আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর (Marks 2, 3) | একাদশ শ্রেণি 2nd Semester WBCHSE

Table of Contents

আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর (Marks 2, 3) | একাদশ শ্রেণি 2nd Semester WBCHSE

আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর
আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর

আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর (Marks 2)

1. সৈয়দ মুজতবা আলী কী বিষয় নিয়ে একখানা প্রামাণিক গ্রন্থ লিখবেন ভেবেছিলেন?

উত্তর সৈয়দ মুজতবা আলী ছোটোবেলা থেকে শুনে এসেছিলেন যে, কলকাতা হল এক আজব শহর। এই শহরকে নিয়েই তিনি একখানা প্রামাণিক গ্রন্থ লিখবেন বলে ঠিক করেন।

2 “কাজেই বাড়ি ফেরার চিন্তার বেদনাটা ‘পথ হারানোর’ মতোই হল।”-কথাগুলি কে বলেছেন? কোন্ প্রসঙ্গে বলেছেন? 

উত্তর কথাগুলি সাহিত্যিক সৈয়দ মজুতবা আলী তাঁর ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পটিতে কথাগুলি বলেছেন।

লেখক কলকাতা শহরের কথা ভাবতে ভাবতে কলকাতার বুকে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন তখনই জোর বৃষ্টি নামে। তখন তাঁর কাছে বাড়ি ফেরাটাই কঠিন হয়ে পড়ে। এই প্রসঙ্গেই কথাগুলি বলেছেন।

3. কীভাবে লেখক প্রমাণ পেলেন ‘কলকাতা আজব শহর’?

উত্তর প্রবল বৃষ্টিতে লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী যখন কলকাতার বুকে হেঁটে চলেছেন তখনই তিনি প্রমাণ পেলেন কলকাতা সত্যিই একটা আজব শহর। তিনি সামনেই দেখতে পেলেন বড়ো বড়ো হরফে লেখা একটি দোকান-‘ফ্রেন্ড শপ বুক’। বিদেশি সাহিত্যের এমন দোকান দেখে লেখক বিস্মিত হলেন।

4. ফরাসি বইয়ের দোকান কী কারণে খুলেছেন বলে লেখক মনে করেন?

উত্তর লেখক মনে করেন যে, কোনো ফরাসি নিশ্চয়ই পথ হারিয়ে কলকাতা শহরে এসে পড়েছেন এবং পকেটে যে কটি উদ্‌বৃত্ত টাকা আছে সেগুলি খোয়াবার জন্যই তিনি কলকাতায় ফরাসি বইয়ের দোকান খুলে বসেছেন।

5. ভালো বই সম্পর্কে বাগুলি প্রকাশকেরা কী বলে থাকেন?

উত্তর বাঙালি প্রকাশকেরা ভালো বই সম্পর্কে বলেন যে, শুধুমাত্র ভালো বই ছাপিয়ে পয়সা কামানো যায় না। তাই মাঝে-মাঝে রদ্দি বা খারাপ উপন্যাসও বেরোবার জন্য গাদা-গাদা ছাড়তে হয়। এভাবেও বাঙালি প্রকাশকেরা তাঁদের ব্যবসায় লাভ করে থাকেন।

৪. ‘ফ্রেন্ড বুক শপ’-এ কী ধরনের বই পাওয়া যাবে বলে লেখক মনে করেছিলেন?

উত্তর লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী দোকানের নাম দেখে ভেবেছিলেন দোকানে হয়তো ফ্রেন্ড বইয়ের বদলে ‘খুশবাই’, ‘সাঁঝের পার’, ‘লোত্র রেণু’, ‘ওষ্ঠ-রাগ’-এইসব বই পাওয়া যাবে।

7. লেখক ফরাসি বইয়ের দোকানে ঢুকে কী দেখলেন?

উত্তর লেখক ফ্রেন্ড বুক শপে ঢুকে দেখেন যে, সেখানে গাদা-গাদা হলদে আর সাদা মলাটওয়ালা প্রচুর ফরাসি বই রয়েছে। তার কিছু সাজানো আর কিছু এদিক-ওদিক ছড়ানো রয়েছে।

৪. ফ্রেঞ্চ বুক শপে লেখকের কার সঙ্গে সাক্ষাৎ হল?

উত্তর ফ্রেন্ড বুক শপে ঢুকে লেখক সৈয়দ মজুতবা আলীর সঙ্গে এক ফরাসি মহিলার সাক্ষাৎ হল। তবে তিনি তাঁর বান্ধবীর অনুপস্থিতিতে শুধুমাত্র ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যের প্রচারের জন্য দোকানে বসে আছেন।

৪. পৃথিবীর লোক একসময় প্যারিসে গিয়ে জড়ো হত কেন?

উত্তর ফ্রান্স হল ‘ছবির দেশ, কবিতার দেশ’, তাই সেখানকার সংস্কৃতি সারা পৃথিবীর মানুষকে আকর্ষণ করত। একসময় সেই ফরাসি শিল্প-সংস্কৃতিকে কেনার জন্য গোটা পৃথিবীর মানুষ প্যারিস গিয়ে হাজির হত।

10. এক বাঙালি ছোকরা ফ্রেন্ড বুক শপে ঢুকে কী চাইল? তা দেখে লেখকের কী মনে হল?

উত্তর এক বাঙালি ছোকরা ফ্রেঞ্চ বুক শপে ঢুকে কমার্শিয়াল আর্ট সম্বন্ধে বই চাইল।

তা দেখে লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর মনে খুব আনন্দ হয়েছিল। তিনি ভেবেছিলেন বাঙালির বেশ উন্নতি হয়েছে।

11. ফ্রেন্ট বুক শপে কোন্ বই পেয়ে লেখক খুব উৎসাহিত হয়েছিলেন?

উত্তর ফ্রেঞ্চ বুক শপে লেখক হিটলার সম্পর্কে একটি খাসা বই পেয়ে খুব উৎসাহিত হয়েছিলেন। ন্যুরনবর্গের মোকদ্দমায় যেসব দলিল-দস্তাবেজ পাওয়া গেছিল, তার ওপর ভিত্তি করেই বইটি লেখা হয়েছিল।

12. হিটলার সম্পর্কিত বইটি কী নিয়ে লেখা ছিল?

উত্তর হিটলার সম্পর্কিত বইটিতে হিটলারের চরিত্র বর্ণনা ছিল। তাছাড়া হিটলার সম্পর্কে তাঁর শত্রু ফরাসিরা কী মনোভাব পোষণ করে সেই বিষয়গুলিও তুলে ধরা হয়েছে।

আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর (Marks 3)

“এমন সময় সপ্রমাণ হয়ে গেল ‘কলকেতা আজব শহর’-” অংশটি কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে? কীভাবে প্রমাণ হল ‘কলকাতা আজব শহর’?

উত্তর আংশটি সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘পঞ্চতন্ত্র’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।

এক তুমুল বৃষ্টির দিনে শহর কলকাতার বুকে লেখকের পথ হারানোর মতো মানসিক অবস্থা হয়। তাঁর কাছে না ছিল ছাতা, না ছিল বর্ষাতি। ট্রামে বাসে চড়বার মতো তাগদ ছিল না, এমনকি ট্যাক্সিতে চড়তে বুক কচকচ করছিল। তখনই হঠাৎ তাঁর সামনে পড়েছিল একটি বইয়ের দোকান, যার নাম ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’। কলকাতা শহরে ফরাসি বইয়ের দোকান দেখে তিনি আশ্চর্য হয়েছিলেন। তখনই তাঁর মনে হয়েছিল সত্যি-সত্যিই ‘কলকেতা আজব শহর’।

ফ্রেঞ্চ বুক শপকে লেখকের ‘হাতির দাঁতের মতো’ বলে মনে হয়েছিল কেন?

উত্তর ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর ফ্রেঞ্চ বুক শপকে হাতির দাঁতের মতো মনে হয়েছিল। লেখক ভেবেছিলেন, বাঙালি যেখানে বই কিনতে চায় না, সেখানে প্রকাশকরা রদ্দি মালও বের করেন মুনাফা লাভের জন্য। সেখানে এই কলকাতায় বসে ফরাসি বই কীভাবে বিক্রি হবে। তাঁর মনে হয় দোকানের নামকরণ হয়তো হাতির দাঁতের মতোই। সামনে শুধু দেখাবার জন্য, ভিতরে হয়তো অন্য দাঁত আছে চিবানোর জন্য। ঠিক তেমনই নামের আড়ালে দোকানে হয়তো অন্যান্য নানাধরনের বই বিক্রি হয়।

‘উচ্চারণের মাথায় ঘোল ঢেলে চালালুম আমার ধেনো মার্কা ফরাসি শ্যাম্পেন।”-কে কথাগুলি বলেন? কোন্ প্রসঙ্গে বলেন?

উত্তর প্রশ্নের কথাগুলি বলেছেন, ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পের লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী।

কলকাতার বুকে ফ্রেঞ্চ বুক শপ দেখে লেখক দুরু দুরু বুকে ভিতরে ঢোকেন। তিনি তাঁর বাংলা ভাষার সঙ্গে ফরাসির মিশ্রণে ব্যাকরণের গঙ্গাপ্রাপ্তি ঘটিয়ে এক অদ্ভুত ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন। তাঁর এই মিশ্র ভাষা যেন ছিল ধেনো মদের সঙ্গে ফরাসি শ্যাম্পেনের মিশ্রণ। এই মিশ্র ভাষা শুনে দোকানের মেমসাহেব খুশি হয়ে উঠেছিলেন। এই প্রসঙ্গেই লেখক কথাগুলি বলেছিলেন।

তুলসীদাস কে? তাঁর কোন কথা লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর কাছে প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছিল এবং কেন?

উত্তর তুলসীদাস হলেন হিন্দু এবং হিন্দিভাষী সন্তকবি। তাঁর অনূদিত ‘রামচরিতমানস’ সর্বজনবিদিত।

শিল্প-সংস্কৃতি সম্পর্কে উচ্চ বোধসম্পন্ন ফ্রান্স ছিল একসময় গোটা পৃথিবীর কাছে জনপ্রিয়। সেখানকার সংস্কৃতিকে, শিল্পকে সংগ্রহ করার জন্য গোটা পৃথিবী প্যারিসে হাজির হত। কিন্তু বর্তমানে এই পরিস্থিতি এতটাই নিম্নমুখী যে ফ্রান্সের লোক কলকাতায় এসেছে বই বেচতে এবং দোকান সাজিয়ে বসেছে। এই বিষয়টিকে বোঝাতে গিয়ে লেখক তুলসীদাসের একটি উক্তি তুলে ধরেছেন। তুলসীদাস বলেছিলেন, “পৃথিবীর কী অদ্ভুত রীতি। শুঁড়ি দোকানে জেঁকে বসে থাকে আর দুনিয়ার লোক তার দোকানে গিয়ে মদ কেনে। ওদিকে দেখ, দুধওয়ালাকে ঘরে ঘরে ধরা দিয়ে দুধ বেচতে হয়।”

“এ বইখানার পরিচয় আপনাদের দেব বলে লেখাটা শুরু করেছিলাম,”-কোন্ বইয়ের কথা বলা হয়েছে? তারপর কী হল?

উত্তর লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী ফ্রেঞ্চ বুক শপে হিটলার সম্পর্কে একটি খাসা বই পেয়েছিলেন। এখানে সেই বইয়ের কথা বলা হয়েছে।

এই বইখানার কথা লিখতে বসে লেখক গৌরচন্দ্রিকা বা ভূমিকা হিসেবেই অনেক কথা লিখে ফেলেন। আজব শহর কলকাতার পরিচয় দিতে দিতেই ভোর হয়ে যায়, কাক ডাকে আর তাঁর কলমের কালিও শেষ হয়ে যায়। তাই হিটলারের বইয়ের পরিচয় অসমাপ্ত থেকে যায়। সেদিন তাঁর লেখা আর শেষ হয় না।

আরও পড়ুন – প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রবন্ধ রচনা

Leave a Comment