উদ্দিষ্ট কবি
সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘পঁচিশে বৈশাখ’ রচনার, প্রশ্নোধৃতাংশে ‘কবি’ বলতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথাই বলেছেন।
বিশ্বকবি রূপে রবীন্দ্রনাথ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একাধারে বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতকার, চিত্রশিল্পী, নাট্যকার, ছোটোগল্পকার, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক। এককথায় বহুমুখী প্রতিভার সমন্বয় ঘটেছিল তাঁর বর্ণময় দীর্ঘ কর্মজীবনে। তবুও তাঁর কবিপরিচিতিই তাঁকে বিশ্ববরেণ্য করে তুলেছিল আর তাই রবীন্দ্রনাথকে ভূষিত করা হয়েছিল ‘বিশ্বকবি’ বা ‘কবিগুরু’ নামে।
রবীন্দ্রনাথের কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৫২টি। ভাবগভীর, গীতিধর্মিতা, চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, ঐতিহ্যপ্রীতি, রোমান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও বাস্তব চেতনা, প্রগতিচেতনা তাঁর কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য। বিশ্বকবির শিল্পনৈপুণ্যের সর্বোচ্চ প্রতিভার দৃষ্টান্ত ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্য, যার জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান। রবীন্দ্রনাথের প্রায় ষাট বছরের কবি জীবনের সূত্রপাত ঘটেছিল ১৮৭৮ সালে ‘কবিকাহিনী’ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে। আর, কবির জীবনাবসানের মধ্যে দিয়েই তাঁর এই কবিজীবনের সমাপ্তি ঘটে ১৯৪১ সালে। জীবৎকালে প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের শেষ কাব্যগ্রন্থ ‘জন্মদিনে’। বিশ্বকবির মৃত্যুর পর তাঁর মৃত্যুপূর্বে রচিত এবং অপ্রকাশিত লেখাগুলি নিয়ে প্রকাশিত হয়, ‘শেষ লেখা’ কাব্যগ্রন্থ। মৃত্যু, রবীন্দ্রনাথের কলমকে স্তব্ধ করলেও তাঁর কবিতার অনুরণন বাঙালি হৃদয়ে আজও বেজে চলেছে অবিরাম।