সামুদ্রিক অভিযান ও ভৌগোলিক আবিষ্কারের ইতিহাসে আমেরিগো ভেসপুচি এবং ফার্দিনান্দ ম্যাগেলানের অবদান আলোচনা করো

সামুদ্রিক অভিযান ও ভৌগোলিক আবিষ্কারের ইতিহাসে আমেরিগো ভেসপুচি এবং ফার্দিনান্দ ম্যাগেলানের অবদান আলোচনা করো

সামুদ্রিক অভিযান ও ভৌগোলিক আবিষ্কারের ইতিহাসে আমেরিগো ভেসপুচি এবং ফার্দিনান্দ ম্যাগেলানের অবদান আলোচনা করো
সামুদ্রিক অভিযান ও ভৌগোলিক আবিষ্কারের ইতিহাসে আমেরিগো ভেসপুচি এবং ফার্দিনান্দ ম্যাগেলানের অবদান আলোচনা করো

সামুদ্রিক অভিযান ও ভৌগোলিক আবিষ্কারের ক্ষেত্রে পোর্তুগালের পাশাপাশি স্পেনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। যেসকল স্পেনীয় নাবিক এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন আমেরিগো ভেসপুচি এবং ফার্দিনান্দ ম্যাগেলান।

আমেরিগো ভেসপুচির অবদান

কলম্বাস কর্তৃক নতুন একটি মহাদেশ আবিষ্কারের অজানা রহস্য উন্মোচন করেন ফ্লোরেন্সের ভূগোলবিদ ও স্পেনীয় অভিযাত্রী আমেরিগো ভেসপুচি (Amerigo Vespucci, ১৪৫১ মতান্তরে ১৪৫৫-১৫১২ খ্রিস্টাব্দ)।

(1) অভিযান: ব্যক্তিগত উদ্যোগে দুটি স্পেনীয় জাহাজ নিয়ে সমুদ্রপথে ভেসপুচি ব্রাজিলে পৌঁছোন (১৪৯৯ খ্রিস্টাব্দ)। এর দুবছর পর কেব্রালের আবিষ্কৃত সমুদ্রপথ ধরে আরও অগ্রসর হয়ে তিনি পৌঁছোন আমেরিকার পূর্ব উপকূলে। সম্ভবত তিনি প্লেট নদীর উৎসমুখে (১৫০২ খ্রিস্টাব্দ) পৌঁছেছিলেন। কলম্বাসের বিস্ময়কর আবিষ্কারের সত্য উদ্‌ঘাটন করে আমেরিগো ঘোষণা করেন (১৫০৩ খ্রিস্টাব্দ) যে, আটল্যান্টিকের অন্যপ্রান্তে আবিষ্কৃত এই ভূখণ্ড একটি নতুন মহাদেশ, একটি নতুন বিশ্ব (New World)। এর ঠিক চার বছর পরে (১৫০৭ খ্রিস্টাব্দ) জার্মান অধ্যাপক মার্টিন ওয়াল্ডসিমুলার (Martin Waldseemuller) এই নতুন মহাদেশের নাম আমেরিগো ভেসপুচির নামানুসারে দেন আমেরিকা। প্রথমে শুধুমাত্র ভূখণ্ডের দক্ষিণাংশ ‘আমেরিকা’ নামে অভিহিত হয়েছিল। তবে পরবর্তীকালে প্রমাণিত হয় যে, এই বিশাল ভূখণ্ডের উত্তরভাগ একই মহাদেশের অংশ। বলাবাহুল্য, ভেসপুচির এই অভিযানগুলি আমেরিকার আকার ও আয়তন সম্পর্কে ইউরোপীয়দের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে। এই জ্ঞান পরবর্তী অভিযাত্রীদের ভৌগোলিক আবিষ্কারের ক্ষেত্রে প্রভূত সাহায্য করেছিল।

ফার্দিনান্দ ম্যাগেলানের অবদান 

পোর্তুগিজ নাবিক ফার্দিনান্দ ম্যাগেলান (Ferdinand Magellan, ১৪৮০-১৫২১ খ্রিস্টাব্দ) স্পেন সম্রাট প্রথম চার্লস (Charles I)-এর পৃষ্ঠপোষকতায় ১৫১৯ খ্রিস্টাব্দে শুরু করেন তাঁর পশ্চিমমুখী যাত্রা।

(1) অভিযান: ম্যাগেলান পাঁচটি জীর্ণ জাহাজ এবং মিশ্র জাতির নাবিক-সহ এক বিপজ্জনক ও দুঃসাহসিক অভিযানের নেতৃত্ব দেন। আটল্যান্টিক পেরিয়ে তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ দিক ঘুরে আরও অগ্রসর হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে (দক্ষিণ সমুদ্র) প্রবেশ করেন। এই মহাসমুদ্রের শান্ত রূপের জন্যই ম্যাগেলান এর নামকরণ করেন প্রশান্ত মহাসাগর। এরপর প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে অন্য নতুন একটি দ্বীপপুঞ্জে উপস্থিত হন তিনি। স্পেনের যুবরাজ ফিলিপের (Philip) নামানুযায়ী এর নাম রাখা হয় ফিলিপাইনস (Philippines) দ্বীপপুঞ্জ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত স্থানীয় অধিবাসীদের সঙ্গে এক সংঘর্ষে (ম্যাকটানের যুদ্ধ) ম্যাগেলান জড়িয়ে পড়েন এবং ১৫২১ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রাণ হারান। সর্বপ্রথম জলপথে ভূপ্রদক্ষিণকারী হিসেবে ইতিহাসে ফার্দিনান্দ ম্যাগেলান চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment