নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো

নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো।

নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো
নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো

ফটিক চক্রবর্তী ছিল বালকদলের সর্দার। তার মাথায় সর্বদা নিত্যনতুন পরিকল্পনা উদয় হত। নদীর ধারে প্রকান্ড একটা শালকাঠ মাস্তুলে রূপান্তরিত হওয়ার প্রতীক্ষায় পড়ে ছিল। ফটিকের পরিকল্পনা ছিল সেটাকে গড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার। প্রয়োজনের সময় সেই কাঠের মালিক কাঠটিকে দেখতে না পেলে কতটা বিস্মিত, বিরক্ত এবং অসুবিধাগ্রস্ত হয়ে পড়বে তা বুঝেই অন্য সব বালকেরা ফটিকের প্রস্তাবে সম্মতি দেয়।

মনোযোগ সহকারে সকলেই যখন শালকাঠ গড়ানোর উপক্রম করছে, সেই সময়ে ফটিকের ছোটো ভাই মাখনলাল সেই গুঁড়ির উপর গিয়ে বসে পড়ে। একজন এসে ভয়ে ভয়ে মাখনলালকে একটু ঠেললেও সে গম্ভীরভাবে গুঁড়ির উপরেই বসে থাকে। ফটিক তখন ভাই-এর উপর আস্ফালন করে বলে- “দেখ, মার খাবি। এইবেলা ওঠ।” এমতাবস্থায় ফটিকের মনে আরও ভালো একটা খেলার পরিকল্পনা উদয় হয়। এই খেলা আগের খেলার চেয়ে আরও মজাদার হবে বলে মনে হয় ফটিকের। ফটিক তার দলবলকে নির্দেশ দেয়-‘মাখনকে সুদ্ধ ঐ কাঠ গড়াইতে আরম্ভ করা যাক।’

মাখনের মনে হয় এই খেলায় তার গৌরব আছে, কিন্তু এর আনুষঙ্গিক বিপদের দিকটা তার মনে উদিত হল না। ছেলেরা সকলে মিলে কোমর বেঁধে সেই কাঠের গুঁড়ি ঠেলতে শুরু করল এবং স্বাভাবিকভাবেই এক পাক ঘুরতে না ঘুরতেই মাখনলালের আকাঙ্ক্ষিত গৌরববোধ ধূলিসাৎ হল। এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য বালকরা পুলকিত হলেও ফটিক একটু ব্যস্ত হয়ে পড়ল। মাখন তখনই ভূমিশয্যা ছেড়ে ফটিকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে অন্ধের মতো মারতে থাকে। মাখন তার নাকেমুখে আঁচড় কেটে কাঁদতে কাঁদতে ঘরে চলে যায়। এইভাবে নদীতীরে সেই দিনে বালকদলের খেলার আসর ভেঙে যায়।

আরও পড়ুন – দর্শন শব্দের অর্থ MCQ

Leave a Comment