ভূ-বৈচিত্র্যসূচক বা টোপোগ্রাফিকাল মানচিত্রের সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও পাঠের উদ্দেশ্য বা প্রয়োজনীয়তা |
ভূ-বৈচিত্র্যসূচক বা টোপোগ্রাফিকাল মানচিত্রের সংজ্ঞা
গ্রিক শব্দ ‘Topos’-এর অর্থ ‘স্থান’ এবং ‘Grapho’-এর অর্থ ‘আঁকা’। এই দুই শব্দের মিলনে সৃষ্টি হয়েছে Topographical অর্থাৎ, কোনো একটি স্থানের সঠিক অবস্থান, আয়তন এবং প্রাকৃতিক (ভূ-প্রকৃতি, নদ-নদী, স্বাভাবিক উদ্ভিদ) ও সাংস্কৃতিক (পরিবহণ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, জনবসতি প্রভৃতি) বিষয়গুলি বিভিন্ন প্রচলিত প্রতীকচিহ্ন দ্বারা চিত্রায়িত করে যে মানচিত্র তৈরি করা হয়, তাকে ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র বা টপোগ্রাফিকাল মানচিত্র বলে। এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ভূ-দৃশ্যগুলি হল ভূ-প্রকৃতি, নদ-নদী ও জল নির্গম প্রণালী, স্বাভাবিক উদ্ভিদ এবং সাংস্কৃতিক ভূ-দৃশ্যগুলি হল যোগাযোগ ব্যবস্থা, জনবসতি, মন্দির, মসজিদ, বাজার ইত্যাদি।
ভূ-বৈচিত্র্যসূচক বা টোপোগ্রাফিকাল মানচিত্রের বৈশিষ্ট্য
স্কেল: এই মানচিত্র কতকগুলি সুনির্দিষ্ট স্কেল অনুসারে আঁকা হয়। যেমন 1:50000, 1:250000 প্রভৃতি।
বিস্তার: এই মানচিত্রের নির্দিষ্ট অক্ষাংশগত ও দ্রাঘিমাগত বিস্তার থাকে।
প্রতীক চিহ্ন: প্রচলিত নির্দিষ্ট প্রতীক চিহ্ন (Conventional Signs) ও রঙের সাহায্যে এই মানচিত্রের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়গুলি চিত্রায়িত করা হয়।
সূচক সংখ্যা: প্রত্যেক টোপো মানচিত্রের একটি নির্দিষ্ট সূচক সংখ্যা থাকে। যেমন- 728, B 73:16 প্রভৃতি।
উপাদান: এই মানচিত্রে ভূ-প্রকৃতি, নদ-নদী, স্বাভাবিক উদ্ভিদ প্রভৃতি প্রাকৃতিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, জনবসতি প্রভৃতি সাংস্কৃতিক উপাদান উপস্থাপন করা হয়।
প্রকাশনা: ভারতবর্ষে Survey of India এই মানচিত্র প্রস্তুত করে ও প্রকাশ করে।
ভূ-বৈচিত্র্যসূচক বা টোপোগ্রাফিকাল মানচিত্রের পাঠের উদ্দেশ্য
টোপোগ্রাফিকাল মানচিত্র পাঠের কতগুলি উদ্দেশ্য আছে। যথা– নির্দিষ্ট স্থানের ভূ-প্রকৃতি, নদ-নদী, স্বাভাবিক উদ্ভিদ ইত্যাদি প্রাকৃতিক বিষয়গুলি এবং সড়কপথ, রেলপথ, জনবসতি ইত্যাদি সাংস্কৃতিক বিষয়গুলি সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ করা; প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক উপাদানের পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে সমস্যা চিহ্নিত করা; নির্দিষ্ট অঞ্চলের বিভিন্ন সম্পদের সমীক্ষা করা: সামরিক ক্ষেত্রে নানান উদ্দেশ্যসাধন করা; আঞ্চলিক উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ ও রূপায়ণের চেষ্টা করা প্রভৃতি।