![]() |
জোটনিরপেক্ষ নীতির পিছনে বিভিন্ন কারণগুলি লেখো। |
নির্জোট নীতির প্রবক্তা
জোটনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণের পিছনে বিভিন্ন কারণ
ভৌগোলিক উপাদান: ভারতের ভৌগোলিক অবস্থান ভারতের পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সাহায্য করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার কেন্দ্রস্থলে ভারত অবস্থিত। ফলে এটি মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযোগস্থাপনকারী দেশে পরিণত হয়েছে। তাই জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনে ভারতের নেতৃত্বদানের বিষয়টি ছিল স্বাভাবিক এবং স্বতঃপ্রণোদিত।
আদর্শগত উপাদান: ভারতের সনাতন শান্তিবাদী আদর্শ দ্বারাই স্বাধীন ভারতের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হয়েছে। তৎকালীন ভারতীয় নেতৃবৃন্দ বিশ্বাস করতেন যে, শান্তিপূর্ণ উপায়েই আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান সম্ভব।
জাতীয় স্বার্থের সংরক্ষণ : জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে কোনো দেশের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারিত হতে পারে না। ভারত-ও তার ব্যতিক্রম নয়। অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে ভারতের নেতৃবৃন্দ ধনতান্ত্রিক জোট বা সমাজতান্ত্রিক জোটের কোনোটিতেই যোগ না দিয়ে মিশ্র অর্থনীতি বা স্বাধীন বিদেশনীতি গ্রহণের দ্বারা জাতীয় স্বার্থকে সংরক্ষণ করতে চেয়েছিল।
আর্থসামাজিক অবস্থা: সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত ভারত ও পাকিস্তান বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়, যেমন- খাদ্য, বস্ত্র, উদ্বাস্তু সমস্যা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, ধর্মীয় অসহিষ্কৃতা প্রভৃতি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, কালোবাজারি, আর্থিক ঘাটতি, বেকারত্ব জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে। এই অবস্থায় অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ভারত জোটনিরপেক্ষ আদর্শ গ্রহণ ও অনুসরণে বাধ্য হয়।
রাজনৈতিক কারণ : স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু রাজনৈতিক দিক থেকে পুঁজিবাদ বা সাম্যবাদ- কোনোটিকেই সমর্থন করেননি। তিনি ঠান্ডা লড়াইয়ের যুগে এই দুটি আদর্শকে সমর্থন না করে দুটির থেকেই সমদূরত্ব বজায় রাখেন। তিনি বলেছিলেন, ‘বিশ্বের পক্ষে ও আমাদের পক্ষে যা ক্ষতিকর তা আমরা নির্দ্বিধায় নিন্দা করব।’