![]() |
উপনিবেশবাদের রাজনৈতিক ভিত্তি সম্পর্কে আলোচনা করো। |
উপনিবেশবাদের রাজনৈতিক ভিত্তি
রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা: সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মূল লক্ষ্য ছিল উপনিবেশ স্থাপনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। যার অর্থ হল, উক্ত উপনিবেশগুলির উপর আইনি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং তাদের সমাজজীবন, অর্থনীতি এবং সংস্কৃতিকে নিজেদের ইচ্ছামতো পরিচালনা করা।
সামরিক প্রয়োজন: সামরিক দিক থেকে যখন কোনো ভৌগোলিক অঞ্চলের বিশেষ গুরুত্ব থাকে, তখন সেই অঞ্চলটি দখলের জন্য কোনো কোনো শক্তিশালী দেশ অতি উৎসাহী হয়ে ওঠে। সামরিক শক্তির সঙ্গে উপনিবেশের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।
উগ্র জাতীয়তাবাদ : জাতীয়তাবাদের বিপরীত দর্শন হল উগ্র জাতীয়তাবাদ। উগ্র জাতীয়তাবাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহ দুর্বল রাষ্ট্রগুলির উপর প্রথমে অর্থনৈতিক আধিপত্য এবং তারপর প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব কায়েম করে। সৃষ্টি হয় ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার।
জাতীয় গৌরব বৃদ্ধি: সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলি জাতীয় গৌরব বৃদ্ধি এবং নিজেদের শক্তি ও মর্যাদা জাহির করার জন্য দেশ দখলের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছিল।
ব্যাবসাবাণিজ্যে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা এবং নিরাপত্তা বিধান: উৎপন্ন দ্রব্য বিক্রয়, বাড়তি মূলধনের বিনিয়োগ কিংবা কাঁচামাল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ঔপনিবেশিক শক্তি পিছিয়ে পড়া দেশগুলিতে উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করে।
অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করার লক্ষ্য: উপনিবেশ স্থাপনের মধ্য দিয়ে অদম্য অর্থনৈতিক বাসনা চরিতার্থ করাই ছিল সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির মূল লক্ষ্য। মূলত অর্থনৈতিক শোষণের লক্ষ্যেই রাজনৈতিক আধিপত্য স্থাপন করেছিল তারা।
উদ্বৃত্ত জনসংখ্যার স্থানান্তর: দেশের জনসংখ্যার পরিমাণ বেশি হলে তাদের বাসস্থানের জন্য নতুন ভূখণ্ডের আশায় নতুন উপনিবেশ প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হয় সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলি। জার্মান কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়ম জার্মানদের বাসভূমির জন্য উপযুক্ত স্থান সংকুলান করতে বিশ্বরাজনীতি-র অনুসরণ করেন।
রাষ্ট্রনায়কদের দাম্ভিক মনোভাব: রাষ্ট্রনায়কদের দাম্ভিক মনোভাব অনেক ক্ষেত্রে সাম্রাজ্যবাদের পথকে সুপ্রশস্ত করে।