ভাব সম্মিলন প্রশ্ন উত্তর Class 11 বাংলা 2nd সেমিস্টার
এখানে একাদশ শ্রেণীর ভাব সম্মিলন প্রশ্ন উত্তর শেয়ার করা হলো। প্রতিটি প্রশ্নের মান: ২ // Class 11 Second Semester Bengali Question Answer // ভাব সম্মিলন কবিতার কবি বিদ্যাপতি
১। “কি কহব রে সখি আনন্দ ওর।”-পদটির পদকর্তা কে? পদটির উৎস নির্ণয় করো।
পাঠ্য পদটির রচয়িতা প্রাক্-চৈতন্য যুগের বৈষ্ণব পদাবলির উল্লেখযোগ্য কবি বিদ্যাপতি। পদটি কবি বিদ্যাপতির রচিত ভাবোল্লাস বা ভাব সম্মিলন পর্যায়ের অন্তর্গত।
২। বৈষুব পদাবলি সাহিত্যে ভাব সম্মিলন বা ভাবোল্লাস কী?
বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের বিভিন্ন পর্যায়ের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য পর্যায়। কংস বধের জন্য কৃষ্ণ বৃন্দাবনবাসী ও রাধাকে ছেড়ে মথুরা চলে যান। বাস্তব জগতে যখন রাধাকৃষ্ণের মিলন সম্ভব হল না, তখন বৈষ্ণব কবিরা ভাবের জগতে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে রাধার মিলন ঘটিয়ে যে পদগুলি রচনা করেছিলেন, সেগুলিই ভাবসম্মিলনের পদ।
৩। বিদ্যাপতির জন্ম-মৃত্যু সাল ও জন্মস্থানের উল্লেখ করো।
বিদ্যাপতির জন্ম আনুমানিক ১৩৫২ খ্রিস্টাব্দে এবং মৃত্যু আনুমানিক ১৪৪৮ খ্রিস্টাব্দে। মিথিলার অন্তর্গত বিসফী গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
৪। বিদ্যাপতি তৎকালীন সময়ে যেসব রাজার আনুগত্য লাভ করেছিলেন, তাঁদের নাম লেখো এবং তাঁর উপাধি কী ছিল?
বিদ্যাপতি তৎকালীন সময়ে রাজা কীর্তিসিংহ, দেবসিংহ, শিবসিংহ, পদ্মসিংহ প্রমুখ রাজার আনুগত্য লাভ করেছিলেন। বিদ্যাপতির উপাধি ছিল-অভিনব জয়দেব, মৈথিলি কোকিল প্রমুখ।
৫। বিদ্যাপতি কোন্ ভাষায় পদ রচনা করে জনপ্রিয় হয়েছিলেন? পরবর্তীকালে কোন্ কোন্ কবি সেই ভাষায় সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন?
বিদ্যাপতি ব্রজবুলি ভাষায় পদ রচনা করে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে গোবিন্দদাস, জ্ঞানদাস, এমনকি আধুনিক যুগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর সাহিত্যে ব্রজবুলি ভাষার ব্যবহার করেছেন।
৬। ব্রজবুলি ভাষা কী?
ব্রজবুলি মধ্যযুগের একটি কৃত্রিম মিত্র কাব্যভাষা। মৈথিলি ও বাংলা ভাষার মিশ্রণে ব্রজবুলি ভাষার সৃষ্টি। মিথিলার কবি বিদ্যাপতি এই ভাষার উদ্ভাবক।
ভাব সম্মিলন কবিতার প্রশ্ন উত্তর ক্লাস 11 সেকেন্ড সেমিস্টার বাংলা
প্রশ্নমান: ২
৭। ‘খেলন কবি’ কাকে বলা হয়? কোন্ কাব্যে কবি নিজেকে ‘খেলন কবি’ বলেছেন?
‘খেলন কবি’ বলা হয় বিদ্যাপতিকে। বিদ্যাপতি তাঁর ‘কীর্তিলতা’ কাব্যে নিজেকে ‘খেলন কবি’ বলে অভিহিত করেছেন।
৮। বিদ্যাপতির ভাবশিষ্য কাকে বলা হয়? কে বিদ্যাপতির পদ আস্বাদন করে চরম আনন্দ লাভ করতেন?
বৈষ্ণব পদাবলির কবি গোবিন্দদাস কবিরাজকে বিদ্যাপতির ভাবশিষ্য বলা হয়। স্বয়ং চৈতন্যদেব বিদ্যাপতির রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক পদ পাঠ করে চরম আনন্দ লাভ করতেন।
৯। বিদ্যাপতিকে অভিনব জয়দেব বলা হয় কেন?
কবি বিদ্যাপতি রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক পদ রচনায় সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছিলেন জয়দেবের ‘গীতগোবিন্দ’ কাব্যের দ্বারা। গীতগোবিন্দ কাব্যের ভাব, ভাষা, ছন্দ আত্মীকরণ করে তাঁর রচিত পদে প্রকাশ করেছেন। তাই তাঁকে ‘অভিনব জয়দেব’ আখ্যায় ভূষিত করা হয়।
১০। বিদ্যাপতির ভূগোল বিষয়ক গ্রন্থের নাম লেখো। সেটি কোন্ ভাষায় লেখা?
বিদ্যাপতির ভূগোল বিষয়ক গ্রন্থের নাম ‘ভূ-পরিক্রমা’। ভূপরিক্রম গ্রন্থটি সংস্কৃত ভাষায় লেখা।
১১। বিদ্যাপতির অবহট্ঠ ভাষায় লেখা দুটি গ্রন্থের নাম লেখো। কোন্ রাজার পৃষ্ঠপোষকতায় কাব্য দুটি রচিত?
বিদ্যাপতির অবহট্ট ভাষায় লেখা দুটি গ্রন্থ হল- (১) কীর্তিলতা এবং (২) কীর্তিপতাকা। ‘কীর্তিলতা’ গ্রন্থটি রাজা কীর্তিসিংহের এবং ‘কীর্তিপতাকা’ গ্রন্থটি রাজা শিবসিংহের পৃষ্ঠপোষকতায় রচিত।
১২। বিদ্যাপতিকে ‘মৈথিলি কোকিল’ বলা হয় কেন?
বিদ্যাপতি মিথিলার অধিবাসী ছিলেন বলে তিনি মৈথিলি কবি। পাশাপাশি তাঁর রচিত রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক পদগুলি কোকিলের কণ্ঠস্বরের মতো এতটাই সুমিষ্ট ও হৃদয়স্পর্শী ছিল-যা সকলকে আকৃষ্ট করত। তাই তাকে ‘মৈথিলি কোকিল’ বলা হয়।
ক্লাস 11 সেকেন্ড সেমিস্টার বাংলা বিষয়ের ভাব সম্মিলন কবিতার প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নমান : ২
১৩। “কি কহব রে সখি আনন্দ ওর।”-‘আনন্দ ওর’ শব্দের অর্থ কী? কথাগুলি কে বলেছেন?
‘আনন্দ ওর’ শব্দের অর্থ সীমাহীন আনন্দ। এই কথাটি রাধা তাঁর সখীকে বলেছেন।
১৪। “চিরদিনে মাধব মন্দিরে মোর।”-কে, কাকে কার সম্পর্কে এ কথাটি বলেছেন? ‘মাধব’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?
আলোচ্য উক্তিটি রাধা কৃষ্ণ সম্পর্কে তাঁর সখীকে জানিয়েছেন। ‘মাধব’ বলতে শ্রীকৃষ্ণের কথা বলা হয়েছে।
১৫। “… সখি আনন্দ ওর।”-রাধার সীমাহীন আনন্দ বলতে কী বলা হয়েছে?
দীর্ঘ বিরহের পর রাধা ভাবজগতে বা কল্পনায় তাঁর প্রাণপ্রিয় কৃষ্ণের সঙ্গে মিলিত হয়ে চরম আনন্দ লাভ করেছেন-এটিই রাধার কাছে সীমাহীন আনন্দ।
১৬। “চিরদিনে মাধব মন্দিরে মোর।”-কে, কাকে এ কথা বলেছেন? ‘মন্দির’ শব্দের অর্থ লেখো।
শ্রীরাধিকা তাঁর সখীকে কৃষ্ণের চিরকালীন উপস্থিতি সম্পর্কে বলেছেন।
‘মন্দির’ শব্দের অর্থ গৃহ বা বাড়ি।
১৭। “চিরদিনে মাধব মন্দিরে মোর।।”- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
রাধা তাঁর সখিকে জানান, তাঁর হৃদয়মন্দিরে সর্বদা মাধব অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণের অবস্থান।
১৮। “পাপ সুধাকর যত দুখ দেল।”-অংশটির উৎস নির্ণয় করো। ‘সুধাকর’ শব্দের অর্থ কী?
আলোচ্য অংশটি কবি বিদ্যাপতির ‘ভাব সম্মিলন’ পদ থেকে নেওয়া হয়েছে। ‘সুধাকর’ শব্দের অর্থ চন্দ্র বা চাঁদ।
একাদশ শ্রেণি দ্বিতীয় সেমিস্টার বাংলা বিষয়ের ভাব সম্মিলন কবিতার প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নমান : ২
১৯। “পাপ সুধাকর যত দুখ দেল।”-উক্তিটি কার? পাপ সুধাকর বলা হয়েছে কেন?
উক্তিটি বিদ্যাপতির ‘ভাব সম্মিলন’ পদে রাধার। রাধা যখন কৃষ্ণ বিরহে কাতর, সেই সময় আকাশের সুধাকর অর্থাৎ চাঁদের বাঁধভাঙা হাসি রাধা অনুভব করেছিলেন বলে ‘পাপ সুধাকর’ অভিধা দিয়েছেন।
২০। “… যত দুখ দেল।”-কে, কাকে দুঃখ দিয়েছিল? দুঃখ পাওয়ার কারণ কী?
আকাশের সুধাকর অর্থাৎ চাঁদ শ্রীরাধাকে দুঃখ দিয়েছিল। কারণ কৃষ্ণের সঙ্গে দীর্ঘ বিচ্ছেদের সময় রাধার দুঃখের অন্ত ছিল না। রাধার এই অবস্থা দেখে চাঁদের বাঁধভাঙা হাসি দুঃখের মাত্রা উপাদান বৃদ্ধি করেছিল। টাকভীন তালাক দি
২১। “পিয়া-মুখ-দরশনে তত সুখ ভেল।।”-পিয়ামুখ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? ‘ভেল’ শব্দের অর্থ কী?
‘পিয়ামুখ’ বলতে রাধার প্রাণপ্রিয় শ্রীকৃষ্ণের মুখের কথা বল হয়েছে।
‘ভেল’ শব্দের অর্থ হইল বা হল।
২২। “পিয়া-মুখ-দরশনে তত সুখ ভেল।।’-পঙ্ক্তিটির উৎস নির্ণয় করো। পঙ্ক্তিটি সরল বাংলায় লেখো।
আলোচ্য পঙ্ক্তিটি কবি বিদ্যাপতির ‘ভাব সম্মিলন’ পদ থেকে গৃহীত।
পঙ্ক্তিটির সরল বাংলা হল-প্রিয়ামুখ (কৃষ্ণের) দেখে অধিক সুখ হল।
২৩। “আঁচর ভরিয়া যদি মহানিধি পাই।”-উক্তিটি কে, কাকে বলেছেন? ‘আঁচর’ এবং ‘মহানিধি’ শব্দের অর্থ লেখো।
উক্তিটি রাধা তাঁর সখী বলেছেন।
‘আঁচর’ শব্দের অর্থ-আঁচল এবং ‘মহানিধি’ শব্দের অর্থ-মহামূল্য রত্ন।
২৪। ‘আঁচর ভরিয়া মহানিধি’ পেলে রাধা কী করবেন বলে জানিয়েছেন?
রাধা তাঁর সখীকে জানিয়েছেন যে, তিনি আঁচল ভরে মহামূল্য রত্ন পেলে তাঁর প্রিয় কৃষ্ণকে আর দূরে পাঠাবেন না।
Class XI Second Semester
বাংলা বিষয়ের ভাব সম্মিলন কবিতার ২ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নমান : ২
২৫। “তব হাম পিয়া দূর দেশে না পাঠাই।।”-কে, কাকে, কার সম্পর্কে এ কথা বলেছেন? বক্তা পিয়াকে কেন দূর দেশে পাঠাতে চান না?
পঙ্ক্তিটি রাধা তাঁর প্রাণপ্রিয় কৃষ্ণ সম্পর্কে সখীকে বলেছেন। কৃষ্ণ বিচ্ছেদে রাধা অশেষ দুঃখ-যন্ত্রণা পেয়েছিলেন, তাই কৃষ্ণকে আর দূরে কোথাও পাঠাতে চান না।
২৬। “তব হাম পিয়া… না পাঠাই।।”- অংশটি কোথা থেকে গৃহীত? ‘পিয়া’ বলতে এখানে কার কথা বলা হয়েছে? ‘হাম’ শব্দের অর্থ কী?
অংশটি কবি বিদ্যাপতির ‘ভাব সম্মিলন’ পদ থেকে গৃহীত। ‘পিয়া’ বলতে এখানে রাধার প্রাণপ্রিয় শ্রীকৃষ্ণের কথা বলা হয়েছে। ‘হাম’ শব্দের অর্থ আমি।
২৭। “শীতের ওঢ়নী পিয়া গীরিষির বা।”-কাকে ‘শীতের ওঢ়নী, গীরিষির বা’ বলা হয়েছে? ‘শীতের ওঢ়নী’ এবং ‘গীরিষির বা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
শ্রীকৃষ্ণকে রাধা ‘শীতের ওঢ়নী’, ‘গীরিষির বা’ বলেছেন। ‘শীতের ওঢ়নী’ হল শীতের চাদর বা গাত্রাবরণ এবং ‘গীরিষির বা’ হল গ্রীষ্মের শীতল বাতাস।
২৮। “বরিষার ছত্র পিয়া দরিয়ার না।।”- ‘বরিষার ছত্র’ এবং ‘দরিয়ার না’ বলতে কী বলা হয়েছে?
‘বরিষার ছত্র’ হল বর্ষার ছাতা এবং ‘দরিয়ার না’ হল নদী বা সমুদ্রের নৌকা।
২৯। রাধা কৃষ্ণকে কোন্ কোন্ উপমার সঙ্গে তুলনা করেছেন?
রাধার জীবনে শ্রীকৃষ্ণ এতটাই অপরিহার্য যে, তিনি কৃষ্ণকে তুলনা করেছেন শীতের ওড়না, গ্রীষ্মের বাতাস, বর্ষার ছাতা এবং নদী বা সমুদ্রের নৌকার সঙ্গে।
৩০। কৃষ্ণ বিচ্ছেদে রাধার দুঃখ আরও বেড়ে গিয়েছে কীজন্য?
কৃষ্ণ বিচ্ছেদে রাধা দুঃখে কাতর, তবে সেই বিরহ-জ্বালা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে আকাশের চাঁদের বাঁধভাঙা হাসির জন্য।
ভাব সম্মিলন কবিতার প্রশ্ন উত্তর Class 11 // বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার // WBCHSE Second Semester
৩১। “ভণয়ে বিদ্যাপতি শুন বরনারি।”-বিদ্যাপতি কে? ‘ভণয়ে’ এবং ‘বরনারি’ শব্দের অর্থ কী?
বিদ্যাপতি হলেন পাঠ্য পদটির রচয়িতা এবং প্রাক্-চৈতন্য যুগের একজন শ্রেষ্ঠ বৈষ্ণব পদকর্তা।
‘ভণয়ে’ শব্দের অর্থ ভণিতা এবং ‘বরনারি’ শব্দের অর্থ নারীশ্রেষ্ঠ বা সুন্দরী নারী। । “ভণয়ে বিদ্যাপতি শুন বরনারি।”- কবি কাকে ‘বরনারি’ সম্বোধন
৩২ করেছেন? বিদ্যাপতি ভণিতার বরনারিকে কী বলেছেন?
কবি বিদ্যাপতি শ্রীরাধাকে ‘বরনারি’ সম্বোধন করেছেন। কবি বিদ্যাপতি ভণিতায় ‘বরনারি’ অর্থাৎ রাধাকে বলেছেন, ভালো মানুষের দুঃখ-কষ্ট দু-চার দিনের জন্য স্থায়ী হয়।
আরও পড়ুন – আইনের অর্থ ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো