![]() |
জমিদার সভা টীকা |
(১৫ই নভেম্বর, ১৮৩৮ খ্রিঃ): ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দের ১২ই নভেম্বর রাধাকান্ত দেব, দ্বারকানাথ ঠাকুর, প্রসন্নকুমার ঠাকুর, টাকির কালীনাথ রায়চৌধুরী প্রমুখের উদ্যোগে ‘জমিদার সভা’ (Landholder’s Society) প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সভাপতি ছিলেন রাধাকান্ত দেব। দ্বারকানাথ ঠাকুর ছিলেন এই সভার প্রাণস্বরূপ। এই প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহক সমিতির সকল সদস্যই প্রতিষ্ঠাবান জমিদার হলেও সমিতির ঘোষণাপত্রে বলা হয় যে জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে ভারতের মাটির সঙ্গে স্বার্থযুক্ত সকল মানুষই এই প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে পারে। বস্তুতঃ থিওডোর ডিকেন্স ও জর্জ প্রিন্সেপ এই সভার কার্যনির্বাহক সমিতির সদস্য ছিলেন। ‘ইংলিশ ম্যান’ পত্রিকার সম্পাদক উইলিয়ম কোল্ড হারি এই সভার অন্যতম সম্পাদক ছিলেন। নানা কারণে এই সভা অতি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রথমত, রাজেন্দ্রলাল মিত্রের মতে, এই প্রতিষ্ঠানই হল ভারতীয় জাতীয় আন্দোলনের অগ্রদূত। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই জনসাধারণ সর্বপ্রথম নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে দাবি-দাওয়া আদায়ের শিক্ষালাভ করে। জমিদারের সঙ্গে প্রজার স্বার্থ জড়িত থাকায় এই প্রতিষ্ঠান উভয় শ্রেণিরই দাবি আদায়ে যত্নবান ছিল।
দ্বিতীয়ত, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শাখা স্থাপন এবং বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সমিতি উদ্যোগী হয়।
তৃতীয়ত, ভারতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সহানুভূতিশীল ইংরেজদের সমর্থন ও সহযোগিতা লাভেও সমিতি সক্ষম হয়।
চতুর্থত, ভারতবাসীর কল্যাণার্থে ইংরেজ সমাজকে ভারতের প্রকৃত অবস্থা জানানোর জন্য রামমোহন-সুহৃদ উইলিয়ম অ্যাডাম (William Adam) ইংল্যান্ডে ‘ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি’ (জুলাই, ১৮৩৯ খ্রিঃ) প্রতিষ্ঠিত করেন। জমিদার সভা-র সঙ্গে এই সমিতির যোগাযোগ স্থাপিত হয় এবং অ্যাডাম ও প্রখ্যাত ইংরেজ বস্তা জর্জ টমসন (George Thompson) ভারতের অনুকূলে ইংল্যান্ডে প্রচারকার্য চালাতে থাকেন। এই সমিতির দাবি মেনে নিয়ে সরকার প্রতি গ্রামে কিছু নিষ্কর জমি রাখতে সম্মত হন।