“অ্যাঁ, তুই আমার গায়ে হাত তুলিস”-বক্তা কেন এরূপ মন্তব্য করেছেন?
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ ছোটোগল্পের ফটিক গ্রামের অবাধ্য দুরন্ত ছেলে। সারাদিন সদলবলে কখনও নদীর ধারে আবার কখনও খোলা মাঠে শব্দে দৌড়ে বেড়ায়। ফটিকের কনিষ্ঠ ভাই মাখনলাল দাদার স্বভাবের ঠিক বিপরীত। ফলে ফটিকের সঙ্গে মাখনলালের নিত্য কলহ ও সংঘাত লেগেই থাকত। একবার নদীর তীরে পড়ে থাকা প্রকাণ্ড একটি শালকাঠকে ফটিক ও তার দলবল গড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার খেলা, খেলবার সময় মাখনলাল সেই কাঠের উপর গিয়ে বসে। কাঠ একটু গড়াতেই মাখনলাল মাটিতে পড়ে গিয়ে ফটিককে আক্রমণ শুরু করে। অবশেষে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে ফিরে যায় এবং বাড়িতে গিয়ে মায়ের কাছে দাদার নামে অভিযোগ করে।
বাঘা বাগদি ফটিককে জোর করে বাড়িতে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর ফটিককে দেখামাত্র তার মা অগ্নিমূর্তি ধরে বলেন- “আবার তুই মাখনকে মেরেছিস!” ফটিক মায়ের অভিযোগ অস্বীকার করলেও মাখনলাল বারংবার দাদার নামে অভিযোগ করতেই থাকে, সে বলে-“হাঁ, মেরেছে।” মা তখন মাখনের পক্ষ নিয়ে ফটিককে দু-তিনটি চপেটাঘাত করেন। মাখনের জন্য অকারণে প্রচন্ডভাবে মার খাওয়াতে ফটিক ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছিল। মায়ের ব্যবহার তার কাছে বিমাতৃসুলভ বলে মনে হয়।
অন্যায়কে সমর্থন আর যেই করুক মা যে করবেন না-এটাই ফটিক ভেবেছিল। সেজন্য এরকম অভাবনীয় আচরণে ও শারীরিক নির্যাতনে নির্যাতিত এবং মানসিক আঘাতে জর্জরিত ফটিক মাকে ঠেলে দেয়। ইতিপূর্বে ফটিক কখনও এইরকম ব্যবহার তার মায়ের সঙ্গে করেনি। ফলে ফটিকের ব্যবহারে মা কেবল ক্ষুব্ধ হননি, একইসঙ্গে তিনি হতবাক ও আশ্চর্য হয়ে এরূপ মন্তব্য করেছেন।
আরও পড়ুন – দর্শন শব্দের অর্থ MCQ