মনোবিজ্ঞানে অনুসন্ধানের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হল পরীক্ষণ বা পরীক্ষানিরীক্ষা পদ্ধতি (Experimentation)। এই পদ্ধতির সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার চলককে বা ভেরিয়েবলকে প্রয়োজনমতো সাজানো যায় এবং এই পদ্ধতির সাহায্যে মানুষের আচরণ, জ্ঞান, আবেগ ও অন্যান্য মনস্তাত্ত্বিক ঘটনার উপর চলকের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা যায়। এই পদ্ধতিটি গবেষণার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের কার্যকরণ সম্পর্ক নিরূপণে, অনুমানগুলির পরীক্ষণে এবং মানব আচরণ নিয়ন্ত্রণকারী অন্তর্নিহিত নীতিগুলির সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করে। ‘পরীক্ষণ’ বলতে আমরা বুঝি নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ। প্রয়োজনমতো কতকগুলি অবস্থা বা চলককে (variable) নিয়ন্ত্রণ করে যে-কোনো একটি বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করার নাম পরীক্ষণ।
পরীক্ষণের সুবিধা ও অসুবিধা

পরীক্ষণ পদ্ধতির উদ্দেশ্য ও মূলনীতি
পরীক্ষণ পদ্ধতির প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল চলক বা ভেরিয়েবলের মধ্যে কারণ ও প্রভাব বিষয়ে পর্যবেক্ষণ বা অনুসন্ধান করা। পরীক্ষণ তথা পরীক্ষানিরীক্ষা পদ্ধতি কয়েকটি মূলনীতির দ্বারা পরিচালিত হয়। এগুলি হল-
(1) ভেরিয়েবলগুলির নিয়ন্ত্রণ:
গবেষকেরা বহিরাগত চলক বা ভেরিয়েবলের প্রভাব কমানোর সময় নির্ভরশীল ভেরিয়েবলের উপর তাদের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করতে স্বাধীন ভেরিয়েবলগুলি নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজনমতো এদিক- ওদিক করেন।
(2) পরীক্ষা প্রণালীর পুনরাবৃত্তি:
পরীক্ষণের ক্ষেত্রে ফলাফলের নিশ্চয়তা প্রমাণ করতে এবং সেগুলির বৈধতা যাচাই করার জন্য পরীক্ষণ প্রণালী একাধিকবার পুনরাবৃত্তি করার দরকার হয়। পুনরাবৃত্তি পরীক্ষণে প্রাপ্ত ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতা যথাযথ বাড়ায়।
(3) প্রায়োগিক নৈতিকতা:
পরীক্ষণ পদ্ধতিতে অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নৈতিক দিকের স্বাধীনতা রক্ষা করা এবং ফলাফলের ক্ষেত্রে প্রায়োগিক নৈতিকতা অবলম্বন করা দরকার। এই পরীক্ষণ পদ্ধতিতে নৈতিক নীতি মেনে চলা হয় বলে এটি অন্যকে ভুল বা মিথ্যা প্রভাব থেকে পৃথক করে।
(4) তথ্য পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ:
উপযুক্ত ফলাফল বিশ্লেষণের জন্য প্রায়োগিক নৈতিকতা সংরক্ষণ ও সুনিশ্চিয়তার জন্য তথ্য পর্যালোচনা ও তার সঠিক বিশ্লেষণ করা দরকার।
(5) বৈধ পরিমাপ:
পরীক্ষণের জন্য প্রতিটি পরিমাপ বৈধ এবং নির্ভুল হওয়া বাঞ্ছনীয়। কারণ পরীক্ষণের ক্ষেত্রে পরিমাপগুলি সঠিক বা বৈধ না হলে ফলাফল ভিন্ন প্রকৃতির হয়।
(6) পরীক্ষণে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি:
পরীক্ষণের জন্য শিক্ষা মনোবিদ্যায় কমপক্ষে দুইজন ব্যক্তির প্রয়োজন হয়। একজন হলেন পরীক্ষক (experimenter) আর অন্য জন পরীক্ষার্থী (subject), অর্থাৎ, যার আচরণ বা অভিজ্ঞতা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করা হবে। শিক্ষা মনোবিজ্ঞানে অনেকক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর প্রকৃতি পরিবর্তন করা হয়। আবার কোনো সময় একটি পরীক্ষার্থী দল গ্রহণ করা হয়।
পরীক্ষণের প্রকারভেদ
শিক্ষা মনোবিজ্ঞানে বিভিন্ন চলের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে তিনপ্রকার পরীক্ষণ প্রয়োগ করা হয়। এগুলি হল-
(1) উদ্দীপক-প্রতিক্রিয়া সম্পর্ক পরীক্ষণ:
শিক্ষা মনোবিজ্ঞানে কোনো উদ্দীপক বিষয়ক চলের (stimulus variable) সঙ্গে প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত চলের সম্পর্ক নির্ণয় সম্বন্ধীয় পরীক্ষণ। যেমন-কোনো বিদ্যালয়ে শিক্ষক- শিক্ষিকাগণ দেখতে চান পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে মনের ধারণ প্রক্রিয়ার অগ্রগতি বা বিকাশ ঘটে কিনা। সেই ক্ষেত্রে উদ্দীপকের পুনরাবৃত্তি, প্রতিক্রিয়ার ওপর কী জাতীয় প্রভাব ফেলে তা নির্ধারণ করতে চাওয়া হয়। এই জাতীয় বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষণ শিক্ষা মনোবিজ্ঞানে প্রয়োগ করা হয়।
(2) ব্যক্তি-প্রতিক্রিয়া সম্পর্ক পরীক্ষণ:
কোনো ব্যক্তি বিষয়ক চলের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া বিষয়ক চলের সম্পর্ক সম্বন্ধীয় পরীক্ষণ। যেমন-যখন কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য শিখনকে প্রভাবিত করে কি না দেখতে চান। সেক্ষেত্রে ‘মানসিক স্বাস্থ্য’ এই ব্যক্তি বিষয়ক অবস্থার সঙ্গে প্রতিক্রিয়ামূলক চল শিখনের সম্পর্ক নির্ধারণ করে। এই প্রকার নানান পরীক্ষণ শিক্ষা মনোবিজ্ঞানে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।
(3) দুই প্রকারের ব্যক্তি বিষয়ক চলের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় সম্বন্ধীয় পরীক্ষণ:
যেমন কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা যখন মানসিক ক্ষমতার সঙ্গে সামাজিক অভিযোজনের সম্পর্ক বিষয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করেন। কিন্তু এই জাতীয় পরীক্ষণ প্রয়োগের ক্ষেত্রে নানান অসুবিধা রয়েছে। কারণ অস্বাভাবিক বা কৃত্রিম পরিবেশে মনের স্বাভাবিক অবস্থা অনেক ক্ষেত্রেই পরিবর্তিত হয়ে যায়। ফলে শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ যে বিষয়টি অনুশীলন করতে চান তার থেকে তিনি অনেক দূরে চলে যান। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কোনো বিদ্যালয় কোনো একটি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর ‘ভয়ের’ প্রভাব কীভাবে শিক্ষণকে প্রভাবিত করে, তা পরীক্ষা করে দেখতে চান। এই অবস্থায় শ্রেণিকক্ষে কৃত্রিম উপায়ে ‘ভয়’ দেখানো চেষ্টা করলে, তা আসল অবস্থা থেকে অবশ্যই ভিন্ন প্রকৃতির হবে। ফলে স্বাভাবিক ভীতিমূলক পরিস্থিতিতে কীভাবে শিখন হবে, তা এই পরীক্ষার ফল থেকে সঠিকভাবে বলা যাবে না।
পরীক্ষণের নকশার প্রকারভেদ
পরীক্ষণের ডিজাইন বা নকশাকরণ বলতে বোঝায় পরীক্ষক বা গবেষক পরীক্ষাটি কীভাবে পরিচালিত করবেন তার রূপরেখা। একটি শক্তিশালী নকশার ওপর পরীক্ষকের বা গবেষকের কাজের উৎকর্ষ নির্ভর করে। বর্তমান গবেষকগণ বিভিন্ন রকমের নকশা বা ডিজাইনের কথা উল্লেখ করেছেন। এখানে কয়েকটি নকশার বিষয়ে উল্লেখ করা হল।
(1) একদল নকশা:
একটি হল সবচেয়ে সরল নকশা। এই নকশাকে অনেক সময় প্রাক্-পরীক্ষণ নকশাও বলা হয়ে থাকে। এখানে একটি দল থাকায় তুলনার প্রশ্ন নেই। উদাহরণস্বরূপ, একজন শিক্ষক ধূমণ ধূমপানের অভ্যাস দূর করার জন্য দশটি ছাত্রের ওপর কিছু প্রয়োগ করেন। তিন মাস পরে দেখা গেল দশটির মধ্যে ছ-টি ছাত্র ধূমপান ছেড়ে দিয়েছে।
(2) এক দল প্রাক্ অভীক্ষা বা অভীক্ষান্তের নকশা:
এই নকশায় গবেষক বা পরীক্ষক পূর্বনির্দিষ্ট কোনো কিছু পড়ানোর আগে ছাত্রদের পরীক্ষা করেন। পাঠদানের পরে আবার পরীক্ষা করেন। এই দুটি পরীক্ষার মধ্যে যে পার্থক্য তা-ই হল পূর্বনির্দিষ্ট পাঠ প্রয়োগের ফল। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের ওপর পাঠদানের পূর্বে শিক্ষার্থীর ওপর শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের অভীক্ষা প্রয়োগ করা হল। তিন মাস পাঠদানের পর আবার শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের অভীক্ষা প্রয়োগ করা হল। এই দুবার প্রয়োগের মধ্যে যে পার্থক্য তার কারণ হল তিন মাস ধরে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের পাঠদান।
(3) দুই দল নকশা:
দুই দল নকশায় দুটি সদৃশ বা একইরকম দল বাছাই করা হয়। এক দলের ওপর পূর্ব-নির্দিষ্ট অভীক্ষা প্রয়োগ করা হয়। এই দলকে বলা হয় পরীক্ষণমূলক দল (experimental group)। অন্য দলের ওপর তা প্রয়োগ করা হয় না। একে বলা হয় নিয়ন্ত্রিত দল (controlled group)। একইরকম দল গঠনে একাধিক কৌশল ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল [1] এলোমেলো পদ্ধতিতে দল গঠন করা (random method), [ii] সবদিক থেকে একইরকম দলগঠন করা (matched group)।
পরীক্ষণ পদ্ধতির পর্যায় বা ধাপ’
একটি পরীক্ষা পরিচালনা করার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ বা ধাপের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এই ধাপগুলি হল-
(1) গবেষণা হাইপোথিসিস প্রণয়ন:
পরীক্ষক বা গবেষকগণ স্বাধীন এবং নির্ভরশীল ভেরিয়েবলের মধ্যে প্রত্যাশিত সম্পর্ক উল্লেখ করে একটি সুস্পষ্ট অনুমান বা ধারণা প্রকাশ করেন।
(2) পরীক্ষণের ডিজাইন বা নকশা প্রস্তুত:
পরীক্ষক বা ভেরিয়েবলের তারতম্য, অংশগ্রহণকারীদের নির্বাচন এবং এলোমেলো অ্যাসাইমেন্ট-সহ পরীক্ষামূলক পদ্ধতিটি ডিজাইন করেন।
(3) পরীক্ষা বাস্তবায়ন:
অংশগ্রহণকারীদের নিয়োগ করা হয়। অবহিত সম্মতি পাওয়া যায় এবং পরীক্ষামূলক শর্তগুলি নৈতিক নির্দেশিকা অনুযায়ী পরিচালিত হয়।
(4) তথ্যসংগ্রহ এবং পর্যালোচনা:
পরীক্ষকরা নির্ভরশীল ভেরিয়েবলের ডেটা বা তথ্যগুলি সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া পরিসংখ্যানগত প্রণালী অবলম্বন করে ফলাফল পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করেন। সবশেষে ফলাফলের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
এই পদ্ধতি অনুসরণের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে হয়। এই বিষয়গুলি হল অংশগ্রহণকারীর কল্যাণ, অবহিত সম্মতি, গোপনীয়তা এবং ক্ষতি প্রতিরোধ নিশ্চিত করার জন্য মনোবিজ্ঞানের পরীক্ষাগুলি অবশ্য নীতিগত নির্দেশিকা মেনে চলবে।
পরীক্ষণের সুবিধা বা গুণাবলি
পরীক্ষণের সুবিধাগুলি হল-
(1) কারণ-প্রভাব সম্পর্ক স্থাপন:
পরীক্ষণ প্রণালী পরীক্ষক বা গবেষকদের স্বাধীন ভেরিয়েবলগুলিকে (independent variable) প্রভাবিত করে এবং নির্ভরশীল ভেরিয়েবল (dependent variable)-এর উপর তার প্রভাব পর্যবেক্ষণ করে ভেরিয়েবলের মধ্যে কারণ-প্রভাব সম্পর্ক স্থাপন করতে দেয়। এটি অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়া এবং প্রক্রিয়াগুলিকে বুঝতে সাহায্য করে।
(2) ভেরিয়েবলের উপর নিয়ন্ত্রণ:
পরীক্ষণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষাগুলি ভেরিয়েবলের উপর উচ্চ পর্যায়ের নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে; যা পরীক্ষক বা গবেষকদের স্বাধীন ভেরিয়েবলের (independent varibale) প্রভাবগুলি পৃথক করতে এবং ফলাফলসমূহকে প্রভাবিত করতে পারে। এমনকি বিভ্রান্তকর কারণগুলিকে কমিয়ে দিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই জাতীয় নিয়ন্ত্রণ অধ্যয়নের অভ্যন্তরীণ বৈধতা বাড়ায়।
(3) প্রতিলিপি যোগ্যতা:
উত্তম মানের পরিকল্পিত পরীক্ষাসমূহ প্রতিলিপিযোগ্য। যার অর্থ, অন্যান্য পরীক্ষক বা গবেষকরা ফলাফলগুলিকে যাচাই করতে এবং তাদের নির্ভরযোগ্যতা ও সাধারণীকরণ নিশ্চিত করতে অনুরূপ পরিস্থিতিতে অধ্যয়নের প্রতিলিপি করতে পারেন।
(4) পরিমাণগত তথ্য (ডেটা):
পরীক্ষণের ফলে পরিমাণগত তথ্য পাওয়া যায়, যাকে পরিসংখ্যানগত পদ্ধতির দ্বারা পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। এটি বহু ক্ষেত্রেই সুনির্দিষ্ট এবং পরিমাপযোগ্য ফলাফল প্রদান করে। এটি গবেষকদের উদ্দেশ্যমূলক সিদ্ধান্তগ্রহণ এবং অনুমানগুলিকে কঠোরভাবে পরীক্ষণের অনুমতি প্রদান করে।
(5) কারণ শনাক্তকরণ:
পরীক্ষণের ডিজাইন বা নকশা, বিশেষ করে RCTs বা রান্ডমাইজড কন্ট্রোলড ট্রায়াল (Randomized Controlled Trials) ভেরিয়েবলের মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক স্থাপন করতে ক্রিয়াশীল হয়, যা শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিসেবা এবং সামাজিক বিজ্ঞান-সহ নানান ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পরীক্ষণের ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতা
পরীক্ষণ (Experimentation) মনোবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হলেও এর কিছু ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এখানে পরীক্ষণের প্রধান ত্রুটি বা অসুবিধা বা দুর্বলতাগুলি উল্লেখ করা হল-
(1) বাস্তবতার অভাব:
গবেষণাগারভিত্তিক পরীক্ষাগুলি সাধারণত নিয়ন্ত্রিত এবং কৃত্রিম পরিবেশে পরিচালিত হয়, যা বাস্তব জীবনের পরিস্থিতির সাথে মেলে না। মোটকথা কৃত্রিমতা নির্ভর পরীক্ষার ফলাফলকে বাস্তব জীবনের আচরণে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে জটিলতা বাড়িয়ে তোলে।
(2) সাধারণীকরণের সমস্যা:
পরীক্ষাগুলি সাধারণত একটি ছোটো এবং নির্দিষ্ট নমুনার ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়, যা বৃহত্তর জনসংখ্যার জন্য সাধারণীকৃত করা কঠিন। নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে বা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীতে প্রাপ্ত ফলাফল সমগ্র জনসংখ্যার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না-ও হতে পারে।
(3) পক্ষপাতিত্বের সমস্যা:
গবেষক এবং অংশগ্রহণকারীদের পক্ষপাতিত্ব পরীক্ষার ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে। গবেষকের প্রত্যাশা এবং অংশগ্রহণকারীদের সচেতনতা তাদের আচরণ পরিবর্তন করতে পারে, যা পরীক্ষার ফলাফলে প্রভাব ফেলে।
(4) সময় ও খরচ:
গবেষণাগারভিত্তিক পরীক্ষাগুলি প্রায়ই সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল হয়। সমস্ত ‘চলক’ বা ‘ভেরিয়েবল’ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সঠিক তথ্য সংগ্রহ করতে অনেক সময় ও সম্পদের প্রয়োজন হয়।
(5) জটিল আচরণের গবেষণা:
মানব আচরণ প্রায়ই অত্যন্ত জটিল এবং বহুমুখী হয়, যা পরীক্ষণের মাধ্যমে পুরোপুরি বোঝা বা ব্যাখ্যা করা কঠিন। পরীক্ষণের ক্ষেত্রে সাধারণত একটি সীমিত সংখ্যক ‘চলক’ বা ‘ভেরিয়েবল’ নিয়ে কাজ করা হয়, যা জটিল আচরণ এবং প্রভাবগুলি বোঝার জন্য যথেষ্ট নয়।
(6) নিয়ন্ত্রণের অসুবিধা:
গবেষণাগারভিত্তিক পরীক্ষণের ক্ষেত্রে সমস্ত ‘চলক’কে বা ‘ভেরিয়েবল’কে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কিছু বাহ্যিক এবং অনিয়ন্ত্রিত চলক বা ভেরিয়েবল পরীক্ষণের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে।
আরও পড়ুন | Link |
ছুটি গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর | Click Here |
তেলেনাপোতা আবিষ্কার বড় প্রশ্ন উত্তর | Click Here |
আগুন নাটকের প্রশ্ন উত্তর | Click Here |