চিনে মুদ্রণশিল্পের বিকাশ ও প্রসারের বিবরণ দাও

চিনে মুদ্রণশিল্পের বিকাশ ও প্রসারের বিবরণ দাও

চিনে মুদ্রণশিল্পের বিকাশ ও প্রসারের বিবরণ দাও
চিনে মুদ্রণশিল্পের বিকাশ ও প্রসারের বিবরণ দাও

ভূমিকা

মুদ্রণ বিপ্লব তথা আধুনিক মুদ্রণ পদ্ধতির আবিষ্কার ও তার ব্যাপক ব্যবহারের জন্য আধুনিক বিশ্ব চিনের কাছে ঋণী। এদেশেই প্রথম কাঠের ব্লকের দ্বারা মুদ্রণ ও কাগজের আবিষ্কার হয়, যা ক্রমে ক্রমে ইউরোপে এসে পৌঁছোয়।

(1) ব্লক মুদ্রণের সূচনা: চিনে ৫৯৩ খ্রিস্টাব্দে প্রথম যান্ত্রিক মুদ্রণ পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়। ৬৫০-৬৭০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কাঠের ব্লক দ্বারা কাগজের ওপর ‘ধরণীসূত্র’ নামে একটি বৌদ্ধসূত্র ছাপা হয়। এর প্রতিলিপি আবিষ্কৃত হয়েছে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে। ব্লকের দ্বারা মুদ্রণের এই পদ্ধতিকে ‘জাইলোগ্রাফি’ বলা হয়।

(2) প্রথম সংবাদপত্র ও ক্যালেন্ডার ছাপা: ৭০০ খ্রিস্টাব্দে চিনের বেজিং-এ প্রথম সংবাদপত্র ছাপা হয়। ৮৭৭-৮৮২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ক্যালেন্ডার ছাপা হয় যা বিশ্বের প্রাচীনতম মুদ্রিত ক্যালেন্ডার। ১১৫৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম মুদ্রিত মানচিত্র প্রকাশ করেন চিনের লিউ চিং।

(3) চিনের প্রথম ছাপা বই : ৮৬৮ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ চিনে কাঠের ব্লক দ্বারা ডায়মন্ড সূত্র বা হীরক সূত্র নামে একটি বৌদ্ধ গ্রন্থের অনুবাদ মুদ্রিত হয়। এটিকে বিশ্বের প্রথম মুদ্রিত বই বলে গণ্য করা হয় যা বর্তমানে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে।

(4) কাগজ আবিষ্কার: ব্যয়বহুল পার্চমেন্টের পরিবর্ত খুঁজতে খুঁজতে গবেষণা করে চিনারাই প্রথম ছেঁড়া কাপড় ও উদ্ভিদ তত্ত্বর সংমিশ্রণ দ্বারা কাগজ তৈরির কৌশল আবিষ্কার করে। খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতক নাগাদ চিনের কাগজ আবিষ্কার মুদ্রণশিল্পে অভাবনীয় উন্নতি ঘটায়।

(5) কালির ব্যবহার: শুধু কাগজ নয়, চিন দেশে ছাপার কালি ব্যবহারেও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। কাঠের ব্লকে অক্ষর খোদাই করে তাতে অমোচনীয় কালি লাগিয়ে কাগজে ছাপ নেওয়ার পদ্ধতিতে বই ছাপা হত। লাল, নীল ও কালো রঙের কালি ব্যবহৃত হত।

মূল্যায়ন

চিন থেকে মুদ্রণপ্রযুক্তি ও কাগজ তৈরির কৌশল অষ্টম শতক নাগাদ আরবে পৌঁছায় এবং আরবীয়দের থেকে খ্রিস্টীয় দ্বাদশ-ত্রয়োদশ শতক নাগাদ ইউরোপে পৌঁছায়। কাজেই ইউরোপের প্রথম আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র চিনের কাছে আবশ্যিকভাবে ঋণী।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment