কোন পরিস্থিতিতে ক্রিপস মিশন ভারতে আসে? ক্রিপস প্রস্তাব সম্পর্কে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী হয়েছিল?

কোন পরিস্থিতিতে ক্রিপস মিশন ভারতে আসে? ক্রিপস প্রস্তাব সম্পর্কে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী হয়েছিল
কোন পরিস্থিতিতে ক্রিপস মিশন ভারতে আসে? ক্রিপস প্রস্তাব সম্পর্কে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী হয়েছিল?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ইংল্যান্ডের উপনিবেশ হিসেবে ভারতেও জাপানি আক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার উদ্দেশ্যে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ব্রিটিশ মন্ত্রীসভার সদস্য স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসকে ভারতে পাঠায়। এটি ক্রিপস মিশন নামে পরিচিত।

ক্রিপস মিশনের পটভূমি

জাপানি আক্রমণ প্রতিরোধ: ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে জাপান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্ল হারবার আক্রমণ করলে ভারতেও জাপানি আক্রমণের সম্ভাবনা দেখা দেয়। জাপানি আক্রমণের মোকাবিলা করতে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ভারতীয় শক্তি ও সম্পদ। তাই ব্রিটিশ সরকার ভারতের সাহায্য লাভ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে।

মুসলিম তোষণনীতির পরিবর্তন: জাপানি আক্রমণের ফলে ব্রিটিশ সরকারের মুসলিম লিগের প্রতি তোষণনীতির পরিবর্তন ঘটে। ব্রিটিশ সরকার উপলব্ধি করে সৈন্যবাহিনীতে মুসলিমদের সংখ্যা কম, তাই তাদের তোষণ করার চেয়ে কংগ্রেস ও হিন্দু সমর্থন বেশি প্রয়োজন।

ভারতের শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থা:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ব্রিটিশবিরোধী গণবিদ্রোহ শুরু হলে ভারতে শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল ক্রিপস মিশনকে অবিলম্বে ভারতে পাঠানোর কথা বলেন।

ক্লিপস প্রস্তাব সম্পর্কে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া

কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া: জাতীয় সরকার গঠনের প্রশ্নে ক্রিপসের অনমনীয় মনোভাব এবং দেশবিভাজনের সম্ভাবনাকে প্রশ্রয় দেওয়া প্রভৃতি কারণে কংগ্রেস এই প্রস্তাব বর্জন করে। গান্ধিজি এই প্রস্তাবকে ‘একটি ফেল পড়া ব্যাংকের অনুকূলে প্রদত্ত চেক’ বলে বর্ণনা করেছেন।

মুসলিম লিগের প্রতিক্রিয়া: ক্রিপস প্রস্তাবকে প্রথমদিকে সমর্থন করলেও পরে স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তান গঠনের দাবি পূরণ না হওয়ায় মুসলিম লিগের আশা ভঙ্গ হয়।

হিন্দু মহাসভার প্রতিক্রিয়া :
হিন্দু মহাসভা ক্রিপস প্রস্তাবকে ভারত ভাগের প্রাথমিক লক্ষণ বলে মনে করেছিল, তাই পৃথক পাকিস্তান গঠনের আশঙ্কায় তারা এই প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে।

হরিজনদের প্রতিক্রিয়া: এই প্রস্তাবে হরিজন সম্প্রদায়ের কোনো দাবিপূরণের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। ড. বি আর আম্বেদকর এই প্রস্তাবকে বর্ণহিন্দুদের আধিপত্য স্থাপনের মাধ্যম বলে উল্লেখ করেছেন।

Leave a Comment