জাহাজ নির্মাণ প্রযুক্তির উন্নতির ফলাফল আলোচনা করো
অথবা, জলপথ পরিবহনে প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলাফল কী হয়েছিল

মানবসভ্যতার ইতিহাসে জাহাজ নির্মাণ প্রযুক্তির উন্নতি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমুদ্রপথে সামরিক অভিযান, বাণিজ্যিক আদান-প্রদান, সাংস্কৃতিক বিনিময়ের প্রসারে এর বিশেষ প্রভাব লক্ষ করা গিয়েছিল।
জাহাজ নির্মাণ প্রযুক্তির উন্নতির ফলাফল
(1) সমুদ্রপথ আবিষ্কার: উন্নত প্রযুক্তির সহযোগিতায় তৈরি জাহাজে চড়ে স্পেন, পোর্তুগালের মতো বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশের অভিযাত্রীগণ ভারত-সহ নানা দেশে পৌঁছোনোর সমুদ্রপথ আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়।
(2) নতুন ভূখন্ড আবিষ্কার: এসময় নাবিকরা সমুদ্রপথে পাড়ি দিয়ে নতুন নতুন ভূখণ্ড আবিষ্কার করেন, যেমন- আমেরিকা (নতুন বিশ্ব), ব্রাজিল, ফিলিপাইনস দ্বীপপুঞ্জ, উত্তমাশা অন্তরীপ প্রভৃতি।
(3) ব্যাবসাবাণিজ্য: সদ্য আবিষ্কৃত দেশগুলির সঙ্গে, নতুন আবিষ্কৃত জলপথে ইউরোপীয়রা বাণিজ্য শুরু করে। এতে তাদের আর্থিক মুনাফা হয় প্রচুর।
(4) প্রাচীন সভ্যতার বিলুপ্তি: ভৌগোলিক আবিষ্কারের সূত্র ধরেই মায়া, অ্যাজটেক, ইনকার মতো সুপ্রাচীন সভ্যতাগুলি বিদেশি শক্তির হাতে ধ্বংস হয়ে যায়।
(5) উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা: আবিষ্কারক দেশসমূহ নতুন ভূখণ্ডগুলিতে উপনিবেশ গড়ে তুললে, কালক্রমে সেসব দেশে শোষণ ও অত্যাচারের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
(6) ক্রীতদাস ক্রয়বিক্রয়: ইউরোপে আফ্রিকা-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রীতদাস আমদানি করা হত। এ ছাড়াও উন্নত জলযান ব্যবহারের মাধ্যমেই এক দেশ থেকে অন্য দেশে ক্রীতদাস ব্যাবসা চালানো সম্ভব হয়। সবশেষে বলা যায়, জাহাজ নির্মাণ প্রযুক্তির উন্নতি কেবলমাত্র সামরিক ক্ষমতার বিস্তার বা সমুদ্রযাত্রার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এর প্রভাব পড়েছিল বিশ্বের সমাজ, রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও।
আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর