তাওবাদ সম্পর্কে কী জানো

তাওবাদ সম্পর্কে কী জানো

অথবা, তাওবাদ কাকে বলে

তাওবাদ সম্পর্কে কী জানো
তাওবাদ সম্পর্কে কী জানো

তাওবাদ

প্রাচীন চিনের জীবনতত্ত্ব ও ধর্মদর্শনের ইতিহাসে কনফুসীয়বাদের পরেই তাওবাদ (Taoism)-এর স্থান। তাও কথার অর্থ হল পথ (Way)। খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতকে এই তাওবাদের আবির্ভাব ঘটেছিল।

(1) তাওবাদের উৎস: তাওবাদের উৎস সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। অধ্যাপক হ্যারল্ড রথ (Harold Roth) মনে করেন যে, গুরু-শিষ্যের পারস্পরিক চিন্তনের পরম্পরা থেকে প্রাথমিক তাও মতবাদের উৎপত্তি হয়েছে। আবার রাসেল কির্কল্যান্ড (Russel Kirkland)-এর মতে, প্রকৃত অর্থে তাওবাদ বলতে যা বোঝানো হয়, তা হান রাজত্বের পূর্বে ছিলই না।

(2) তাওবাদের প্রবর্তক: সাধারণ ঐতিহ্য মতে, তাওবাদের প্রবর্তক ছিলেন চিনা সন্ন্যাসী লাওৎসি বা লাওসে (Lao-Tse / Laozi)। যদিও তাঁর আবির্ভাবকাল সম্পর্কে বিতর্ক আছে, তবে দার্শনিক কনফুসিয়াসের আগেই তাঁর আবির্ভাব ঘটেছিল বলে মনে করা হয়।

(3) তাও মতবাদ: তাওবাদে সবকিছু থেকে সরে থাকার বা নিজেকে প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়েছে। তাওবাদীরা ক্ষমতা, সম্পদ বা মর্যাদালাভের জন্য কোনোরকম সংঘাতের পক্ষপাতী ছিলেন না। তাঁরা বিশ্বাস করতেন যে, এই অনন্ত মহাজাগতিক বিশ্বের এক ক্ষুদ্র বহিঃপ্রকাশ হল মানুষ। পাশাপাশি তাওবাদ প্রকৃতিকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তাওবাদীদের মতে, প্রকৃতির নিয়মেই সমস্ত কিছু পরিচালিত হবে। তাও দর্শনে নীরব স্বাধীনতার মাধ্যমে অনন্ত শান্তির সন্ধান করা হয়েছে।

(4) তাওবাদের প্রসার: চিন-সহ জাপান, তাইওয়ান, কোরীয় উপদ্বীপ ও ভিয়েতনামে তাওবাদের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। বর্তমানে চিনে প্রায় ১৯.৬% তাও ধর্মাবলম্বী রয়েছেন। প্রাচীন চিনা রাজনীতিবিদ ঝাং লিয়াং (Zhang Lian)-এর নেতৃত্বে তাওবাদ একটি পৃথক ধর্মসম্প্রদায়ে পরিণত হয়েছিল। এরপর খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকে (৪২৩ খ্রিস্টাব্দ) তাও ধর্মের প্রধান ব্যক্তি তিয়েন-সি বা প্রধান গুরু হিসেবে অভিহিত হন। বর্তমানে সেদেশে দেড় হাজারেরও বেশি তাও মন্দির (গুয়ান) দেখতে পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment