ইউরোপে পঞ্চদশ শতক পর্যন্ত জাদুবিদ্যা ও অপরসায়ন কী একই বস্তু ছিল
অথবা, জাদুবিদ্যা ও অপরসায়নবিদ্যার মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ কর

ভূমিকা
প্রাচীন কাল থেকেই ইউরোপ তথা বিশ্বের অনেক স্থানে জাদুবিদ্যা চর্চার ব্যাপক প্রচলন ছিল। মধ্যযুগীয় ইউরোপে অনেক ক্ষেত্রেই জাদুবিদ্যা ও অপরসায়ন চর্চাকে অভিন্ন বলে ধরা হত।
(1) জাদুবিদ্যার ভিত্তি: জাদুবিদ্যার কোনো বাস্তব ভিত্তি ছিল না। কিছুটা ভ্রান্ত দার্শনিক ব্যাখ্যা ছিল এর ভিত্তি। সমগ্র পৃথিবীকে কতকগুলি আধ্যাত্মিক, বস্তুগত ও অতিপ্রাকৃত শক্তির সমষ্টি মনে করা হত। এই শক্তিগুলির মধ্যে সম্পর্কের ভিন্নতা সৃষ্টি দ্বারা বা শক্তিগুলিকে বিভিন্নভাবে কাজে লাগিয়ে জাদুকররা মানবসমাজের কল্যাণ বা ক্ষতি করতে পারেন-এই-ই ছিল জাদুবিদ্যার মূলকথা। এক্ষেত্রে দানবীয় ও অতিপ্রাকৃত শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করাটাই ছিল জাদু
(2) অপরসায়নের ভিত্তি: প্রাকৃতিক শক্তিকে মানবসমাজের ব্যাবহারিক উপকারে লাগানো কিংবা যে-কোনো নিম্নমানের ধাতুকে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সোনায় পরিণত করার চেষ্টা ছিল অপরসায়নবিদদের মুখ্য উদ্দেশ্য। এ ছাড়াও প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক উপাদানের সংমিশ্রণে রোগ প্রতিকারের চেষ্টা, অমরত্ব প্রদানকারী মহৌষধি তৈরির চেষ্টা প্রভৃতি ছিল অপরসায়নের অন্যতম ভিত্তি।
মূল্যায়ন
অপরসায়নবিদরা বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানের ব্যবহার দ্বারা রোগ সারাতেন। কিন্তু তাঁরা এর সঠিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে পারতেন না। রোগ নিরাময়কে তারা জাদুবিদ্যার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলতেন। অপরসায়নবিদ্যা ও জাদুবিদ্যাকে দীর্ঘদিন অভিন্ন বলে ধরা হত।
আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর