![]() |
উপনিবেশ স্থাপনের কুফল সম্পর্কে লেখো। উপনিবেশবাদের অবসানের কারণগুলি উল্লেখ করো। |
উপনিবেশ স্থাপনের কুফল
ঔপনিবেশিক প্রতিযোগিতা: পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে সমৃদ্ধ উপনিবেশ লাভের আশায় ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা চরম আকার ধারণ করে এবং তারা পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হয়।
স্বাধীনতা হবণ: উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা এবং ঔপনিবেশিক শাসন বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে উপনিবেশবাসী জনগণ তাদের স্বাধীনতা হারায়।
অর্থনৈতিক শোষণ: ঔপনিবেশিক শাসন প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে উপনিবেশগুলি চরম অর্থনৈতিক শোষণের সম্মুখীন হয়। বৈষম্যমূলক করব্যবস্থা উপনিবেশের কুটিরশিল্পগুলিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছিল।
রাজনৈতিক ক্ষেত্রে: উপনিবেশ স্থাপনের মারাত্মক প্রভাব পরিলক্ষিত হয় রাজনৈতিক ক্ষেত্রে। উপনিবেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক শক্তিগুলি কার্যত পরিণত হয় কিং মেকার (King Maker)-এ।
উপনিবেশবাদের অবসানের কারণসমূহ
অবাধ বাণিজ্যের ধারণা: অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ নির্দেশিত উপনিবেশনির্ভর অর্থনীতির পরিবর্তে অবাধ বাণিজ্য (Laissez faire) নীতির পথ অনুসরণ করে অনেক দেশ লাভবান হয়। ফলে উপনিবেশ প্রতিষ্ঠায় অনীহা দেখা দেয়।
জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ: উপনিবেশবাদ অবসানের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল উপনিবেশগুলিতে জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ। বিভিন্ন উপনিবেশে জাগ্রত জাতীয়তাবাদকে দমন করা ঔপনিবেশিক সরকারের পক্ষে সম্ভব ছিল না।
প্রতিশ্রুতিভঙ্গের প্রতিক্রিয়া: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে মিত্রশক্তি উপনিবেশগুলির সাহায্য ও সমর্থনলাভের আশায় যুদ্ধশেষে উপনিবেশগুলিকে স্বাধীনতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু যুদ্ধের শেষে সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার কোনো সম্ভাবনা না দেখে উপনিবেশের পরাধীন জনগণ মুক্তির জন্য আন্দোলন শুরু করে।
আন্তর্জাতিক চাপ: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকা এবং রাশিয়া পৃথিবী থেকে উপনিবেশবাদকে নিশ্চিহ্ন করতে বদ্ধপরিকর হয়। বলাবাহুল্য, যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রগুলির পক্ষে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা সম্ভব ছিল না। ফলে তারা উপনিবেশগুলিকে স্বাধীনতা প্রদানে বাধ্য হয়।