নবম শ্রেণি প্রশ্নবিচিত্রা উত্তর বিষয় ইতিহাস সেট ১৫

Rampurhat JL Vidyabhaban

নবম শ্রেণি প্রশ্নবিচিত্রা উত্তর বিষয় ইতিহাস সেট ১৫

1 (i) ট্রাফালগারের যুদ্ধ হয় ফ্রান্সের সঙ্গে (b) ইংল্যান্ডের। 
(ii) নেপোলিয়ন রাশিয়া অভিযান করেছিলেন (c) ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে। 
(iii) নেপোলিয়ন বিরোধী ‘জুন্টা’ গঠিত হয় – (d) স্পেনে।
(iv) কোড নেপোলিয়নে মোট ধারার সংখ্যা ছিল (a) ২২৮৭টি 
(v) উড়ন্ত মাকু আবিষ্কার করেন – (c) জন কে।
(vi) ‘দাস ক্যাপিটাল’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় (d) ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে।
(vii) ‘দ্বিশক্তি চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয় যাদের মধ্যে তারা হল (c) জার্মানি ও অস্ট্রিয়া।
(viii) সেরাজেভো – (b) বসনিয়ার অন্তর্গত।
(ix) রাশিয়ার সম্রাটদের বলা হত (a) জার।
(x) রুশ ভাষায় ‘নারদ’ কথার অর্থ হল – (c) জনগণ । –
(xi) স্টোলিপিন মন্ত্রী ছিলেন (b) দ্বিতীয় নিকোলাসের আমলে।
(xii) ‘ডুমা’– (a) রাশিয়ার প্রতিনিধি সভা। 
(xiii) প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি যে নামে পরিচিত ছিল তা হল (b) কেন্দ্ৰীয় শক্তি।
(xiv) মহামন্দাকালে জার্মান রাষ্ট্রপতি ছিলেন – (a) হিল্ডেনবুর্গ
(xv) স্পেনে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন – (c) ফ্রাঙ্কো।
(xvi) ‘অপারেশন টাইফুন’ হল জার্মানির (b) মস্কো আক্রমণের ঘটনা।
(xvii) ‘সর্বাত্মক যুদ্ধ’ বলা হয় – (b) প্রথম বিশ্বযুদ্ধকে। 
(xviii) ‘ব্লিজ ক্রিগ’ হল পোল্যান্ড আক্রমণকালে (b) জার্মান বিমানহানা।
(xix) ‘সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ’ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের (d) ২৪ অক্টোবর।
(xx) রোমেল ছিলেন – (b) জার্মান সেনাপতি।
(xxi) জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব ছিলেন – (a) এরিক ভুমন্ড
(xxii) জন্মলগ্নে জাতিসংঘের সদস্য সংখ্যা ছিল – (c) ৪২। 
(xxiii) জাতিপুঞ্জের স্থায়ী সদস্য নয় যে দেশটি – (d) জাপান।
(xxiv) ইয়াল্টা সম্মেলন হয়েছিল – (c) ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে।

বিভাগ-খ

উপবিভাগ : A
(i) কোড নেপোলিয়নের তিনটি ভাগ ছিল। সেগুলি হল— দেওয়ানি আইন, ফৌজদারি আইন এবং ও বাণিজ্যিক আইন।
(ii) সুয়েজ খাল উন্মুক্ত করা হয় ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে।
(iii) বিশ্বের প্রথম সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় রাশিয়ায়।
(iv) আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেয় ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে। 
(v) জাতিপুঞ্জের প্রথম মহাসচিব ছিলেন ট্রিগভি লি।
উপবিভাগ : B
(i) ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন ডাইরেক্টরি শাসনের উচ্ছেদ ঘটান। – সত্য ।
(ii) আফ্রিকা মহাদেশকে ‘অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ’ বলা হয়। – সত্য । 
(iii) মহামন্দার প্রভাব ইংল্যান্ডের ওপর পড়েনি। — মিথ্যা।
(iv) নাৎসিবাদের জনক ছিলেন মুসোলিনি। – মিথ্যা। 
(v) জাতিপুঞ্জের প্রথম অধিবেশনের সনদে ৫১টি দেশ স্বাক্ষর করেছিল। — সত্য।
উপবিভাগ : C
নামস্তম্ভের সঙ্গে ডানস্তম্ভের মিলকরণ :
(i) ফরাসি বাহিনী (c) গ্র্যান্ড আর্মি
(ii) চেম্বারলেন (d) তোষণনীতি
(iii) জাতিপুঞ্জের সদর দপ্তর (b) নিউ ইয়র্ক
(iv) আমেরিকা (a) ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি
উপবিভাগ : D
(i) ব্যাখ্যা – (a) এরা ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারত।
(ii) ব্যাখ্যা – (b) আমেরিকা মিত্রপক্ষে যোগ দেয়। –
(iii) ব্যাখ্যা – (c) বিরোধী শক্তির দুর্বলতার সুযোগে হিটলার জার্মানদের সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। 
(iv) ব্যাখ্যা (c) পৃথিবীর বৃহৎ অংশ জুড়ে ইংল্যান্ডের উপনিবেশ ছিল।
বিভাগ-গ
3 (i) Jaynagar Institution (HS)-এর 3. (iv) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(ii) Jhargram Banitirtha High School (HS)-এর 3. (iv)-এর উত্তরটি দ্যাখো।
(iii) Balurghat High School-এর 6. (iv) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(iv) ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে ত্রিশক্তি আঁতাত সম্পাদিত হয়েছিল।
(v) Bantra MSPC-High School-এর 3. (xi) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(vi) Dhupguri High School (HS)-এর 3. (ix) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(vii) Burdwan Raj Collegiate School-এর 3. (vi) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(viii) ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদের সাদৃশ্য : ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদের মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে সাদৃশ্য চোখে পড়ে। যেমন – ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদ উভয় মতবাদই ছিল গণতন্ত্র বিরোধী ও একনায়কতন্ত্রে বিশ্বাসী। উভয় মতবাদই ছিল সাম্রাজ্যবাদ, উগ্র জাতীয়তাবাদ ও রাষ্ট্রের চূড়ান্ত ক্ষমতায় বিশ্বাসী।
(ix) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পরে মার্কিন রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন গণতন্ত্র রক্ষা ও বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে যে চোদ্দো দফা শর্ত রচনা করেন, সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল— আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে হবে। উপকূল অঞ্চল সর্বদা সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠন করতে হবে। সর্বোপরি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বায়ত্তশাসনের সুযোগ দিতে হবে ইত্যাদি।
(x) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমায় এবং ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র যে দুটি আণবিক বোমা নিক্ষেপ করে, সেগুলি যথাক্রমে লিটল বয় ও ফ্যাট ম্যান নামে পরিচিত।
(xi) Kamarpukur RK Mission MP School-এর 3. (xii) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(xii) মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রদত্ত নমুনা প্রশ্নপত্রে -এর 3. (xii) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(xiii) Jadavpur Vidyapith-এর 3. (xi) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(xiv) Balurghat High School-এর 6. (xii) -এর উত্তরটি দ্যাখো ।
(xv) সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হল– আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করে পৃথিবী থেকে যুদ্ধের সম্ভাবনা দূর করা। সমস্ত জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও সমানাধিকার স্বীকার করে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সৌহার্দ্যস্থাপন। পৃথিবীর মানবজাতির অর্থনৈতিক, সামাজিক প্রভৃতি বিভিন্ন মানবিক সমস্যাবলির সমাধান করা। সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা। বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে

বিভাগ-ঘ

4 (i) Balurghat High School-এর 7. (iv) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(ii) Bankura Zilla School -এর 4. (iv) অথবা-এর উত্তরটি দ্যাখো।
(iii) প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির দায়িত্ব কতখানি তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ আছে। একদল বলেন, জার্মানিই দায়ী ছিল; অপরপক্ষ বলেন, জার্মানি একা দায়ী ছিল না।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির দায়িত্ব :
কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়মের বিদেশনীতি : কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়ম ছিলেন উগ্র সাম্রাজ্যবাদী শাসক। তিনি সাম্রাজ্য বিস্তার ও বিশ্ব রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের নীতি গ্রহণ করলে ইউরোপে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়।
জার্মানির উগ্র জাতীয়তাবাদ : জার্মানরা ছিল টিউটন। জাতির বংশধর। কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়ম বিশ্বে এই টিউটন জাতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করতে উদ্‌গ্রীব হয়ে উঠেছিলেন।
জার্মানির ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা : কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়মের আমলে শিল্পের ক্ষেত্রে জার্মানির ব্যাপক অগ্রগতি ঘটেছিল। ফলে শিল্পের জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ ও উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রির বাজারের প্রয়োজনে জার্মানি উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করতে উদ্‌গ্রীব হয়ে উঠেছিল। এই উপনিবেশ প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স প্রভৃতি রাষ্ট্রের সঙ্গে জার্মানি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে।
জার্মানির সামরিক শক্তি বৃদ্ধি : জার্মানি ইউরোপে সামরিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। ইউরোপের শ্রেষ্ঠ স্থলবাহিনী, দ্বিতীয় বৃহত্তম নৌবহর, শক্তিশালী বিমানবহর এবং আধুনিক মারণাস্ত্র জার্মানিকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে প্রতিষ্ঠিত হতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। এই সামরিক প্রতিযোগিতা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল।
জার্মানির শক্তিজোট গঠন : জার্মানি নিজের শক্তিবৃদ্ধি এবং ইউরোপের রাজনীতিতে ফ্রান্সকে নিঃসঙ্গ করার জন্য শক্তিজোট গঠন করে। অস্ট্রিয়া ও ইটালিকে নিয়ে জার্মানি ত্রিশক্তি মৈত্রী বা ট্রিপল অ্যালায়েন্স গঠন করে (১৮৮২ খ্রি)। রাশিয়ার সঙ্গেও জার্মানি রি-ইনসিওরেন্স চুক্তিতে (১৮৮৭ খ্রি) আবদ্ধ হয়। জার্মানির এই শক্তিজোটের বিরুদ্ধে ফ্রান্স, ইংল্যান্ড ও রাশিয়া ত্ৰিশক্তি আঁতাত নামে শক্তিজোট গঠন করে। ফলে ইউরোপ দুটি পরস্পরবিরোধী শক্তিশিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
বিরুদ্ধ মত : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জন্য জার্মানিকে দায়ী করা হলেও অন্যান্য দেশগুলির দায়িত্বও কম ছিল না। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের উগ্র জাতীয়তাবাদ এবং সেরাজেভো ঘটনার জন্য সার্বিয়া-অস্ট্রিয়ার বিরোধ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জন্য বিশেষভাবে দায়ী ছিল।
পরিশেষে বলা যায়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জন্য জার্মানি দায়ী ছিল এ কথা অস্বীকার করা যায় না। তবে জার্মানি একাই দায়ী এ কথা বলাও যুক্তিযুক্ত নয়।
(iv) Panskura BB High School-এর 4. (v)-এর উত্তরটি দ্যাখো।
(v) Chakdaha Bapuji Balika Vidyamandir-এর 4. (x) – এর উত্তরটি দ্যাখো।
(vi) Barrackpore Govt High School -এর 4. (vi) -এর উত্তরটি দ্যাখো।
(vii) Barrackpore Govt High School -এর 4. (vii) -এর উত্তরটি দ্যাখো।

বিভাগ-ঙ

5 (i) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণসমূহ : প্রথম বিশ্বযুদ্ধ আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। ইতিপূর্বে এত ব্যাপক, ভয়াবহ সর্বগ্রাসী যুদ্ধ আর সংঘটিত হয়নি। বস্তুত ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দের ইউরোপের বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক সংঘাত, উপনিবেশ গঠনের জন্য প্রতিযোগিতা, সামরিক প্রস্তুতি, উগ্র জাতীয়তাবাদ যে ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি করেছিল তা পরিণতি লাভ করেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধে। এই যুদ্ধের কারণগুলি হল
উগ্র জাতীয়তাবাদ : উনিশ শতকের শেষ ও বিশ শতকের প্রথম দিকে ইউরোপে বিভিন্ন জাতির মধ্যে এক ধরনের জাতি বিদ্বেষ ও জাতিবৈরিতা তৈরি হয়। প্রায় প্রত্যেকটি জাতিই অপরাপর দেশ ও জাতি থেকে অধিক সম্মান ও গৌরব দাবি করতে শুরু করে। আর এই জাতিগত বৈরিতা ইউরোপে সংঘর্ষের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল।
অতৃপ্ত জাতীয়তাবাদ : অতৃপ্ত জাতীয়তাবাদ প্রথম বিশ্বযুদ্ধকে ত্বরান্বিত করেছিল। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে সেডানের যুদ্ধে জার্মানির আলসাস ও লোরেন দখল, ইটালির ট্রেনটিনো ও ট্রিয়েস্ট-এর ওপর অস্ট্রিয়ার কর্তৃত্ব স্থাপন, বলকান জাতীয়তাবাদ ও সর্বস্লাভ আন্দোলন সমগ্র ইউরোপকে অগ্নিগর্ভ করে তোলে।
উপনিবেশের জন্য সংঘাত : শিল্পবিপ্লবের পরিণতিতে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কারণ। শিল্পবিপ্লবের ফলে সঞ্চিত মূলধন বিদেশে বিনিয়োগের যে প্রচেষ্টা দেখা যায় তার দরুন অর্থনৈতিক শোষণ ও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বৃদ্ধি পায়। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে উপনিবেশের জন্য লড়াই নগ্নরূপ ধারণ করে।
সামরিক প্রতিযোগিতা : উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ইউরোপীয় শক্তিবর্গের সামরিক শক্তিবৃদ্ধির প্রতিযোগিতা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পটভূমি রচনায় সবিশেষ ভূমিকা নিয়েছিল। আত্মরক্ষার তাগিদেই হোক কিংবা সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থের প্রয়োজনেই হোক ইউরোপীয় দেশগুলির সমরসজ্জা ইউরোপকে এক বারুদস্তূপে পরিণত করেছিল।
পরস্পরবিরোধী শক্তিজোট গঠন : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ইউরোপীয় দেশগুলি পরস্পরবিরোধী শক্তিজোটে বিভাজিত হয়ে পড়েছিল। একদিকে জার্মানি, ইটালি ও অস্ট্রিয়ার সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল ট্রিপল অ্যালায়েন্স এবং অন্যদিকে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়ার মধ্যে গঠিত হয়েছিল ট্রিপল আঁতাত। এই দুই শক্তিজোটের মধ্যেকার টানাপোড়েন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল।
আন্তর্জাতিক সংকট : ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও নতুন শক্তি বিন্যাসের পাশাপাশি এই সময় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একাধিক সংকট সৃষ্টি হয়। এগুলির মধ্যে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের মরক্কো সংকট, ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের আগাদির সংকট, ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের বলকান সংকট ছিল সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই সংকটগুলি ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মধ্যেকার সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছিল।
সংবাদপত্রের ভূমিকা : প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার ক্ষেত্রে সংবাদপত্রগুলির ভূমিকাকেও অস্বীকার করা যায় না। কেননা পীত সাংবাদিকতা তথা মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন বিভিন্ন দেশের মধ্যে সন্দেহ, ভয়, ঘৃণা ও প্রতিশোধমূলক মনোভাব তৈরি করেছিল।
আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের অনুপস্থিতি : সমসাময়িক সময়পর্বে ইউরোপ যখন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল তখন আন্তর্জাতিক শান্তি বজায় রাখার মতো নির্ভরযোগ্য কোনো প্রতিষ্ঠান উপস্থিত ছিল না। ফলে যে-কোনো সামান্য ঘটনা থেকেই যুদ্ধ সৃষ্টির সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে গিয়েছিল।
প্রত্যক্ষ কারণ : এমতাবস্থায় ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ২৮ জুন অস্ট্রিয়ার উত্তরাধিকারী যুবরাজ ফার্দিনান্দ সস্ত্রীক বসনিয়ার রাজধানী সেরাজেভো পরিদর্শনে এলে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী ‘ব্ল্যাক হ্যান্ড’-এর সদস্য গ্যাভরিলো প্রিন্সিপ কর্তৃক নিহত হন। অস্ট্রিয়া এজন্য সার্বিয়াকে দায়ী করে কতকগুলি শর্ত সংবলিত দাবিপত্র প্রেরণ করে। সার্বিয়া এই দাবিপত্রের কিছু শর্ত মেনে নিলেও সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণকারী দাবির বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বানের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু অস্ট্রিয়া তা অগ্রাহ্য করে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে ২৮ জুলাই সার্বিয়া আক্রমণ করলে শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ।
(ii) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৮ জুন মিত্রশক্তি ও তার সহযোগীদের সঙ্গে জার্মানির ভার্সাই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আসলে বিজয়ী মিত্রপক্ষ জার্মানিকে ভার্সাই চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য করেছিল। সেই অর্থে ভার্সাই চুক্তি ছিল পরাজিত জার্মানির ওপর আরোপিত চুক্তি (Dictated peace)। তাই একে জবরদস্তিমূলক সন্ধি বলা হয়। বিশালাকার এই চুক্তিপত্রকে চারভাগে ভাগ করা যায় – ভৌগোলিক শর্তাবলি, ও সামরিক শর্তাবলি, ও অর্থনৈতিক শর্তাবলি এবং ও রাজনৈতিক শর্তাবলি।
ভৌগোলিক শর্ত : ভার্সাই সন্ধির ভৌগোলিক শর্তানুযায়ী স্থির হয় যে, জার্মানি ফ্রান্সকে আলসাস ও লোরেন এবং বেলজিয়ামকে ইউপেন, ম্যালমেডি এবং মরেসনেট প্রদান করবে। স্লেজউইগ অঞ্চলকে দু-ভাগে ভাগ করা হয়— উত্তর স্লেজউইগ ডেনমার্ককে এবং দক্ষিণ স্লেজউইগ জার্মানিকে প্রদান করা হয়। জার্মানিকেও বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। জার্মানির আপার সাইলেসিয়ার একটি অংশ চেকোশ্লোভাকিয়াকে এবং পূর্ব সীমান্তের পোজেন এবং পশ্চিম প্রাশিয়া অঞ্চল পোল্যান্ডকে প্রদান করা হয়। জার্মানির ডানজিগকে উন্মুক্ত শহর’ (Free City) বলে ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া জার্মানির দূরপ্রাচ্যের উপনিবেশগুলি জাপানকে দেওয়া হয়। এইভাবে ভার্সাই চুক্তির ফলে জার্মানি তার মোট ভূখণ্ডের অংশ হারায়।
সামরিক শর্ত : জার্মানির সামরিক শক্তিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং ভবিষ্যতে তার উত্থানের সম্ভাবনাকে নির্মূল করার উদ্দেশ্যে তার ওপর বেশ কিছু কঠোর সামরিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরোপিত হয়। যেমন – জার্মানির জল, স্থল ও বিমানবাহিনীকে ভেঙে দেওয়া হয়। জার্মানির সৈন্যসংখ্যা কমিয়ে এক লক্ষ করা হয়। জার্মানির যুদ্ধজাহাজগুলি ইংল্যান্ডকে প্রদান করা হয়। রাইন নদীর পশ্চিম তীরস্থ ত্রিশ মাইল ব্যাপী এলাকায় জার্মান সামরিক ঘাঁটি ও দুর্গগুলি ভেঙে ফেলা হয়। ও জার্মান সেনাপতিদের বরখাস্ত করা হয়।
অর্থনৈতিক শর্ত : ভার্সাই সন্ধিতে জার্মানির ওপর বেশ কিছু অর্থনৈতিক শর্ত আরোপ করা হয়। যেমন— . যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসেবে জার্মানির ওপর ৬৬০ কোটি পাউন্ড অর্থের বোঝা চাপানো হয়। জার্মানির অধিকাংশ বাণিজ্য বন্দর ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সকে প্রদান করা হয়। জার্মানির কয়লাসমৃদ্ধ সার অঞ্চলটি ফ্রান্সের তথা আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণাধীনে রাখা হয়। ফ্রান্স, ইটালি, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ প্রভৃতি রাষ্ট্রকে বাধ্যতামূলকভাবে লোহা, কাঠ, রবার ইত্যাদি জোগান দেওয়ার দায়িত্ব জার্মানিকে দেওয়া হয়। মিত্রপক্ষকে তার চাহিদামতো রেলইঞ্জিন ও মোটরগাড়ি সরবরাহ করতে জার্মানি বাধ্য থাকবে— এ কথা বলা হয়। জার্মানির বাজারে মিত্রপক্ষের পণ্য বিক্রিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। জার্মানির কয়েকটি জলপথ বিশেষ করে রাইন নদীটিকে আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণে আনা হয় ।
রাজনৈতিক শর্ত : ভার্সাই সন্ধিতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জন্য জার্মানিকে দায়ী করা হয়। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়মকে অভিযুক্ত করে তাঁর বিচারের ব্যবস্থা করা হয়। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন (League of Nations বা জাতিসংঘ) প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়। পোল্যান্ড, বেলজিয়াম, যুগোশ্লাভিয়া ও চেকোশ্লোভাকিয়ার স্বাধীনতা স্বীকৃত হয়।
এইভাবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের ফলে জার্মানির ওপর ভার্সাই সন্ধি আরোপের মাধ্যমে বিজয়ীপক্ষ জার্মানিকে দুর্বল করার মধ্য দিয়ে নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থ চরিতার্থ করেছিল। ঐতিহাসিক ই এইচ কার বলেছেন, ভার্সাই সন্ধির মধ্যেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীজ নিহিত ছিল।
সমালোচনা : জার্মান ঐতিহাসিকরা এই সন্ধিকে ‘একতরফা ও জবরদস্তিমূলক সন্ধি’ নামে অভিহিত করেছেন। এই সন্ধিতে ন্যায়নীতি সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছিল। যুদ্ধের জন্য কমবেশি সমস্ত দেশই দায়ী থাকলেও জার্মানিকে সম্পূর্ণভাবে দায়ী করা হয়। জার্মানির ওপর কিছু অবাস্তব অর্থনৈতিক শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হয় যা পূরণ করার ক্ষমতা তার ছিল না। জার্মানি থেকে জার্মান অধ্যুষিত বহু অঞ্চলকে কেড়ে নিয়ে প্রতিবেশী অ-জার্মান রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করে জার্মান জাতীয়তাবাদকে উপেক্ষা করা হয়। এককথায় ভার্সাই সন্ধির মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীজ নিহিত ছিল।
(iii) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ :
অক্ষশক্তি জোট : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইটালিতে ফ্যাসিবাদ ও জার্মানিতে নাৎসিবাদ সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই দুই দেশের মধ্যে ‘রোম-বার্লিন অক্ষচুক্তি’ ও “অ্যান্টি-কমিন্টার্ন চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয় (১৯৩৬ খ্রি)। জাপান এই জোটে যোগ দিলে ‘রোম-বার্লিন-টোকিও’ জোট বা ‘অক্ষশক্তি জোট গড়ে ওঠে (১৯৩৭ খ্রি) অন্যদিকে গণতান্ত্রিক দেশ ইংল্যান্ডও ফ্রান্সের মিত্রজোটে আবদ্ধ হয়েছিল। এই পরস্পরবিরোধী শক্তিজোট যুদ্ধকে ত্বরান্বিত করে তুলেছিল।
পোলিশ করিডোর : জার্মান ফ্যুয়েরার হিটলার অস্ট্রিয়া, চেকোশ্লোভাকিয়া দখল করে পোল্যান্ডের কাছে ডানজিগ যাওয়ার জন্য সংযোগপথ বা পোলিশ করিডোর দাবি করেন। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের পরামর্শে পোল্যান্ড হিটলারের দাবি অগ্রাহ্য করে।
হিটলারের পোল্যান্ড আক্রমণ : পোল্যান্ডের এই আচরণের প্রতিক্রিয়ায় হিটলার পোল্যান্ড আক্রমণ করেন (১ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৯ খ্রি)। পূর্ব প্রতিশ্রুতিমতো ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স পোল্যান্ডকে সমর্থন জানায়। জার্মানির বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড ৩ সেপ্টেম্বর এবং ফ্রান্স ৪ সেপ্টেম্বর (১৯৩৯ খ্রি) যুদ্ধ ঘোষণা করে। এইভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয় ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছিল সর্বগ্রাসী ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, যা ইতিপূর্বে সংঘটিত হয়নি। ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ছয় বছর এই যুদ্ধ স্থায়ী হয়েছিল। পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশ প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও বিভিন্ন রাষ্ট্রের পারস্পরিক সম্পর্কে প্রভাব পড়েছিল।
ভয়াবহ ধ্বংসলীলা : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিশ্বের সবদেশে থাবা বসায়। ধ্বংসাত্মক দিক থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ অপেক্ষা আরও ভয়াবহ। এই যুদ্ধে ৪ কোটি মানুষ নিহত হয়। এর অর্ধেক ছিল রাশিয়ান। ২.১ কোটি মানুষ গৃহহারা হয়। বহু মানুষকে দাস হিসেবে জার্মানিতে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেককে বন্দি শিবিরে আটক রাখা হয়। জার্মানি, রাশিয়া, ফ্রান্স, ইটালি, জাপান প্রভৃতি দেশের বৃহৎ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
ঠান্ডা লড়াই-এর শুরু : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানে পুঁজিবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সাম্যবাদী রাশিয়ার মধ্যে এক আদর্শগত সংঘাত দেখা দেয়, যা ঠান্ডা লড়াই (Cold War) নামে পরিচিত। সোভিয়েত রাশিয়া পূর্ব ইউরোপে পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি, আলবেনিয়া, চেকোশ্লোভাকিয়া, যুগোশ্লাভিয়া প্রভৃতি দেশকে নিয়ে ‘সোভিয়েত বলয়’ সৃষ্টি করে। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ট্রুম্যান নীতি, কেন্নানের বেষ্টনী নীতি ও মার্শাল পরিকল্পনা ঘোষণা করে নিজের আধিপত্য বিস্তারে উদ্যোগী হয়।
স্বাধীন রাষ্ট্রের উৎপত্তি : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার উপনিবেশগুলিতে জোরদার স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয় এবং একে একে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, ইন্দোচিন প্রভৃতি দেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।
সব জাতিপুঞ্জের প্রতিষ্ঠা : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে মূলত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল, মার্কিন রাষ্ট্রপতি রুজভেল্ট ও রুশ প্রধান স্ট্যালিনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ (United Nations Organisation) প্রতিষ্ঠিত হয় (২৪/১০/১৯৪৫)।
জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশগুলি জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন গড়ে তোলে। এই দেশগুলি মার্কিন নেতৃত্বাধীন ধনতন্ত্রী জোট ও রুশ নিয়ন্ত্রিত সাম্যবাদী জোটের বাইরে ছিল। তাই এর নাম জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, মিশরের রাষ্ট্রপতি কর্নেল নাসের, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি ড. সুকর্ণ এবং যুগোশ্লাভিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান মার্শাল টিটো জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রধান প্রধান নেতা ছিলেন।

Leave a Comment