সাম্য বলতে কী বোঝ? |
‘সাম্য’ সম্পর্কে বিভিন্ন রাষ্ট্র-দার্শনিকের বিভিন্ন মত পরিলক্ষিত হয়। সামাকে কেউ কেউ বিচারবিবেচনার মধ্যে একরূপতা বলে মনে করেছেন। আর্নেস্ট বার্কার সামাকে এমন একটি প্রারান্ত হিসেবে দেখতে চেয়েছেন যেখান থেকে আমরা শুরু করি। অর্থাৎ ‘সাম্য’ বলতে সমাপ্তিকে বোঝায় না, সাম্য হল প্রারম্ভ।
A Grammar of Politics নামক প্রশ্নে অধ্যাপক ল্যাঙ্কি দেখিয়েছেন যে, সাম্যকে তিনটি নীতির দ্বারা প্রকাশ করা যায়। যথা-[1] সাম্য বলতে বিশেষ সুযোগসুবিধার অনুপস্থিতিকে বোঝায়, [2] সকলের পর্যাপ্ত পরিমাণে সুযোগসুবিধা লাভের ক্ষেতকে বলে সাম্য, [3] সাম্য হল অর্থনৈতিক দিক থেকে একটি আনুপাতিক সমস্যা।
মার্কসবাদীরা মনে করেন, বৈষম্যমূলক সমাজে সামা থাকতে পারে না। দাস সমাজ, সামান্ততান্ত্রিক সমাজ ও ধনতান্ত্রিক সমাজ-প্রতিটি স্তরেই রয়েছে এক শ্রেণি থেকে অপর শ্রেণিকে শোষণ করার প্রয়াস। সমাজতান্ত্রিক সমাজে শ্রমিক শ্রেণি ক্ষমতা হাতে পেলে ধীরে ধীরে রাষ্ট্রকাঠামোটির পরিবর্তন ঘটবে এবং শেষে শ্রেণিবিরোধ মিটে গিয়ে শ্রেণির অবসান ঘটবে, রাষ্ট্রও বিলুপ্ত হবে এবং প্রকৃত সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে।
সার্বিক দিক থেকে বলা যায় যে, সাম্য হল ব্যক্তির আয় ও মর্যাদাগত ক্ষেত্রে সকলের জন্য সম-অধিকার। সাম্য তাই কয়েকটি অর্থকে প্রকাশ করে। যেমন- প্রথমত, সাম্যের ক্ষেত্রে প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দৃষ্টিতে সমান। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রীয় আইন দ্বারা সকল নাগরিকের সমান সুযোগসুবিধা প্রদান, তৃতীয়ত, বিভিন্ন অর্থনৈতিক বৈষম্যের অবসান এবং চতুর্থত, কোনোপ্রকার বিশেষ সুযোগসুবিধা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীই ভোগ করবে না-তা সকলের।