প্রযুক্তি বিপ্লব সম্পর্কে লেখো

ভূমিকা
খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ-ষোড়শ শতকে ইউরোপে প্রকৃত আধুনিক বিজ্ঞানচর্চার সূত্রপাত ঘটে। আধুনিক বিজ্ঞানের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিবিদ্যার ক্ষেত্রেও এক যুগান্তকারী অগ্রগতি ঘটে। প্রযুক্তিবিদ্যার এই অভূতপূর্ব উন্নতি বা অগ্রগতিকে সাধারণভাবে প্রযুক্তি বিপ্লব বলা হয়। কৃষি, শিল্প, সামরিক বা যুদ্ধাস্ত্র নির্মাণ প্রভৃতি নানা ক্ষেত্রে এসময় প্রযুক্তিগত কলাকৌশলের বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে।
(1) কৃষিপ্রযুক্তির অগ্রগতি: পঞ্চদশ-ষোড়শ শতকে ইউরোপে উন্নত যন্ত্রপাতির আবিষ্কার ও ব্যবহার কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটায়। এসময় পুরাতন যন্ত্রপাতির বদলে লোহার তৈরি মজবুত যন্ত্রপাতির (লাঙল, শস্য মাড়াইয়ের যন্ত্র ইত্যাদি) আবিষ্কার কৃষিক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি ঘটায়। নিবিড় পদ্ধতিতে চাষাবাদ এবং জমিতে উন্নত সার প্রয়োগের ফলে কৃষি উৎপাদন পূর্বের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
(2) শিল্পপ্রযুক্তির অগ্রগতি: ইউরোপে প্রযুক্তি বিপ্লবের অগ্রগতি শিল্পক্ষেত্রেও এক যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসে। এসময় বস্ত্র ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পের নানা উন্নত যন্ত্রপাতি আবিষ্কৃত হয়। এ ছাড়াও ধাতুশিল্প ও খনিজ উত্তোলনেও প্রযুক্তিগত উন্নতি লক্ষ করা যায়।
(3) সামরিক ক্ষেত্রে প্রযুক্তির অগ্রগতি: পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকেই ইউরোপে সামরিক ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উন্নতি ঘটে। বারুদের ব্যবহার, উন্নতমানের কামান ও বন্দুকের আবিষ্কার, নতুন দুর্গ নির্মাণের কৌশল প্রভৃতি ইউরোপে সামরিক ক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব বিপ্লবের সূচনা করে।
মূল্যায়ন
সবশেষে বলা যায় যে, প্রযুক্তিগত বিপ্লব আধুনিক ইউরোপের জয়যাত্রার সূচনা করেছিল।
আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর