চতুর্থ ক্রুসেড সম্পর্কে টীকা লেখো

চতুর্থ ক্রুসেড সম্পর্কে টীকা লেখো

চতুর্থ ক্রুসেড সম্পর্কে টীকা লেখো
চতুর্থ ক্রুসেড সম্পর্কে টীকা লেখো

ভূমিকা

খ্রিস্টান ধর্মযোদ্ধারা তৃতীয় ক্রুসেডেও জেরুজালেম পুনরুদ্ধারে ব্যর্থ হয়। তবে তুর্কি শাসক সালাদিনের সঙ্গে এক চুক্তির ভিত্তিতে খ্রিস্টানরা জেরুজালেমে পুনরায় তীর্থযাত্রায় অনুমতি লাভ করে। তারপর ইউরোপের শাসকবর্গ ও ধর্মযোদ্ধারা জেরুজালেম পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু পোপ তৃতীয় ইনোসেন্ট খ্রিস্টানদের এই ব্যর্থতাকে চূড়ান্ত বলে মেনে নিতে পারেননি। তিনি জেরুজালেম পুনরুদ্ধার করে সমগ্র খ্রিস্টান জগতের ওপর পোপের কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে উদ্যোগী হন।

(1) পোপের আহ্বান : তৃতীয় ক্রুসেডের পর ইউরোপের বিভিন্ন রাজন্যবর্গ পারস্পরিক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়েন। এই বিশৃঙ্খলাময় পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে পোপ তৃতীয় ইনোসেন্ট ক্রুসেডকে নিজের নিয়ন্ত্রণাধীনে আনার চেষ্টা করলেন। এরপর তিনি চতুর্থ ক্রুসেড বা ধর্মযুদ্ধের ডাক দেন।

(2) নেতৃত্ব: খ্রিস্টান রাজন্যবর্গ নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে লিপ্ত থাকায় চতুর্থ ক্রুসেডে সেভাবে তাঁরা কেউ অংশগ্রহণ করেননি। ফ্রান্সের কিছু সামন্তপ্রভু ও নাইট, ভেনিসের কিছু বণিক সম্প্রদায় এবং জার্মানির একদল যোদ্ধা এই ক্রুসেডে নেতৃত্ব দেন।

(3) অভিযান: চতুর্থ ক্রুসেডের মুখ্য নিয়ন্ত্রক ছিলেন পোপ। কিন্তু এই অভিযান পরিচালিত হয়েছিল মূলত ভেনিসের বণিকদের দ্বারা। তারা স্থলপথের পরিবর্তে জলপথে এই অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন। বাণিজ্যিক স্বার্থের কারণেই তারা জেরুজালেম পুনরুদ্ধারের

পরিবর্তে বাইজানটাইনের ওপরেই আধিপত্য বিস্তারে তৎপর হয়। তারা জেরুজালেমের পরিবর্তে খ্রিস্টান অধ্যুষিত কনস্ট্যান্টিনোপলের জারা বন্দর নগরটি দখলে সচেষ্ট হয়। পোপের নির্দেশ অমান্য করে ধর্মযোদ্ধারা শেষপর্যন্ত খ্রিস্টান শহর জারা দখল করে।

ফলাফল

চতুর্থ ক্রুসেডেও খ্রিস্টান ধর্মযোদ্ধারা তাদের পবিত্রভূমি জেরুজালেম পুনরুদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছিল। তাদের এই ব্যর্থতার মূলে ছিল ভেনিসের বণিকদের ব্যক্তিগত স্বার্থ। তাই জেরুজালেম অধিকারের পরিবর্তে ধর্মযোদ্ধারা জারা নামক একটি খ্রিস্টান শহরকেই লুঠ করে তাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল। এটি খ্রিস্টান জগতের অনৈক্য ও ব্যর্থতাকেই সূচিত করে।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment