“থাক, তোকে আর দালালি করতে হবে না। যা ভাগ্ ভাগ”- উক্ত উক্তিটি কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে? কে, কাকে এ কথাগুলি বলেছে? উক্ত উক্তির আলোকে বক্তার মানসিকতার পরিচয় দাও।
উৎস
ফ্যাসিবিরোধী লেখক ও শিল্পীসংঘ এবং গণনাট্য সংঘের সঙ্গে যুক্ত থেকেই বিজন ভট্টাচার্যের নাট্যজীবনের সূত্রপাত ‘আগুন’ নাটকে। এই ‘আগুন’ থেকেই উক্ত উক্তিটি চয়ন করা হয়েছে।
বক্তা ও উদ্দিষ্ট ব্যক্তি
‘আগুন’ নাট্যাংশে মহাজনের গাঁটের লোক সিভিক গার্ড, ৪র্থ পুরুষটিকে হেয় প্রতিপন্ন করে, নিদারুণ অবজ্ঞায় এই কথাটি বলেছে।
বক্তার মানসিকতা
১৩৫০ বঙ্গাব্দে রক্তবীজের মতো ছড়িয়ে পড়ে দুর্ভিক্ষের ক্ষুধার্ত হায়না। চারিদিকে বুভুক্ষু মানুষের কাতর আর্তনাদ। তার উপর কালোবাজারি মজুতদারের দল তাদের অর্থলিপ্সাকে চরিতার্থ করতে। ভীষণ উদ্গ্রীব। এই সময় দু-মুঠো খাদ্যের জন্য ‘মানুষের ক্যারিকেচার’-রা • দীর্ঘ প্রতীক্ষার লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়।
তখন দণ্ডমুণ্ডের কর্তা সিভিক গার্ড নিজের ক্ষমতা জাহির করতে, লাইন ভাঙার অপরাধে ৪র্থ পুরুষকে দোষী সাব্যস্ত করে নির্বিচারে, বর্বরোচিতভাবে লাঞ্ছিত করে। মুসলমান-এর উক্তিতে প্রতিবাদ প্রকাশ পেয়েছে-
“ওর কী দোষ আছে মশাই যে আপনি মেরে বসলেন?” এরই পরিপ্রেক্ষিতে চতুর্থ পুরুষ প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। তখন ‘মারনেওয়ালা’ সিভিক গার্ডের উক্ত বাচনভঙ্গিতে প্রতিফলিত হয়-
- (ক) আবহমান কাল থেকে প্রবাহমান শোষক-শোষিতের দ্বন্দু, শ্রেণিবৈষম্য।
- (খ) সাধারণ মানুষের উপর পীড়কের অবজ্ঞা, অমানবিক-নিষ্ঠুর- হৃদয়হীনতা, নীচ মানসিকতা।
- (গ) দম্ভের বড়াই-এ অন্ধ হয়ে-ক্ষমতার আস্ফালন, আত্মরিম্ভতা, আত্মঅহংকারী, অনুভূতিহীন, বিবেকহীন মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন – নদীতীরে বালকদের খেলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো