অধিকারের স্বরূপ বা প্রকৃতি আলোচনা করো

অধিকারের স্বরূপ বা প্রকৃতি আলোচনা করো।
অধিকারের স্বরূপ বা প্রকৃতি আলোচনা করো।

অধিকারের স্বরূপ/প্রকৃতি

সাধারণ অর্থে অধিকার বলতে বোঝায় নৈতিক, সামাজিক ও আইনগত দিক থেকে কিছু দাবিকে। বাত্তি সমাজের সদস্য হিসেবে, তার বাস্তিত্বের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে সে নৈতিক, সমাজিক ও আইনগত কিছু সুযোগ-সুবিধা দাবি করে থাকে। রাষ্ট্র যখন ব্যক্তি প্রত্যাশিত ঐসব সুযোগ-সুবিধার জন্য আইন। প্রণয়ন করে এবং তা সংরক্ষণ করে, তখন তাকে বলা হয় অধিকার। এই কারণে ‘অধিকার’কে ‘অধিকার’ হিসেবে পরিগণিত হওয়ার মধ্যে যেসব বিষয় নিহিত থাকে। তাহল-

[1] ব্যক্তির সুযোগ সুবিধা: 

মানুষ সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে কিছু সামাজিক দাবি প্রত্যাশা করে, যার মধ্যে সে তার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনে সক্ষম হতে পারে। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ব্যক্তির সুখী হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে তার পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্বের বিকাশসাধনের মধ্যে। এইসব প্রয়োজনীয় দাবি এবং নানাপ্রকার সামাজিক প্রত্যাশা পূরণের মধ্যে দিয়েই সৃষ্টি হয় অধিকার। এ প্রসঙ্গে ল্যাস্কি বলেছেন যে, ব্যক্তির বাস্তিত্বের বিকাশ সাধন অধিকার ব্যতীত সম্ভব হয় না। ব্যক্তি তার বাক্তিত্ব বিকাশে যেসব প্রয়োজনীয় অধিকারগুলি দাবি করে, তাহল তার ‘সুযোগ-সুবিধা’। রাষ্ট্র যদি এইসব ‘সুযোগ-সুবিধাকে’ আইন দ্বারা স্বীকৃতি প্রদান করে তাহলেই বাস্তি ‘সুখী’ জীবনযাপন লাভে সক্ষম হতে পারে।

(2) অন্তর্নিহিত ব্যক্তিত্বের প্রকাশ: 

প্রতিটি সমাজে বিভিন্ন মানুষ যদি তাদের নিজ নিজ অন্তর্নিহিত ব্যক্তিত্বের বিকাশের পরিপূর্ণ সুযোগ লাভ করে, তাহলে অধিকার যথাযথভাবে রূপায়িত হয়েছে বলে মনে করা যায়। তাছাড়া ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ বিকাশের মধ্য দিয়ে ‘অধিকার’ তার যথাযথ পরিপূরণের কাজ করতে পারে। কারণ সামাজিক ব্যক্তি নিজের সুখের জন্য অপরের দাবিকে বা অপরের কল্যাণসাধনের বিষয়টিকে উপেক্ষা করে নিজে আকাঙ্খিত বিষয়টিকে কামনা করতে বা দাবি করতে পারে না। এই কারণে ব্যক্তি তার নিজ আকাঙ্খিত বস্তু লাভের জন্য অপরের আকাঙ্খাকে বোঝার চেষ্টা করবে এবং রাষ্ট্র এইসব বিষয়কে স্বীকৃতি প্রদান করলে তা অধিকারে পরিণত হয়। এইভাবে অধিকার ভোগের মধ্য দিয়ে। বাত্তি তার অন্তর্নিহিত শক্তির বিকাশ ঘটাতে পারে। সমাজের সবল অথবা দুর্বল প্রতিটি মানুষের সম- আকাঙ্খা পূরিত হলেই অধিকারের বাস্তবায়ন ঘটে ও অধিকার সার্থকতা লাভ করে।

[3] অধিকার পূরণের শর্ত: 

অধিকার সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে অধ্যাপক বাকার বলেছেন যে, অধিকার বলতে সেইসব বিষয়কে বোঝায়, ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের বিকাশর জন্য প্রয়োজনীয় যেসব শর্ত রাষ্ট্র দ্বারা স্বীকৃত ও সংরক্ষিত। বাকারের দৃষ্টিতে এখানে দুটি শর্ত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যথা- 
প্রথমত, অধিকার বলতে এমন কিছু দাবিকে বোঝায়, যা সকলের কক্তিত্ব বিকাশের পক্ষে বিশেষভাবে উপযোগী।
দ্বিতীয়ত, ব্যস্তিত্ব বিকাশের সেইসব প্রয়োজনীয় শর্তগুলিকে অধিকার বলা হবে, যেগুলি রাষ্ট্র দ্বারা অবশ্যই স্বীকৃত এবং সংরক্ষিত হবে।

Leave a Comment