![]() |
ইটালিতে কীভাবে ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থান ঘটেছিল? |
ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থানের প্রেক্ষাপট
ইটালিতে ফ্যাসিবাদের উত্থানের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে,
[১] প্যারিস-চুক্তিতে অবজ্ঞা : প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ইটালি বিজয়ী মিত্রপক্ষে যোগদান করলেও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে প্যারিস চুক্তিতে ইটালি অন্যান্য শক্তিগুলির মতো লাভবান হয়নি, বরং ইটালি অবজ্ঞার শিকার হয়েছিল। এই ঘটনা ইটালিতে তৎকালীন সরকার বিরোধী মানসিকতার সঞ্চার করেছিল।
[২] অর্থনৈতিক সংকট: প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে ও তার পরে ইটালিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, অভাব অনটন, বেকারত্ব ইটালিবাসীকে বিক্ষুব্ধ করেছিল।
[৩] সমাজতন্ত্রের প্রভাব বৃদ্ধি : ইটালির অভ্যন্তরীণ সংকটজনক পরিস্থিতিতে সমাজতন্ত্রবাদের প্রভাবও অত্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছিল।
ইটালিতে রাজনৈতিক স্থিরতার অভাব ছিল, কারণ ১৯১৯-১৯২২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পর্যায়ক্রমে ছয়টি মন্ত্রীসভার পরিবর্তন ঘটেছিল। এই পরিস্থিতিতে-
- মুসোলিনির ব্যক্তিত্ব: প্রথম জীবনে মুসোলিনি ছিলেন সমাজতন্ত্রের একনিষ্ঠ সমর্থক। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে উগ্র জাতীয়তাবাদী ভাবধারার প্রচার করেন এবং তাঁর লেখা ও বক্তৃতা সেনাবাহিনীর অফিসার, উগ্র জাতীয়তাবাদী ও হতাশ তরুণদের মনে সাড়া জাগায়।
- ফ্যাসিস্ট দলের প্রতিষ্ঠা: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মার্চ ইটালির মিলান শহরে ১১৮ জন যুদ্ধ ফেরত কর্মচ্যুত সৈনিক ও উগ্র দেশপ্রেমিককে নিয়ে মুসোলিনি ফ্যাসিস্ট দল গঠন করেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের সাধারণ নির্বাচনে ফ্যাসিস্ট দল মাত্র ৩১টি আসন লাভ করে।
- ফ্যাসিস্ট দলের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল : ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে মুসোলিনি রোম আক্রমণ করলে গৃহযুদ্ধ এড়ানোর জন্য ইটালির রাজা তৃতীয় ভিক্টর ইমান্যুয়েল মুসোলিনির হাতে দেশের প্রধানমন্ত্রিত্ব ও শাসনক্ষমতা তুলে নেন।