![]() |
টীকা লেখো: বার্লিন সম্মেলন (১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দ)। |
বল্কান অঞ্চল ছিল ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদের সংঘাতের একটি প্রধানতম ক্ষেত্র। এই অঞ্চলে তুরস্কের দুর্বলতা এবং সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার হস্তক্ষেপ যে জটিলতার সৃষ্টি করেছিল তারই সমাধান প্রচেষ্টা ছিল বার্লিন সম্মেলনে (১৮৭৮ খ্রি.)।
বার্লিন চুক্তির শর্তাবলি
বার্লিন সম্মেলনে বার্লিন-চুক্তি নামে একটি নতুন সন্ধি স্বাক্ষরিত হয় এবং অবস্থার চাপে পড়ে রাশিয়া এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয় (জুন, ১৮৭৮ খ্রি.)। বার্লিন চুক্তির শর্তানুযায়ী- (১) বেসারাবিয়া, – কারস, বার্টুমের ওপর রাশিয়ার অধিকার স্বীকৃত হয়; (২) সার্বিয়া, মন্টিনিগ্রো ও রুমানিয়ার স্বাধীনতা স্বীকৃত হয়; (৩) বসনিয়া ও হারজেগোভিনার শাসনভার অস্ট্রিয়াকে দেওয়া হয়; (৪) পূর্ব-রুমানিয়া ও ম্যাসিডোনিয়াকে বাদ দিয়ে স্বায়ত্তশাসিত বুলগেরিয়ার আয়তন হ্রাস করা হয়; ইংল্যান্ড, তুরস্ক সাম্রাজ্যের অবশিষ্ট অঞ্চল রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাইপ্রাস দখল করে।
বার্লিন চুক্তির সমালোচনা
নিকট-প্রাচ্যের ইতিহাসে বার্লিন চুক্তির গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না, কারণ-
[১] শক্তিসাম্য প্রতিষ্ঠা: বার্লিন-চুক্তির মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের স্বার্থরক্ষা ও পূর্ব-ইউরোপের শক্তিসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়।
[২] শান্তি ও সম্মান প্রতিষ্ঠা: তুরস্ক সাম্রাজ্য সাময়িকভাবে রক্ষা পায়। বার্লিন-চুক্তি সম্পর্কে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডিস্ট্রেলি সদর্পে ঘোষণা করেন যে, তিনি বার্লিন থেকে শান্তি ও সম্মান (Peace with Honour) নিয়ে এসেছেন।
উপসংহার
কিন্তু বার্লিন কংগ্রেস ইউরোপীয় রাজনীতির প্রকৃত শান্তি ও স্থিতাবস্থা ফেরাতে পারেনি। নিকট প্রাচ্যে বল্কান অঞ্চল সংকটের জালে আবদ্ধ হয়। অস্ট্রিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে সংঘাতের মাত্রা বেড়েই চলল।