কলকাতা বন্দরের ক্রম-অবনতির কারণগুলি লেখো

কলকাতা বন্দরের ক্রম-অবনতির কারণগুলি লেখো
কলকাতা বন্দরের ক্রম-অবনতির কারণগুলি লেখো।
কলকাতা একসময় পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের শ্রেষ্ঠ বন্দর ছিল। বর্তমানে এই বন্দরে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে যা বন্দরটির গুরুত্ব হ্রাস করেছে। সমস্যাগুলি হল-

হুগলি নদীর নাব্যতা হ্রাস: পশ্চিমবঙ্গে হুগলি নদীর নিম্নপ্রবাহ দেখা যায়। ফলে, প্রচুর পরিমাণে বালি, কাদা, পলি নদীবক্ষে সঞ্চিত হওয়ায় নদীর গভীরতা হ্রাস পেয়েছে। তাই সমুদ্রগামী জাহাজ কলকাতা বন্দরে আসতে পারে না।

অসংখ্য নদী বাঁক :
মোহানা থেকে কলকাতা বন্দর পর্যন্ত হুগলি নদীতে অসংখ্য নদী বাঁক রয়েছে যা জাহাজ চলাচলে ব্যাঘাত ঘটায়।

অসংখ্য বালুচর :
মোহানা থেকে কলকাতা বন্দর পর্যন্ত হুগলি নদীতে 15টি বালুচর রয়েছে, ফলে বিদেশি জাহাজগুলি পথ-প্রদর্শক জাহাজ (Pilot ship) ছাড়া কলকাতা বন্দরে প্রবেশ করতে পারে না।

বন্দরের স্খানাভাব :
কলকাতা বন্দরে স্থানাভাবের জন্য একসঙ্গে বেশি জাহাজ নোঙর করতে পারে না। আবার জেটি কম থাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পণ্য বোঝাই বা খালাস কোনোটাই করা যায় না।

পশ্চাদভূমির আয়তন হ্রাস :
ওড়িশার পারাদ্বীপ বন্দর স্থাপনের ফলে কলকাতা বন্দরের পশ্চাদ্‌ভূমি হ্রাস পেয়েছে।

অধিক শুল্ক হার: ভারতের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় কলকাতা বন্দরের শুল্ক হার বেশি। ফলে বহু বিদেশি জাহাজ এখানে পণ্য বোঝাই বা খালাস করতে চায় না।

রপ্তানি পণ্যের চাহিদা হ্রাস :
কলকাতা বন্দর দিয়ে প্রচুর পাট রপ্তানি করা হত। বর্তমানে পাটজাত দ্রব্যের চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় কলকাতা বন্দরের রপ্তানি পণ্যের পরিমাণও কমেছে।

নদীতে ঘন ঘন বান :
হুগলি নদীতে মাঝে মাঝেই প্রবল বন্যা হয় যা অপেক্ষারত জাহাজের ক্ষতি করে।

ব্যয়বহুল: পলি সরানোর জন্য নদীবক্ষে নিয়মিত ড্রেজিং এবং পথ-প্রদর্শক জাহাজের ব্যবস্থা করতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়।

Leave a Comment