত্র। কিন্তু বর্ণনাকে সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির প্রবত্তাগণ সেভাবে দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
চতুর্থত, সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির প্রবত্তাগণ তাদের আলোচনার প্রসার ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছেন। বলা যায়, তাঁদের আলোচনা জাতীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমায়িত ছিল, তা আন্তর্জাতিক দিক থেকে আলোচিত হয়নি। অথচ আন্তর্জাতিক রাজনীতিকে বাদ দিয়ে একটা সংকীর্ণ গতির মধ্যে আলোচনা করে তার সিদ্ধান্ত নেওয়া অবাস্তব।

উপসংহার: 

সনাতন দৃষ্টিভঙ্গি গতিশীল সামাজিক ব্যবস্থার চাহিদার দিকে লক্ষ করতে পারেনি। রাজনৈতিক আলোচনায় মানুষ তার সমাজবহির্ভূত কোনো ভূমিকা যে নিতে পারে না এবং তার সঙ্গে যে গতিময়তা সংযুক্ত, তা সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির প্রবত্তাগণ দেখাতে বার্থ হয়েছেন। এর ফলে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাজনিত কোনো আলোচনা তাঁরা করেননি বলে আলোচনা স্থিতিশীল হয়ে পড়েছে।

Leave a Comment