অবস্থা বড়োই খারাপ।’- কার অবস্থা কখন বড়োই খারাপ হয়েছিল? তার অবস্থা এরূপ খারাপ হওয়ার কারণ কী?
উদ্দিষ্ট ব্যক্তি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ ছোটোগল্পটিতে বালকদলের সর্দার ফটিকের অবস্থা বড়োই খারাপ হয়েছিল।
সময়কাল
গ্রাম ছেড়ে কলকাতার মামাবাড়িতে আসার পর শহরের স্বজন-বর্জিত বন্দিজীবনে থাকাকালীন সময়ে ফটিকের অবস্থা খারাপ হয়েছিল।
কারণ
মামাবাড়িতে বিশেষ করে মামির ব্যবহার ফটিককে দৈন্য ও হীনম্মন্য করে তোলে। সে সিদ্ধান্ত নেয় আর সে পরের পয়সা নষ্ট করবে না, অর্থাৎ শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরে যাবে। এরপর একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ফটিক মামাবাড়ির পথ না ধরে গ্রামের অচেনা পথে পা বাড়ায়। সারাদিন শ্রাবণের বৃষ্টিতে ভেজার পর সন্ধ্যার সময় পুলিশের দুজন লোক – গাড়ি থেকে ধরাধরি করে তাকে মামাবাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। বিশ্বম্ভরবাবু যখন ফটিককে কোলে করে অন্তঃপুরে নিয়ে গেলেন, তখন তার সারা দেহ ভিজে, সর্বত্র কাদা, মুখ-চোখ লাল, জ্বরে তার গা পুড়ে যাচ্ছে।
ফটিকের জ্বর ক্রমশ বাড়তে লাগল। সমস্ত রাত্রি প্রলাপ বকতে বকতে ফটিক তার রক্তবর্ণ চোখ একবার উন্মীলিত করে হতবুদ্ধির মতো তাকিয়ে থেকে মামাকে বলল-“মামা, আমার ছুটি হয়েছে কি।” কখনও ফটিক মা-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলতে লাগল-“মা, আমাকে মারিস • নে মা। সত্যি বলছি, আমি কোনো দোষ করিনি।” পরদিন কিছুক্ষণের জন্য সচেতন হয়ে ফটিকের দৃষ্টি চারদিকে মাকে খুঁজে বেড়াতে লাগল। ক্রমাগত মানসিক অত্যাচার, মামির অসম্মানজনক কথাবার্তা ফটিককে যখন ক্ষতবিক্ষত করে তুলেছিল; সেই মুহূর্তে সারাদিন বৃষ্টিতে ভিজে শারীরিকভাবেও ফটিক দুর্বল এবং মৃত্যুপথযাত্রী হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন – দর্শন শব্দের অর্থ MCQ