আধুনিক বিজ্ঞানচর্চায় আইজ্যাক নিউটনের অবদান লেখো

আধুনিক বিজ্ঞানচর্চায় আইজ্যাক নিউটনের অবদান লেখো

আধুনিক বিজ্ঞানচর্চায় আইজ্যাক নিউটনের অবদান লেখো
আধুনিক বিজ্ঞানচর্চায় আইজ্যাক নিউটনের অবদান লেখো

ভূমিকা

ইউরোপে আধুনিক বিজ্ঞানচর্চার অগ্রগতির যুগে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী ছিলেন স্যার আইজ্যাক নিউটন। বিজ্ঞানচর্চায় তাঁর একাধিক যুগান্তকারী আবিষ্কার তাঁকে অমরত্ব দান করেছে। বলবিদ্যা, আলোকবিদ্যা, গণিত, দর্শন প্রভৃতি সবদিকেই তাঁর ছিল অগাধ জ্ঞান। তবে আধুনিক যুগের সূচনালগ্নে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সংক্রান্ত তাঁর পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা ও মতবাদ তাঁকে অনন্যসাধারণ করে তুলেছে।

(1) মাধ্যাকর্ষণ সূত্র আবিষ্কার: তিনি বিশ্বব্রহ্মান্ডের বিভিন্ন জ্যোতিষ্কের মধ্যে মাধ্যাকর্ষণ বল-এর ধারণা দেন এবং মাধ্যাকর্ষণ সূত্র আবিষ্কার করেন। এই সূত্রতে বলা হয়-বিশ্বব্রহ্মান্ডের প্রতিটি বস্তুকণা একে অপরকে আকর্ষণ করছে। ১৬৮৪ খ্রিস্টাব্দে ‘দ্য মোটু করপোরাম’ (De motu corporum in gyrum)-এ তিনি এ বিষয়ে প্রথম তাঁর পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করেন। ১৬৮৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি আরও বিস্তারিতভাবে তাঁর এই মহাকর্ষ সূত্রের ব্যাখ্যা দেন।

(2) অভিকর্ষ সূত্র আবিষ্কার: নিউটন পৃথিবীর নিজস্ব ‘অভিকর্ষ বল’-এর ধারণা দেন এবং ‘অভিকর্ষ সূত্র’ আবিষ্কার করেন। পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের আকর্ষণেই সমস্ত বস্তু নীচের দিকে পতিত হয়।

(3) তিনটি গতিসূত্র আবিষ্কার: নিউটন সমস্ত বস্তুর গতি সংক্রান্ত সার্বজনীন তিনটি সূত্র আবিষ্কার করেন।

  • প্রথম গতিসূত্র: স্থির বস্তু আজীবন স্থির থাকতে চায় এবং সচল বস্তু আজীবন সমগতিতে গতিশীল থাকতে চায়, যতক্ষণ না তার ওপর বাইরে থেকে কোনো শক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে।
  • দ্বিতীয় গতিসূত্র: কোনো বস্তুর ভরবেগ পরিবর্তনের হার তার ওপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং প্রযুক্ত বলের অভিমুখেই ভরবেগের পরিবর্তন হয়।
  • তৃতীয় গতিসূত্র: প্রতিটি ক্রিয়ার একটি সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া আছে।

(4) গ্রন্থরচনা : নিউটন রচিত প্রিন্সিপিয়া গ্রন্থটি আধুনিক বিজ্ঞান চর্চার এক অপরিহার্য দলিল, যাতে গাণিতিক হিসাব ও সূত্রের সাহায্যে গ্রহগুলির সূর্যকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণের গতি ও কারণ প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর রচিত অন্যান্য গ্রন্থগুলি হল- ‘Opticks’, ‘De mundi Xystemate’, ‘Arithmatica Universatis’ ইত্যাদি।

মূল্যায়ন

মহাবিশ্বের সমস্ত জ্যোতিষ্ক সম্পর্কে প্রমাণিত, বিজ্ঞাননির্ভর ধারণা দেওয়ার জন্য নিউটন আধুনিক বিজ্ঞানীদের কাছে প্রণম্য হয়ে আছেন। আলোর প্রতিসরণ, আলোর প্রতিফলন, দূরবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কার তাঁর অনন্যকীর্তি।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment