ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি নির্মাণ শিল্পে প্রযুক্তিবিদ্যার অগ্রগতির পরিচয় দাও
ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি নির্মাণ শিল্পে প্রযুক্তিবিদ্যার অগ্রগতি
বিভিন্ন ছোটো ছোটো যন্ত্রপাতি নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রযুক্তিবিদ্যায় অভাবনীয় উন্নতি ঘটে।
(1) আতস কাচ আবিষ্কার: প্রখ্যাত বিজ্ঞানী রজার বেকন আনুমানিক ১২৫০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ আতস কাচ আবিষ্কার করেন। তাঁর রচনা ওপাস মাজুস (Opus Majus) ছিল আলোকবিজ্ঞানের এক তাৎপর্যপূর্ণ গ্রন্থ।
(2) ছাপাখানা উদ্ভাবন: ইউরোপে আধুনিক ছাপাখানা আবিষ্কৃত হয় পঞ্চদশ শতকে। এর ফলে ছাপানো বইয়ের মাধ্যমে অনেক বেশিসংখ্যক মানুষের কাছে জ্ঞানের বিস্তার ঘটানো সম্ভবপর হয়ে ওঠে, যা ছিল এক বৈপ্লবিক ঘটনা।
(3) ঘড়ি আবিষ্কার: প্রাচীন কালে মিশর ও ব্যাবিলনে আবিষ্কৃত হয়েছিল সূর্যঘড়ি বা ছায়াঘড়ি। অবশ্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্থানভেদে ঘড়ি তৈরির পদ্ধতিতে আসে নানান পরিবর্তন। আনুমানিক ১৫১১ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ জার্মানির নুরেমবার্গের (Nuremberg) ঘড়ি প্রস্তুতকারী পিটার হেনলেইন (Peter Henlein) প্রথম স্প্রিংচালিত ঘড়ি আবিষ্কার করেন। ১৬৫৭ খ্রিস্টাব্দ (মতান্তরে ১৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ) নাগাদ ডাচ গণিতজ্ঞ ক্রিশ্চিয়ান হাইজেন্স (Christiaan Huygens) আবিষ্কার করেন প্রথম পেন্ডুলাম ঘড়ি (Pendulum Clock), যা প্রথম কার্যকর ঘড়িও বটে।
(4) যন্ত্রাংশের সংযুক্তি: প্রাত্যহিক জীবনের নানা দরকারি ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি তৈরি করতে গিয়ে অনেকসময় বিভিন্ন যন্ত্রাংশের সঙ্গে যন্ত্রাংশ জুড়ে নতুন যন্ত্র তৈরি করা হত। এভাবে বিভিন্ন সংযোগকারী যান্ত্রিক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ঘটে। পদচালিত যান্ত্রিক প্রযুক্তি, বেল্টের ব্যবহার প্রভৃতি ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি ঘটানো হয়।
(5) পরিবহণ: প্রযুক্তির সাহায্যে ইউরোপে পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ছিল এক অভূতপূর্ব ঘটনা। সেতু তৈরি, নতুন নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হত। যানবাহন তৈরিতে লৌহ প্রযুক্তির ভূমিকা ছিল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
(6) অন্যান্য ক্ষেত্র: এ ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রগুলি, যেমন রুটি প্রস্তুত, মাদক জাতীয় পানীয় উৎপাদন ইত্যাদিতেও নতুন নতুন যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হতে থাকে, যার পিছনে প্রযুক্তির ভূমিকা ছিল সক্রিয়।
আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর