উক্ত প্রসঙ্গ
‘পঁচিশে বৈশাখ’ প্রবন্ধে লেখকের মূল আলোচ্য বিষয় রবীন্দ্রনাথের গান। তাই অনিবার্যভাবে শান্তিদেব ঘোষের প্রসঙ্গ এসেছে। তিনি বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতজ্ঞ এবং রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্য। তিনি ১৯৪২ সালে ‘রবীন্দ্রসংগীত’ শীর্ষক একটি বইও লিখেছিলেন-সেই বইয়ে তিনি রবীন্দ্রসংগীতের সমস্ত দিক নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করেছেন। তাই রবীন্দ্রনাথের গানের গুণ ও গীতিরস বিশ্লেষণ করতে গিয়ে প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী শান্তিদেব ঘোষের বইটির কথা স্মরণ করেছেন।
যে যে বিষয়ে
অতি শৈশব থেকেই রবীন্দ্রনাথের কাছে থাকতেন শান্তিদেব ঘোষ, নাম ছিল শান্তিময় ঘোষ; রবীন্দ্রনাথ তাঁর নাম পালটে রাখেন শান্তিদেব। রবীন্দ্রনাথের বিদ্যালয়েই তাঁর পড়াশোনা, গানবাজনা, নাচ, অভিনয় সবই। তাঁর লিখিত প্রথম গ্রন্থ ‘রবীন্দ্রসঙ্গীত’ (১৯৪২)। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে লিখেছিলেন, “… আমার গানের সঞ্চয় তোর কাছে আছে বিশুদ্ধভাবে সে গানের প্রচার তোর কাজ।” গুরুর আদেশ মাথায় নিয়ে তিনি সেই কাজ আজীবন করে গিয়েছেন। ‘রবীন্দ্রসঙ্গীত’ গ্রন্থে গানের বিভিন্ন দিকের খুঁটিনাটি আলোচনা করেছেন শান্তিদেব। পূর্বসূরিদের বাংলা গানের থেকে রবীন্দ্রনাথের গান যে একেবারেই স্বতন্ত্র এবং ভিন্নস্বাদের ও মাত্রার তা বোঝা যায়। লোকসংগীতের আঙ্গিক, বিদেশি সংগীতের মাধুরী যেমন তাঁর গানে আছে, তেমনই আছে বাণী, কথার অনবদ্য রসসৃষ্টি ও সুর। কথাকে এক অপূর্ব সম্মিলনে অনবদ্য করে তুলেছেন রবীন্দ্রনাথ। আলোচ্য প্রবন্ধটিতে রবীন্দ্রগানের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য ধরা আছে বলেই লেখক জানিয়েছেন, শান্তিদেব ঘোষ কোনো কিছু বাদ দেননি।