সামরিক ক্ষেত্রে কীভাবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হয় তা আলোচনা করো

সামরিক ক্ষেত্রে কীভাবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হয় তা আলোচনা করো

সামরিক ক্ষেত্রে কীভাবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হয় তা আলোচনা করো
সামরিক ক্ষেত্রে কীভাবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হয় তা আলোচনা করোসামরিক ক্ষেত্রে কীভাবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হয় তা আলোচনা করো

ভূমিকা

পঞ্চদশ শতক থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সামরিক ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়। ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়া, স্পেন, তুরস্ক ও চিনে সামরিক বা যুদ্ধ সংক্রান্ত প্রযুক্তির ব্যাপক প্রয়োগ ঘটতে থাকে।

(1) বারুদের ব্যবহার: পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে ইউরোপে যুদ্ধক্ষেত্রে বারুদের ব্যবহার প্রচুর বৃদ্ধি পায়। ক্রমশ বারুদের ব্যবহার আগ্নেয়াস্ত্র তৈরিতে অপরিহার্য হয়ে ওঠে, যা সামরিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনে।

(2) কামানের ব্যবহার: বারুদের উৎপাদন ও ধাতুবিদ্যার অগ্রগতি উন্নতমানের কামান ও কামানের গোলা তৈরিতে সাহায্য করে। ফলে ভারী ও বড়ো কামান দ্বারা অবরুদ্ধ দুর্গের দেয়াল ও দরজা ভেঙে খোলা সম্ভব হয়। জাহাজে দূরপাল্লার কামান বসানো সম্ভব হলে নৌযুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়।

(3) যুদ্ধজাহাজের পরিবর্তন: কামান বসানো জাহাজ যেন নৌযুদ্ধের ক্ষেত্রে দ্রুত ছুটতে বা ঘুরতে পারে তার জন্য দ্রুতগতিসম্পন্ন ছোটো জাহাজ নির্মাণ শুরু হয়। অন্যদিকে, দূরদূরান্তের দীর্ঘদিনের যুদ্ধের জন্য বড়ো জাহাজ নির্মাণেও নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটে।

(4) দুর্গ নির্মাণে নতুন উদ্ভাবন: কামানের আক্রমণ থেকে দুর্গকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে ইতালীয় স্থপতি আরবেরতি করাতের দাঁতের মতো অনিয়মিত রেখায় দুর্গের প্রাচীর তৈরির নতুন কৌশল আবিষ্কার করেন। এই কৌশল ‘ট্রেস ইটালিয়েন’ নামে পরিচিত। এই দুর্গের ভিতরে কামান বসিয়ে শত্রুর ওপরে আঘাত হানা এবং শত্রুর আঘাত প্রতিরোধ উভয়ই সহজতর হয়।

(5) যুদ্ধ হাতুড়ি ও হেলমেট : প্রযুক্তির ব্যবহার অস্ত্রশস্ত্রের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনে। ইটালিতে যুদ্ধ হাতুড়ি বা War hammer নামে এক ধরনের ভারী ও লম্বা অস্ত্র তৈরি করে ব্যবহার শুরু হয় যা যুদ্ধক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর হয়ে ওঠে। নতুন ধরনের হেলমেট যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে।

(6) নতুন বন্দুকের ব্যবহার: হাতে বহন করে চালানো যায় এমন আগ্নেয়াস্ত্রের খোঁজে নির্মিত হয় লম্বা নলযুক্ত পিস্তল ও গাদা বন্দুক। নতুন প্রযুক্তিতে তৈরি সহজে বহনযোগ্য আগ্নেয়াস্ত্রগুলি যুদ্ধক্ষেত্রে অত্যন্ত উপযোগী হয়ে ওঠে।

মূল্যায়ন

সামরিক ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার নতুন নতুন মারণাস্ত্র তৈরি করে এবং যুদ্ধের তীব্রতা ও ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে। ফলে সার্বিকভাবে ইউরোপ তথা বিশ্বের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী প্রভাব অনুভূত হয়।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment