কাগজের আবিষ্কার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো

ভূমিকা
শিক্ষা-সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত হল কাগজ। বর্তমান পৃথিবীতে কাগজের বই-এর বহুল ব্যবহার দেখে কল্পনা করাও সম্ভব নয় একসময় কাগজ ছাড়াই বই ছাপা হত। তাই ধাপে ধাপে কাগজের আবিষ্কারের অগ্রগতি কীভাবে হল তা জানা প্রয়োজন।
(1) কাগজ আবিষ্কারের আগে : চিনে মুদ্রণ পদ্ধতি বহু পূর্বে চালু হলেও বই ছাপার কাজে কাগজ ব্যবহৃত হত না। কারণ কাগজ তখনও একটি মানুষের অজানা বিষয় ছিল। তার পরিবর্তে ‘পার্চমেন্ট’ নামক একপ্রকার পাতলা চামড়া (পশুর) ব্যবহার করা হত।
(2) পার্চমেন্টের ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা: পার্চমেন্ট-এ মুদ্রণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল ছিল। একটি বাইবেল মুদ্রণের জন্য যত পরিমাণ পার্চমেন্ট প্রয়োজন হত, তার জন্য প্রায় ৩০০টি ভেড়া ও ১৪০টি বাছুরের চামড়া দরকার হত। তাই বিপুল ব্যয়ের জন্য বেশি পরিমাণে বই ছাপা সম্ভব ছিল না।
(3) কাগজ তৈরির প্রযুক্তি আবিষ্কার: খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকে চিনে প্রথম কাগজ তৈরির প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়। মূলত ছেঁড়া কাপড় ও উদ্ভিদ তন্তু বিশেষ করে তুঁত গাছের ছাল একসঙ্গে মিশিয়ে কাগজ তৈরির পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়। এটি মুদ্রণশিল্পের ক্ষেত্রে যুগান্তর সৃষ্টি করে।
(4) চিন থেকে আরবে কাগজের প্রচলন: চিন থেকে কাগজ তৈরির কৌশল আরবে আসে ৭৫১ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ, যখন তালাসের যুদ্ধে বেশ কিছুজন চিনা কাগজ কারিগর আরবদের হাতে বন্দি হয়।
(5) কাগজ তৈরির প্রযুক্তির ইউরোপে প্রবেশ : খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতক নাগাদ আরবদের থেকে প্রথমে স্পেন ও পরে সমগ্র ইউরোপে কাগজ তৈরির কৌশল ছড়িয়ে পড়ে।
মূল্যায়ন
এইভাবে কাগজ আবিষ্কার ও তার বহুল প্রচলন ব্যাপক পরিমাণে বই ছাপতে সাহায্য করে এবং মুদ্রিত বই-এর দামও কম হওয়ায় বেশি পরিমাণে মানুষ বই পড়তে সমর্থ হন।
আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর